পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিদেশের মাটিতে বাঘের গর্জন তুলতেন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি ও চেয়ারপার্সনের উপদেস্টা এমএ মালিক। তিনি ছিলেন সবার চেয়ে আলাদা। মাথায় মোড়ানো কালো কাপড়ের পাগড়ি বেঁধে হুঁশিয়ারীর দিতেন শেখ হাসিনার খুন রাহাজানি গণহত্যার বিরুদ্ধে। যুক্তরাজ্য সহ ইউরোপ সফরে হাসিনা পা রাখলে সেখানে অনুসারীদের নিয়ে হাজির হতেন হাসিনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তার এই বলিষ্ট ভূমিকার সাহসী প্রকাশ গুরুত্ব দিয়ে নজরে আনতো। এক পর্যায়ে তাকে চায়ের দাওয়াত দেন শেখ হাসিনা। আপোষহীন মালিক প্রত্যাখান করেন অত্যন্ত সচেতনভাবে। বিষয়টিতে ব্যাপক তোলপাড় ঘটে। শেখ হাসিনার শকুন দৃষ্টি পড়ে তার উপর, এক পর্যায়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলীতে তার গ্রামের বাড়ীতে আগুণে পুড়িয়ে দেয় আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা।
তব্ওু দমেননি তিনি। চিরায়িত স্বভাবে হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে আরও সাহসী ভূমিকায় অবর্তীন হন তিনি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের মাঠিতে পা রাখেন এমএ মালিক। তারপর সিলেটজুড়ে শুরু হয় মালিকময় বিএনপির অন্য এক নবযাত্রা। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘটে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা।
সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ১১টায় নগরীর পাঠানটুলায় সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে এক আলোচনা সভা ও বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা করেছেন এম এ মালিক। এ আয়োজনে উপস্থতি থাকবনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং যুগ্ম সম্পাদক খাইরুল কবির খোকন।
দলের স্থানীয় কোন কমিটি ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে এমন উদ্যাগ সিলেটে এই প্রথম, অকল্পনীয়, সেকারনে ঐতিহাসিক বটে। তা কেবল সম্ভব হচ্ছে এমএ মালিকের কারনে, এমনটি বলছেন দলের স্থানীয় নীতিনির্ধারকরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওসমানী বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবেন আমন্ত্রীত নেতারা। তারপর অনুষ্টানস্থল অভিমুখে রওয়ানা দিবেন তারা। এই অনুষ্টানকে ঘিরে এক কাতারে দাঁড়ান সিলেট বিএনপি নেতারা। দলের মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বরণে নেন প্রস্তুতিও।
তাই দক্ষিণ সুরমার তেতলিতে ‘এমএম মালিক মহলে’ চলে দফায় দফায় বৈঠক। বৈঠকে শরিক হন সিলেট বিএনপির সব বলয়ের নেতারা। তারাও সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন মালিকের পাশে থেকে অনুষ্টান সফল ও সার্থকে। অনুষ্টানটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এছাড়া বৈঠকে সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র আলহাজ জি কে গৌছ, সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দলীয় সূত্র বলছে, মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেটে আসছেনম সেকারনে প্রস্ততিও স্বর্তস্ফূর্ত। এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়ম সবায় এমএ মালিক জানিয়েছেন- দক্ষিণ সুরমা এলাকা তথা সিলেটে একসঙ্গে জাতীয় নেতৃবৃন্দের আগমনে বিএনপি’র সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল।
তিনি বলেন, সিলেট-৩ আসন (দক্ষিণ সুরমা- ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) এর মানুষের সুখে-দুঃখে আজীবন পাশে থাকতে চাই। দীর্ঘদিন দেশের মাঠিতে না থাকার পরও এই আসনের মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিচ্ছেন আমি তাদের কাছে চিরঋণী।
এছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। দোয়া মাহফিলের পর জনসভাও রয়েছে। আমি বিএনপির মহাসচিবসহ দলের শীর্ষনেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা সম্মতি দিয়েছেন।’ সেকারনে আমাদের আন্তরিক প্রস্তুতি।