ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে একটি সদ্য নির্মিত রেলওভার ব্রিজ নিয়ে দেশজুড়ে হাস্যরস ও তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ভোপালের ঐশবাগ এলাকায় অবস্থিত এই ব্রিজটি অস্বাভাবিক ৯০ ডিগ্রি বাঁক ধারণ করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—এমন ‘অদ্ভুত’ নকশা কীভাবে অনুমোদন পেল এবং এতে কীভাবে যান চলাচল নিরাপদ থাকবে? ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (২৯ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
চলতি জুন মাসে ঘটনাটি আলোচনায় আসে, যখন ব্রিজটির ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ব্রিজটি মূলত মহামাই কা বাগ, পুষ্পা নগর ও স্টেশন এলাকা থেকে নিউ ভোপাল পর্যন্ত সংযোগ উন্নয়নের উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে ১৮ কোটি রুপি ব্যয় হয়েছে এবং তিন লাখ মানুষের উপকার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেতুর অস্বাভাবিক ৯০ ডিগ্রি বাঁক দেখে সাধারণ মানুষ বিস্মিত হয়ে যায় এবং প্রশ্ন তোলে—এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কতটা? ফলে রাজ্য সরকারের কাছে এই প্রকল্পের নকশা ও বাস্তবায়ন নিয়ে জবাবদিহির চাপ বাড়ে।
এই বিতর্ক শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব নিজেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। শনিবার (২৮ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ তিনি জানান, “ঐশবাগ রেলওভার ব্রিজ নির্মাণে মারাত্মক অবহেলা হয়েছে।” তদন্তের ভিত্তিতে সঙ্গে সঙ্গেই সাতজন প্রকৌশলীকে বরখাস্ত করা হয়, যাদের মধ্যে দুজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারও রয়েছেন। এছাড়া, অবসরপ্রাপ্ত এক সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ব্রিজটির নকশা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘ডায়নামিক কনসালট্যান্ট’ এবং নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ‘পুনীত চাড্ডা’-কে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ব্রিজটির নকশায় পরিবর্তন আনতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে, এবং তা সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্রিজটি চালু করা হবে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা এবং নেটিজেনরা সামাজিক মাধ্যমে কৌতুক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেকেই বলেছেন, “এই ব্রিজে কি হেলিকপ্টারই উঠবে?” আবার কেউ বলেছেন, “এখানে গাড়ি নয়, সার্কাস হবে!”
তবে প্রকৌশল বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা দাবি করেন, ভূমির সীমাবদ্ধতা এবং নিকটবর্তী মেট্রো স্টেশনের অবস্থানের কারণেই এই তীক্ষ্ণ বাঁক রাখতে বাধ্য হন তারা। তাদের বক্তব্য—“আরও সামান্য জায়গা পেলে এই বাঁকটি একটি নিরাপদ কার্ভে পরিণত করা যেত।” তথ্যসূত্র : এনডিটিভি