রাস্তাঘাটে হোক কিংবা একা একা, যে কোনও মুহূর্তে সেলফি মাস্ট। বন্ধুদের আড্ডা হোক বা বিয়েবাড়ি, সেলফি না তুললে যেন তা অসম্পূর্ণ। বর্তমান সময়ে এটিকে অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই ধরা হয়। কিন্তু আসলে তা নয়। 

এক ধরনের অবসেসিভ ডিসঅর্ডারের জেরেই এই সেলফি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এবং তা এমন পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে যে, বিপজ্জনক সেলফি তোলা থেকেও বিরত হচ্ছে না মানুষ। তাতে প্রাণও যাচ্ছে, তবু হুঁশ ফেরে না। সম্প্রতি সেলফি তুলতে গিয়ে ৬২ তলা ভবন থেকে পড়ে এক চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়। এবার এই সেলফি তোলার প্রবণতাকে অসুস্থতা হিসেবেই চিহ্নিত করলেন বিজ্ঞানীরা। তা নিরাময়ের জন্য সঠিক চিকিৎসা দরকার। 

সম্প্রতি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে এ কথাই জানিয়েছেন একদল গবেষক। বেশ কিছুদিন আগে এই ধরনের একটি খবর সামনে এসেছিল। সেখানে জানানো হয়েছিল, মার্কিন মুলুকের গবেষকরা সেলফি তোলাকে মানসিক ব্যাধি বলে চিহ্নিত করেছেন। পরে অবশ্য জানা যায়, সে খবর ভুয়ো। গবেষকরা তবু বিষয়টির উপর নজর রাখা ছাড়েননি। যা রটে তা কিছু তো বটে। তারা তাই খতিয়ে দেখেন পুরো বিষয়টি। 

জানা যায়, খবরটি ভুয়ো হলেও, সেলফি তোলা যে এক রকমের রোগ তা অনস্বীকার্য। নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং তামিলনাড়ুর থিয়াগারাজার স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টের গবেষকরা যৌথভাবে এ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। স্থান হিসেবে বেছে নেওযা হয় ভারতকেই। কারণ এ দেশেই ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেকে বেশি। তাছাড়া সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যুর নিরিখেও ভারত এগিয়ে। ফলে এখানকার নির্বাচিত জনগণদের উপর সমীক্ষা চালিয়েই মানসিক অসুখের হদিশ পেতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবং তারা তো পেয়েওছেন। রোগটির নাম, তাদের মতে সেলফাইটিস। এবং তার বেশ কয়েকটি ধাপও আছে।

কী রকম ব্যাপারটা? দিনে যারা তিনটে করে সেলফি তোলেন এবং প্রত্যেকটিই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, তারা অ্যাকিউট সেলফাইটিসে আক্রান্ত। আর ঘণ্টায় ঘণ্টায় যদি কেউ সেলফি তোলেন, আর তা পোস্ট করতে থাকেন, তবে তিনি ক্রনিক সেলফাইটিসে আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে এই ধরনের রোগীরা দিনে অন্তত ছটি করে সেলফি তোলেন। কেন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ? 

জানা গেছে, আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, সামাজিকভাবে নিজেকে সংযুক্ত রাখা, বা নিজের পরিপার্শ্বের রেকর্ড রাখার তাগিদেই এই কাজ করে চলেন। অনেকে আবার মুড ভালো রাখার উপায় হিসেবে এটিকেও দেখেন। আসলে সামাজিক বিচ্ছিন্নতাই ক্রমাগত ঠেলে দিচ্ছে সেলফির দিকে। বহু মানুষের উপর সমীক্ষা চালিয়ে শেষমেশ এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছেন গবেষকরা।

তবে এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলেই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। ঠিক কী কারণে এরকম একটি ব্যবহারিক বিকৃতি বা অবসেসিভ ডিসঅর্ডারে স্বীকার হচ্ছে মানুষ, তার মূল খোঁজা প্রয়োজন বলেই মত বিজ্ঞানীদের।-সংবাদ প্রতিদিন

বিডি প্রতিদিন/১৮ ডিসেম্বর ২০১৭/আরাফাত



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews