শব্দ নিয়েই আমার কারবার। অক্ষরের শব্দ। এই কারবার সশব্দ না। নিঃশব্দ। নিঃশব্দেই লিখি আমি। শব্দ নিয়ে ভাবি। ভাবতে ভাবতে ভাব হয়। শব্দের সঙ্গে ভাব। ভাব থেকে ভাবনা। আর সে ভাবনা দুর্ভাবনায় পৌঁছে যায়। বলছি।

বাংলা শব্দের ব্যাকরণ মাঝে মাঝে অদ্ভুত লাগে। যেমন, সেনা থেকে যদি সৈনিক হয় তবে দেনা থেকে দৈনিক না কেন? দৈনিক হয়েছে দিন থেকে। তাহলে তো টিন থেকে টৈনিক হবে। হয়নি। অথচ চীন থেকে চৈনিক হয়েছে ঠিকই। ভাবনায় পড়ি।

সোনা থেকে সোনালি। রুপা থেকে রুপালি। তামা থেকে তামালি না কেন? তামালি হয়েছে তামাটে। আজব। সুন্দর সৌন্দর্য হলে বান্দর বান্দর্য হবে না? কোথায়? বান্দর্য তো বাঁদরামি হয়ে গাছের আগায় ভেংচি কাটছে। শুধু গাছে কেন? বই, টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া সবখানে।

ঢং থেকে রঙের কথায় আসি। সাদা হয়েছে সাদাটে অথচ নীল নীলাটে হয়নি। হয়েছে নীলাভ। সবুজ আবার সবুজাভ হয়েছে। বেগুন হয়েছে বেগুনি কিন্তু হলুদ হলুদি হয়নি। হলদেটে হয়েছে। লাল লালচে হলেও আকাশ আকাশচে হয়নি। হয়েছে আকাশি। চালাক কমলা কমলাই রয়ে গেছে। রঙেরও বেশ রং ঢং।

ভেবেছি অনেক। উত্তর পাইনি। খেলা থেকে খেলোয়াড় হলে লেখা থেকে লেখোয়াড় না কেন? লেখক কেন? তাহলে খেলোয়াড়কেও খেলক ডাকা উচিত। অভিনয় থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রী। তো পরিণয় থেকে পরিণেতা-পরিনেত্রী হবে না? হয়েছে বর-কনে। কী আজব!

ভাত খাওয়ার পর ঘুম নাকি ভাত ঘুম। তাহলে খিচুড়ি খেয়ে ঘুমালে কি তা খিচুড়ি ঘুম? কই, বলি না তো? আমাদের নাইট গার্ড গতরাতে ডিউটি করে সকালে তন্দুরি খেয়ে ঘুমিয়েছে। ও কি তন্দুরি ঘুম দিয়েছে? ভেবেছি অনেক।

খালার বর খালু হলে আপার বর আপু হবে না কেন? আপার বর হয়েছে দুলাভাই। কোথাকার কোন দুলা আর ভাই দুজনকে এনে জোড়া লাগিয়ে আপার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুলা মানে বর আর ভাই মানে ভাই। বর ভাই। বর কখনো ভাই হয়?

এদিকে নানা বিয়ে করেছে নানিকে অথচ বাবা বিয়ে করে বসে আছে মা’কে। বাবার তো উচিত বাবিকে বিয়ে করা।

শরমের বিপরীত বেশরম, গরমের বিপরীত তো তাহলে বেগরম। ঠাণ্ডা হবে কেন? আমরা কি একটু সহজ হতে পারি না?

মোবাইল ফোন যখন সাইজে ছোট ছিল, বলা হলো মুঠো ফোন। ফোন এখন বড় হয়েছে, চ্যাপ্টা স্মার্ট হয়েছে। পুরো হাতের তালু লাগে ধরতে। ওকে এখন ডাকা হোক তালু ফোন।

মেসেজের বাংলা ক্ষুদে বার্তা। বার্তা যদি বড় হয় তখন কি ওটা বড় বার্তা? আচ্ছা, বার্তার গুণগত ভাগ করলে কেমন হয়? যেমন প্রেমের মেসেজ-প্রেম বার্তা, মেসেজে ঝাড়ি দিলে-ঝাড়ি বার্তা, তেল মারা মেসেজ-তেল বার্তা, মেসেজে বিয়ের দাওয়াত দিলে-বিয়ে বার্তা। এমন?

বিয়ের কথা বলায় ফুলশয্যার কথা মনে হলো। মানে ফুলশয্যা শব্দটা। ফুল দিয়ে কখনো শয্যা বানানো যায়? বানানো গেলেও সে শয্যা টিকবে না, ছিঁড়ে যাবে। ফুলের শয্যায় ঘুম ভালো হবে না। গা চুলকাবে। সেদিন কে যেন একজন মজা করে বলল, ওটা নাকি ব্রিটিশ আমলের বাংলা। বলেছে Full শয্যা, শুনেছে ফুলশয্যা। তাই সে রাতে শয্যায় ফুল ছিটিয়ে দিয়েছে। Full শয্যার পক্ষে যুক্তিও দেখিয়েছে সে। বলেছে, এই শয্যা নাকি মানুষের জীবন পূর্ণ হওয়ার শয্যা। পড়াশোনা, একটা ভালো চাকরি, তারপরই এই শয্যায় পূর্ণ হয় জীবন। মনে মনে হেসেছি। বলিনি যে ওটা FullI না, ফুলও না, আসলে Fool শয্যা । Fool এ Fool এ যে শয্যা।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews