পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। বিশেষ করে গত আট বছরে রাজনৈতিক মামলায় আক্রান্ত ও গুম-নিখোঁজ হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারগুলোর খোঁজখবর নিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনও প্রস্তুতি গ্রহণের আনুষ্ঠানিক কোনও নির্দেশনা না এলেও নেতারা কেন্দ্রের নির্দেশে ঈদুল ফিতরে যার যার এলাকায় অবস্থান করছেন। কেউ ঈদের আগেই চলে গিয়েছেন এবং কেউ ঈদের দিনের সকাল বা বিকালে যাবেন এলাকায়। বিএনপির কেন্দ্র ও স্থানীয় পর্যায়ে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনও কোনও নির্দেশনা তৃণমূলে দেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে তৃণমূলের নেতাকর্মী যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা, গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে, তাদের বেশিরভাগ নিজ নিজ এলাকায় ঈদ পালন থেকে বিরত রয়েছেন। আবার কেউ কেউ শঙ্কা নিয়েই পরিবারের সঙ্গে ঈদ পালন করছেন।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নেতাকর্মীদের পাশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সব সময়ই থাকেন। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরাসরি কোনও নির্দেশনা নেই। তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।’

সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে যোগাযোগ ও তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া কিভাবে রাজনীতি হবে। বিএনপির রাজনীতিই হচ্ছে তৃণমূলের রাজনীতি। ঈদকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে, এটিই স্বাভাবিক।’ শামা ওবায়েদ আরও জানান, তিনি রমজানে কয়েকটি এলাকায় ছিলেন, আবারও ঈদের দিন খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা অনুষ্ঠান শেষ করে তৃণমূলেই যাবেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, রমজানে নিখোঁজ ও গুম হওয়া ৫২টি পরিবারকে সহায়তা দিয়েছেন খালেদা জিয়া। হোটেল লেকশোরে নেতাদের পরিবারদের সঙ্গে ইফতার করেছেন খালেদা জিয়া। সারাদেশেও এভাবে নেতাকর্মী ও পরিবারদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে।

তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম স্বয়ং খালেদা জিয়া নিজেই। ক্ষমতাসীন থাকার সময় ফেনী-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। যদিও বিগত কয়েক বছর এই আসনে যাননি তিনি। প্রত্যেক রমজানে বিএনপির কেন্দ্রীয় একটি টিম সেখানে গেলেও কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সেটিও। এ নিয়ে দলের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে ঈদুল ফিতরের সময় প্রত্যেকেই নিজের গ্রামের বাড়িমুখো হলেও তৃণমূলের অনেক নেতাই বাড়ি যেতে পারছেন না। লক্ষ্মীপুরের জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরে সহস্রাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এ কারণে অনেকেই গ্রামে ফিরতে পারেননি।’

রাজনৈতিকভাবে সমঝোতার আগ পর্যন্ত কোনও নেতাকর্মীই ঝুঁকি নেবে না বলে জানান হাসিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের এখনও অনেক বাকি। আর এ নিয়ে এখনও কেন্দ্রের কোনও নির্দেশনা আসেনি। রাজনৈতিক মামলাগুলোর মীমাংসা হওয়ার পরই শঙ্কায় থাকা নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবেন।’

ঈদের সময় নির্বাচনি কার্যক্রমের নির্দেশনা এখনও কেন্দ্র দেয়নি বলে জানান সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন। বাংলা ট্রিবিউনকে ২৫ জুন রবিবার বিকালে তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার সুনির্দিষ্ট কোনও নির্দেশনা নেই। তবে এটা তো খুব স্বাভাবিক যে, বাড়িতে এলে নেতারা সবার সঙ্গে কথা বলেন, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হন। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনই প্রস্তুতি নেওয়ার কোনও কেন্দ্রীয় নির্দেশ নেই।  যারা নির্বাচনি কার্যক্রম করছেন তারা এটা ব্যক্তিগতভাবে করছেন।’

/এমও/



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews