গাজার ছয় সপ্তাহ বয়সী এ শিশুটিও ক্ষুধায় মারা গেছে বলে জানিয়েছে ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ছবি: রয়টার্স
গাজার ছয় সপ্তাহ বয়সী এ শিশুটিও ক্ষুধায় মারা গেছে বলে জানিয়েছে ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ছবি: রয়টার্স
মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় কেবল ক্ষুধায় ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এদের বেশিরভাগই শিশু বলে জানিয়েছে ভূখণ্ডটির হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডে ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলি বাধা নিয়ে অনেকদিন ধরেই জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার। তার মধ্যেই মঙ্গলবার ভূখণ্ডটিতে ক্ষুধায় মৃত্যু বাড়ার এ চিত্র এলো।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডটিতে ক্ষুধা, অপুষ্টিজনিত মৃত্যু দাঁড়িয়েছে ১০১-এ, এর মধ্যে ৮০টিই শিশু বলে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপে লাজারানি বলেছেন, এখন এমনকি সাহায্যকর্মীরাও ক্ষুধা ও ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ছেন।
“গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ-র সহকর্মীসহ সেবাদানকারীদেরও এখন সেবা দরকার। চিকিৎসক, নার্স, সাংবাদিক, ইউএনআরডব্লিউএ কর্মীরাসহ ত্রাণকর্মীরাও এখন ক্ষুধার্ত। অনেকে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই ক্ষুধা ও ক্লান্তিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন,” জেনিভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন লাজারানি।
গাজার পরিস্থিতিকে ‘দুনিয়ার নরক’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোথাও আর নিরাপদ জায়গা নেই।
মে-র শেষ থেকে এ পর্যন্ত খাদ্য সাহায্য চাইতে গিয়েও এক হাজারের বেশি ক্ষুধার্ত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, বলছে ইউএনআরডব্লিউএ-র হিসাব। এদের অনেকে গুলিতে নিহত হয়েছে, অনেকে ত্রাণের ট্রাকের কাছে পৌঁছাতে গিয়ে হয়েছে পদদলিত।
যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেঙে পড়ার পর চলতি বছরের ২ মার্চ ইসরায়েল গাজায় পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপ করে এবং ভূখণ্ডটিতে সব ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর মে-র শেষ থেকে সীমিত আকারে ত্রাণের ট্রাক ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়, তাও সবাই সেখানে ত্রাণ নিয়ে যেতে পারছে না।
কয়েকদিন আগে এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, গাজার বাইরে গুদামগুলোতে এখন যে পরিমাণ ত্রাণ মজুদ আছে, তা দিয়ে ‘ভূখণ্ডটির পুরো জনসংখ্যাকে তিন মাস খাওয়ানো যাবে’, কিন্তু তাদেরকে ত্রাণ ঢোকানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
ঘাটতির কারণে গাজার ভেতরে এখন খাবারের দামও ৪০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে, বলেছে তারা।
ইসরায়েল বারবার বলে আসছে, তারা গাজায় ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দিচ্ছে, কিন্তু হামাস ত্রাণ বিতরণে বাধা দিচ্ছে। তাদের এ দাবিকে ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছে গাজায় কর্মরত ত্রাণ সংস্থাগুলো।