‘আমাদের ছোট গ্রামে কিছু একটা হতে যাচ্ছে যত সম্ভব খুবই তাড়াতাড়ি। সাবধানে থাকবেন ভাল থাকবেন। ঈদ মোবারক।’ নিজের ফেসবুক আইডিতে এই স্ট্যাটাস দিয়ে পরদিন বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৫ জুলাই) সকালে উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই বিএনপি নেতা যশোরের চৌগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী জহুরুল ইসলাম ধুলিয়ানী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হলেন একই গ্রামের তাওহীদ ইসলাম সিন (২৮)। তিনি খুলনা পুলিশলাইনে কর্মরত পুলিশ সদস্য ও ভাদড়া গ্রামের আওয়ামী সমর্থক আব্দুর রহমান লাল্টুর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে জহুরুল ইসলাম বাড়ি থেকে বাজারে যাচ্ছিলেন। তিনি প্রতিবেশী বিবাদীদের বাড়ির সামনে পৌঁছালে কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ সদস্য তাওহিদ তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। জহুরুল তার প্রতিবাদ করলে তাওহিদ ও তার বাবা আওয়ামী লীগ কর্মী আব্দুর রহমান লাল্টু তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে মারাত্মক আহত করেন। এ সময় জহুরুল ইসলামের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার সকালে আমার এক আত্মীয় ইজিবাইকযোগে বাসায় আসছিলেন। পথিমধ্যে একটি সরু জায়গায় বিচেলি দিয়ে ঢাকা একটি আলমসাধু রাখা ছিল। ইজিবাইকটি সেটি অতিক্রম করার সময় পলিথিন ছিঁড়ে যায়। পরে যাত্রী নামিয়ে ফিরে আসার পথে ইজিবাইক চালককে আটকায় ওই বিচেলির মালিক। আমি ঘটনাস্থলে গেলে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওই সময় তারা আমাকে হুমকি দেয়। এরপরই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য তাওহিদ ইসলাম সিন তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয় আমাদের ছোট গ্রামে কিছু একটা হতে যাচ্ছে, যত সম্ভব খুবই তাড়াতাড়ি। সাবধানে থাকবেন, ভালো থাকবেন। ঈদ মোবারক। পরদিন শনিবার সকালে আমি ও আমার বেয়াই রবিউল ইসলাম বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হই। বিবাদিদের বাড়ির সামনে পৌঁছাতেই তারা হঠাৎ আমার ওপর হামলা চালায়। পরে আমার আত্মীয় রবিউল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম হাবু ও স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করেন।’
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য তাওহিদ ইসলাম সিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ফেসবুকে আমার ব্যক্তিগত একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে যারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব অভিযোগ করছে।’
ধুলিয়ানী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। ছোট একটা বিষয় থেকে এটার সূত্রপাত। তবে পুলিশ সদস্য বলে গায়ের জোরে কাউকে এভাবে মারা ঠিক না।’
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’