১৬ মে, ২০২০ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর এই দুই মাসে একদিনও অফিস মিস করেননি। নিয়ম অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের অফিস টাইম সকাল ৯ থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কিন্তু নবনির্বাচিত মেয়র অধিকাংশ সময়ই সকাল ৯ থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত অফিস করেন। দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতেই কর্পোরেশনের প্রভাবশালী, উচ্চপদস্থ স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের বরখাস্ত করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেন। পৃথিবীব্যাপী এই মহামারি চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত অফিস ও কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীন সভা করছেন।

উন্নয়ন কর্মকান্ড ও নাগরিক সেবা বৃদ্ধির লক্ষে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সরেজমিনে পরিদর্শন করে চলছেন। ২২ নং ওয়ার্ডে বছরব্যাপী নর্দমার ময়লা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধনকালে রাস্তায় ময়লা ফেলে রাখলে ‘ঢাকা ওয়াসা’কে জরিমানা করা হবে বলে সাহসী বক্তব্য দেন, যা নগরবাসীর মনে ভাল লাগার জন্ম দেয়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেয়া হচ্ছে মহাপরিকল্পনা। ইতোমধ্যে দিনের পরিবর্তে রাতে ময়লা পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা নগরবাসী স্বাগত জানিয়েছে। ময়লা ব্যবস্থাপনা সেবা নিশ্চিত করার জন্য যে বিদ্যমান সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন বা অন্তর্বতীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রগুলোর (এসটিএস) পাশাপাশি যে সব এলাকায় এসটিএস নেই, সেসব এলাকায় মেয়র মহোদয় সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন এসটিএস নির্মাণের লক্ষে জায়গা নির্ধারণের জন্য। ডিসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডে ১টি করে এসটিএস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে অন্তর্বতীকালীন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (এসটিএস) এর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন মেয়র।

ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী জনাব তাজুল ইসলাম’র উপস্থিতিতে উদ্বোধন করা হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার যা নগরে খাদ্যে ভেজাল মিশানো রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রতিটি ওয়ার্ড পরিদর্শনের পাশাপাশি মেয়র কর্পোরেশনের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে ওসমানী উদ্যান, বাংলাদেশ মাঠ, পুরান ঢাকার মৌলভী বাজারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন। গুলিস্তান হতে জয়কালী মন্দির পর্যন্ত ফুলবাড়িয়া “স্টপ ওভার টার্মিনাল” ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত ফিলিং স্টেশন সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র নির্মানের জন্য জায়গা নির্ধারণের লক্ষে ডেমরা ও কামারাঙ্গীচর এলাকা পরিদর্শন করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

ঢাকা মহানগরীকে মশকমুক্ত করার লক্ষ্যে বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার আওতায় জলাশয় পরিস্কারকরণ, মাছ ও হাঁস অবমুক্তকরণ কার্যক্রমের” অংশ হিসাবে রমনা র্পাকে হাঁস এবং খিলগাঁও বটতলা ঝিলে মাছ অবমুক্ত করেন।

এই শহরের মানুষের প্রধান শত্রু হয়ে উঠেছিল মশা। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। সিটি নির্বাচনের পূর্বেই তিনি বলেছেন নির্বাচিত হলে মশক নিধনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবেন। নির্বাচিত হওয়ার পরপরই মশা নিধনের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম শুরু করেন। ইতোমধ্যে ২৩নং ওয়ার্ডস্থ নবাবগঞ্জ পার্ক থেকে একযোগে ৭৫টি ওয়ার্ডে বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের আওতায় স্প্রে মেশিন দিয়ে লার্ভিসাইডিং কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন মাননীয় মেয়র জনাব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। প্রতি ওয়ার্ডে ৮ জন মশককর্মী সকাল ৯টা হতে শুরু করে দুপুর ১টা পর্যন্ত লার্ভিসাইডিং, অন্যদিকে প্রতি ওয়ার্ড ১০ জন মশক কর্মী দুপুর আড়ইটা থেকে শুরু করে বিকেল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ফগিং কার্যক্রম চালাবেন। আর এসব কার্যক্রম কাউন্সিলরগণ মনিটর করবেন। চালু করা হয়েছে “অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে মশার প্রজননস্থল সনাক্তকরণ ও কীটনাশক প্রয়োগ সেবা ’কার্যক্রমের”। এই কার্যক্রমের আওতায় দক্ষিণ সিটি যে কোন নাগরিক অনলাইনে বা করপোরেশনে কল করে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার আবেদন করতে পারবেন। যদিও মশক নিধন কার্যক্রমের সুফল পেতে বেশ কিছুটা সময় প্রয়োজন, তারপরও বর্তমান মেয়রের মশক নিধন কার্যক্রম নিয়মিত চালু রাখা ও ভেজালমুক্ত ঔষধ ব্যবহারের ফলে নগরবাসী বেশ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। উল্লেখ্য, ভেজালমুক্ত মশক ঔষধ নিশ্চিত করতে মেয়র মহোদয় সাভারে এবং মাওয়ায় অবস্থিত দুটি কারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর একের পর এক সাহসী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। বিভিন্ন সিন্ডিকেট ও টেন্ডারবাজদের হাতে জিম্মি থাকা সিটি কর্পোরেশনে চালু করেন সর্বোচ্চ দরদাতা বা সর্বোচ্চ ইজারাদাতা কাজ পাবেন নীতি। যার ফলে, বন্ধ হয়ে যায় দীর্ঘ দিন ধরে চলা আন্ডারগ্রাউন্ড নেগোশিয়েশন। ফলে হতাশ হন বিভিন্ন সিন্ডিকেট ও দুর্নীতিবাজ ঠিকাদাররা। মাত্র দুই মাস দায়িত্বকালে সিটি করপোরেশনের সকল ক্ষেত্রে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। যার সুফল ভোগ করবেন নগরবাসী।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের তালিকায় শামিল হওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প- ২০৪১ বাস্তবায়ন ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশানায় নগরবাসীর জন্য আধুনিক নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে নিরবিচ্ছিন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

ব্যক্তিগত জীবনে সংসদ সদস্য, আইন পেশা, নিজস্ব প্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য অর্জন ত্যাগ করে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন এই প্রিয় নগরের দায়িত্ব। চাইলেই এই মৃতপ্রায় নগরীর দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারতেন। বিগত দুই মাসেই নগর ভবন হয়ে উঠছে মানুষের আস্থার ঠিকানা। ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত কর্মক্ষম ও পরিশ্রমী মানুষ। প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাচে ফেলে তৈরি করেন প্রিয় নেত্রী, প্রিয় মাতৃভূমি ও প্রিয় নগরীর জন্য। যেকোনো সমস্যাকে ভয় না পেয়ে বা এড়িয়ে না গিয়ে সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বিশেষজ্ঞ পরামর্শকে সব সময় সম্মান করেন। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মত সম্মোহনী ক্ষমতা আছে তাঁর। কাছে গেলে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায়না! সবচেয়ে বড় কথা হল আপনি যতক্ষণ চাইবেন ততক্ষণ তাঁকে দিয়ে কাজ করাতে পারবেন।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালাম বলেন, “স্বপ্ন সেটা নয় যা তুমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখো, স্বপ্ন হলো সেটাই যা তোমাকে ঘুমোতে দেয় না।” তেমনি এই শহরের উন্নয়নের ভাবনা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে ঘুমাতে দেয় না। এই শহরকে নিয়ে তাঁর একটি স্বপ্ন আছে। সততা, আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকলে কিছু করা যায় তা মাত্র দুমাসেই প্রমাণ করেছেন ব্যরিস্টার তাপস। বরাবরের মতই বৃদ্ধি করে চলছেন বাংলাদেশে আওয়ামলীগের দলীয় ভাবমূর্তি। ঢাকা দক্ষিন সিটি একজন বাসিন্দা হিসাবে আমি মনে করি, সবইতো কেবল শুরু।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews