সাইবার আক্রমণের শিকার হিসাবে এখন বিশ্বে প্রথম স্থানে যুক্তরাষ্ট্র ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য।
সাইবার সুরক্ষা কোম্পানি ‘নর্ডভিপিএন’-এর গবেষণায় উঠে এসেছে, গত তিন মাসে ১০ কোটিরও বেশি সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে যুক্তরাজ্য। এখন বিশ্বে ম্যালওয়্যার আক্রমণের দিক থেকে তৃতীয় সর্বাধিক টার্গেটকৃত দেশ হয়ে উঠেছে দেশটি।
গবেষণা বলছে, অপরাধীরা এখন সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বেশি করে টার্গেট করছে, বিশেষ করে ইমেইল ও টেক্সট মেসেজে পাঠানো লিংক, ক্ষতিকর ওয়েবসাইট ও ফাইলের মাধ্যমে।
ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হওয়ার দিক থেকে প্রথমে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপর রয়েছে কানাডা এবং তারপরই যুক্তরাজ্যের অবস্থান। বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ম্যালওয়্যার আক্রমণের পরিমাণ সাত শতাংশ বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
‘নর্ডভিপিএন’-এর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মারিউস ব্রেইডিস বলেছেন, “আমাদের তথ্য অনুযায়ী অনলাইন হুমকি কেবল সংখ্যায় নয়, জটিলতায়ও ধীরে ধীরে বাড়ছে।
“ম্যালওয়্যার এখন অনলাইন অপরাধের ‘সুইস আর্মি নাইফ’ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি কেবল আর ভাইরাস পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয়, বরং আজকের ম্যালওয়্যার দিয়ে লগইন তথ্য চুরি করা, ওয়েবক্যামের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া, ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করা, এমনকি পুরো ছবির সংগ্রহ এক মুহূর্তেই লক করে ফেলা সম্ভব। বিষয়টি এত দ্রুত ও নীরবে ঘটে যে, অনেক সময় তা বোঝাও যায় না। আর যখন টের পাওয়া যায় ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।”
‘নর্ডভিপিএন’-এর প্রতিবেদন বলছে, গোটা বিশ্বের হ্যাকারদের জন্য যুক্তরাজ্যের মানুষ ‘মূল টার্গেট’ হতে পারে। কারণ দেশটির অর্থনীতি খুবই ডিজিটাল ও সাধারণ মানুষের ব্যয় করার মতো যথেষ্ট অর্থ রয়েছে।
হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের এক সাইবার আক্রমণের দিকে নজর দিয়েছেন নিরাপত্তা গবেষকরা, যেখানে সাইবার অপরাধীরা বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানি যেমন অ্যামাজন, গুগল ও টেলিগ্রামের ছদ্মবেশ ধারণ করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তারা।
যুক্তরাজ্যের সরকারি সংস্থা ‘এইচআরএমসি’র নাম ব্যবহার করেও মানুষকে ভুয়া ইমেইল বা টেক্সট মেসেজ দিয়েও সাইবার হামলা চালানো হচ্ছে।
রেকর্ড সংখ্যক সাইবার আক্রমণের কারণে কোটি কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানাসহ অপরাধ সংক্রান্ত তথ্যও হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা।
২০২৫ সালে রেকর্ড সংখ্যক র্যানসমওয়্যার আক্রমণের কথা জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সাইবার সুরক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে হামলাকারীরা কোম্পানির আইটি সিস্টেম দখলে নিয়েছে এবং মোটা অংকের অর্থ না দিলে সেগুলো ফিরিয়ে দেবে না বলেও হুমকি দিয়েছে।
‘চেক পয়েন্ট’-এর এপ্রিল মাসের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রতি সপ্তাহে প্রায় দুই হাজার সাইবার আক্রমণের শিকার হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
যুক্তরাজ্যে পরিচয় জালিয়াতির রেকর্ড সংখ্যক ঘটনা রিপোর্ট করেছে জালিয়াতি প্রতিরোধ পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ‘সিফাস’, যেখানে প্রতারকদের কাছে লাখ লাখ অর্থ হারিয়েছেন কিছু ভুক্তভোগী।