আবদুল আলীম, তিনি বাংলা লোকসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী। সংগীতজীবনে পেয়েছেন অসংখ্য স্বীকৃতি ও সম্মাননা। স্বাধীনতা পুরস্কার থেকে একুশে পদকের মতো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও আছে তার ঝুলিতে। তবে রাষ্ট্রীয় দু’টি পদকসহ গুরুত্বপূর্ণ সাতটি পুরস্কার ও স্মারক চুরি হয়ে গেছে এই শিল্পীর।

৮ মে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার আলীম পরিবারের বাসভবন থেকে এই চুরির ঘটনা ঘটে। তাই নয়, এই পদকগুলো নিয়ে রয়েছে পারিবারিক কলহ-ও!







আবদুল আলীমের ছোট কন্যা কণ্ঠশিল্পী নূরজাহান আলীম জানান, চুরি যাওয়া  জিনিসগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালের একুশে পদক, ১৯৯৭ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার, ১৯৬০ সালে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্টের দেওয়া তমঘা-ই-হুসন এবং লাহোরে নিখিল পাকিস্তান সংগীত সম্মেলনে প্রাপ্ত দু’টি সম্মাননা স্মারক।

তিনি অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেখুন বাবার সব পুরস্কার থাকে আমার বড় বোনের বাসায় (একই ভবন)। সে একা থাকেন। বড় ভাই জহীর আলীমও এসব বিষয় দেখাশোনা করেন। আমি কিংবা আমার মেজো ভাই আজগর আলীম এ বিষয়ে কিছু জানি না। আর আমাদের বাড়ির কোনও নিরাপত্তা নেই। এখন এমন একটা বাড়িতে কেন এই রাষ্ট্রীয় পুরস্কার রাখা হবে! আমি বা আমার মেজো ভাই অনেক সময় আমাদের কাছে পদকগুলো রাখতে চেয়েছি কিন্তু আমার বড় বোন আর বড় ভাই সেগুলো আমাদের কাছে দেয়নি।’

এরপর তিনি বলেন, ‘আমি বাবার অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করেছি। তার গান পাকিস্তান থেকে নিয়ে এসেছি, তার কিছু গানের কপিরাইট করেছি। এসব কারণে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ থেকে আমাকে বলা হয়েছিলো, বাবার ব্যবহৃত কিছু জিনিস যেমন হারমোনিয়াম বা আরও অন্যান্য কিছু যদি আমরা তাদের কাছে রাখি, সেগুলো অক্ষত ও যত্নে থাকবে। আমার বড় ভাই-বোনরা সেগুলো পর্যন্ত দেয়নি।’

এটা এক অপূরণীয় ক্ষতি জানিয়ে নূরজাহান আলীম বলেন, ‘এটা বিশাল এক ক্ষতি। পুরস্কারগুলো না পাওয়া গেলে খুব খারাপ লাগবে। কিন্তু আমার কথা হলো, এত মূল্যবান পুরস্কার কেন বাসায় রাখা হবে! আমার বড় ভাই-বোনদের বরং আপনারা এই প্রশ্ন করুন।’

চুরি যাওয়ার পর খিলগাঁও থানায় জানানো হয়েছে জানিয়ে নূরজাহান বলেন, ‘জিডি করা হয়েছে কিনা আমি জানি না। এসব বিষয় দেখছেন আমার বড় ভাই-বোনরা। তবে খিলগাঁও থানায় জানানো হয়েছে, এটা জানি। কিন্তু পুলিশ আসলে খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে ইনভেস্টিগেট করছে বলে আমার মনে হয় না। আর চুরি যদি হয় সুক্ষ্মভাবে, তাহলে জিডি করে কী লাভ!’

নূরজাহান আলীম





এদিকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবদুল আলীমের মেজো মেয়ে আসিয়া আলীম জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি হাঁটতে বের হন, ফিরে এসে দেখতে পান দরজার তালা ভাঙা, ঘর তছনছ করা।

বলা প্রয়োজন, খিলগাঁও সি ব্লকের এই বাড়ির ছয় ইউনিটের মধ্যে পাঁচটিতে  আবদুল আলীমের সন্তানরা থাকেন এবং একটি ইউনিট ভাড়া দেওয়া। দোতলায় থাকেন এই শিল্পীর বড় ছেলে জহির আলীম। তিনি এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাসায় গ্যাস ও পানির বিল হিসেবে রাখা ১০ হাজার টাকা চোররা নেয়নি। তাদের টার্গেট ছিল মূল্যবান পদক ও স্বর্ণালঙ্কার।

জহির আলীম আরও জানান, পদক উদ্ধারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। উপদেষ্টা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews