হাত পায়ের তালু ফাটা

একদম ছোটবেলা থেকে যদি হাত পায়ের তালু ফাটা বা কেরাটোডারমা রোগটি দেখা যায়, তাহলে ধরে নিতে হবে এটি বংশগত বা জেনেটিক ধারায় সৃষ্ট। আর নিজ থেকে অর্জিত বা একোয়ার্ড কেরাটোডারমায় প্রাপ্ত বয়ষ্করা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। উভয় ক্ষেত্রে লক্ষণ উপসর্গ মোটামুটি একই।

কেরাটোডারমা কথার অর্থ হচ্ছে চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া। মোটা বা পুরু চামড়া সংগত কারণেই খসখসে ও শক্ত হতে থাকে যা কিনা পরে ফেটে যায়। অনেকসময় ফাটা গভীর হয়ে ভেতরের মাংস অবধি দেখা যেতে পারে। সেইসাথে ফাটা স্থান দিয়ে নানান জীবাণু ঢুকে হতে পারে মারাত্নক প্রদাহ বা ইনফেকশন। রোগটিতে হাত এবং পায়ের তালুর চামড়া বেশি আক্রান্ত হয়। এটি তালুর পুরা অংশব্যাপী এবং সময়-সময় আঙুলের ডগা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে হাত ও পায়ের তালুর যে অংশে চাপ বেশি পরে সেখানে এটি দেখা দেয়। অনেকসময় শীলপাটার মত দেখতে হতে পারে। উপসর্গ হিসেবে কমবেশি চুলকানি থাকে কিন্তু ফেটে গেলে কিংবা ইনফেকশন হয়ে গেলে মারাত্নক ব্যথা অনুভূত হয়। আক্রান্ত রোগীদের হাত-পা লুকিয়ে রাখার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সুখের কথা হচ্ছে কেরাটোডারমা ছোঁয়াচে নয়। অনেকে খাদ্যকে দায়ী করেন বটে তবে রোগটির সাথে খাদ্যের কোন সর্ম্পক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বংশগত কারণ কিছুটা থাকলেও অধিকাংশ কেরাটোডারমা একোয়ার্ড বা নিজ থেকে অর্জিত। এই অর্জিত বা একোয়ার্ড কেরাটোডারমা উৎপন্ন হতে পারে ত্বকের নানা রকম রোগের কারণে। যেমন- সোরিয়াসিস, একজিমা, পিটাইরিয়াসিস রুব্রা পাইলিরিয়াসিস, লুপাস, লাইকেন প্ল্যানাস, রেইটার সিনড্রোম, লিম্ফোডেমা ইত্যাদি। পাশাপাশি সিফিলিস, মারাত্নক ফাংগাস, ক্রম-বর্ধমান ভাইরাল আঁচিল, ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস সহ ত্বকের কিছু কিছু ইনফেকশনে, আয়োডিন, লিথিয়াম বা ডায়াস্কিন জাতীয় কিছু ঔষধে, আরসেনিক বিষক্রিয়াতে, বিষাক্ত কিছুর স্পর্শে, কিছু কিছু ক্যানসারে কিংবা সান ড্যামেজে এটি হতে পারে।

প্রতিরোধক এবং প্রতিকারক চিকিৎসার উভয় ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে- ত্বক নরম মসৃণ রাখা। ত্বককে কোনভাবেই শক্ত হতে দেওয়া যাবে না। গরমকালে ফুটিফাটা মাঠকে যেভাবে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখে নরম করতে হয়, অনেকটা সেরকম ভাবে ত্বক ভেসিলীন বা কোন ইমোলিয়েন্ট দিয়ে ভিজিয়ে নরম রাখতে হবে। এমনকি ফাটা সেরে গেলেও ত্বক নরম মসৃণ রাখাটা খুব জরুরি। প্রতিকারক চিকিৎসায় নানা রকমের কেরাটোলাইটক, রেটিনয়েড, ভিটামিন-ডি, স্টেরয়েড মলম ব্যবহৃত হতে পারে। রোগের তীব্রতায় অনেক সময় মুখে খাবার রেটিনয়েড কিংবা প্রদাহ বেশি থাকলে এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। পাশাপাশি হাত পায়ের পরিষ্কার পরিছন্নতা খুব জরুরি। এজন্য পটাশিয়াম পারমাংনেট দ্রবণ ব্যবহৃত হতে পারে। মনে রাখতে হবে এই রোগটিকে একেবারে নির্মূল করা যায় না, সারা জীবন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। অল্প থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে নিয়ন্ত্রণ তাড়াতাড়ি হতে পারে।



The Post Viewed By: 5 People

The Post Viewed By: 5 People



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews