ঢাকা: বাংলাদেশের জাতীয় বা স্থানীয় পর্যায়ের যেকোনো নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের মন্তব্যকে গুরুত্ব দেবে না আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের বক্তব্যকে অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন সরকার।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত খুলনা, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কিছু অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও ইতোমধ্যে ওই কূটনীতিকদের কেউ কেউ বক্তব্য ও মতামত দিয়েছেন। এসব বিষয় সরকার ও আওয়ামী লীগ ভালোভাবে নেয়নি।

আগামীতে জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের বক্তব্য বা মন্তব্যের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে সরকার। নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের নেতিবাচক মন্তব্য ও সমালোচনার জবাব সরকারের দিক থেকে যথাযথভাবে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে বিদেশি মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এটা তাদের বিষয় না। এটা নিয়ে তাদের কথা বলা অনধিকার চর্চা। আমরা কি কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলি। আমাদের রাষ্ট্রদূতরা তো কোনো দেশের এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে যায় না। আমাদের বিষয় নিয়ে কথা বলা তাদের একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে!

এদিকে আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিদেশিরা যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের চেষ্টা করতে না পারে সে জন্য আগে থেকেই শক্ত অবস্থানে রয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে গত বছর গোড়ার দিকে বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠনের আগে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে চাইলে সরকার অনুমতি দেয়নি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কূটনীতিকদের যেকোনো তৎপরতা ও হস্তক্ষেপ থেকে দূরে রাখতে সরকার ওই অবস্থান নেয়।

সূত্রগুলো আরও জানায়, সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে কোনো কোনো দেশ এবং ওই সব দেশের কূটনীতিকরা নানাভাবে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে। সরকার তখন শক্ত অবস্থান নেওয়ার ফলেই নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব হয়। এই অবস্থান অব্যাহত রেখেই সরকার অগ্রসর হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর দেখা গেছে বিএনপি যে ভাষায় অভিযোগ করেছিলো একটি দেশের রাষ্ট্রদূতও সেই ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তার সে বক্তব্য সঠিক না, তথ্য ভিত্তিক না। কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এভাবে মন্তব্য করা, হস্তক্ষেপ করা আমরা সঠিক মনে করি না। সঠিক তথ্য না জেনে একটা দেশের রাষ্ট্রদূত আরেকটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এভাবে বলতে পারেন না। অতীতেও তারা এটা করেছেন। তবে আমরা চাই যে, বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে তারা কম নাক গলাক!

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে কথা বলা আমরা মনে করি কোনো বিদেশি কূটনীতিকের দায়িত্ব না। এটা শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ। নির্বাচনে অনিয়ম অন্য দেশে হয় না তা না। আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের নাক গলানোর প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন যারা তুলেছেন তারা প্রমাণ করতে পারেনি অনিয়ম হয়েছে। আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কুটনীতিকরা যেভাবে মন্তব্য করছেন সেটা তারা করতে পারেন না। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি সেটা মূল্যায়ন করবে দেশের জনগণ। বাইরে থেকে কে কী বললো সেটা গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮

এসকে/এমজেএফ



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews