বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে আইনি কোনো বাধা ছিল না। তারপরও বাধাপ্রদান, গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন ঘটনায় সাংবিধানিক অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে।
১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আটক হন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। তার ফুল কেড়ে নিয়ে তাকে হেনস্তাও করা হয়। পরে তাকে ধানমন্ডি থানায় জুলাই-আগস্টের ঘটনায় চলতি বছরের এপ্রিলে দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে তিনি রোববার আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
তাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় কেন গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তার ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে ১৫ আগস্ট বিকালে নোয়াখালীর কবিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রাতে সাবাড়িয়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে মসজিদের ইমাম নিজাম উদ্দিন, মোয়াজ্জিন নজরুল ইসলাম এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগের স্থানীয় নেতা আব্দুল করিমকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, ওই মিলাদ মহফিলের আয়োজন করেছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। তবে কেন তাদের আটক করা হয়েছে তার কারণ জানাতে চাননি কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি কারণ জানতে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন।
ঢাকায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট ছিল কড়া পুলিশ পাহারা। পুলিশ ওই এলাকায় শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া অন্তত সাত-আটজনকে আটক করে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়। পুলিশ ৩২ নম্বরের সামনে শ্রদ্ধা জানাতে কাউকে যেতে দেয়নি। সড়কের দুই দিকে ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে রাখে। তবে আগের রাতে বিনা বাধায় ওই সড়কে বঙ্গবন্ধুবিরোধী মিছিল করে একদল লোক।
অন্যদিকে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে যারা পোস্ট দিয়েছেন এমন অন্তত ২৫ জন অভিনয়শিল্পী, সাংবাদিক ও লেখককে ‘কালাচারাল ফ্যাসিস্ট' অ্যাখ্যা দিয়ে পরের দিন ১৬ আগস্ট বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাদের ছবিতে জুতা মারার আয়োজন করা হয়।
রিকশাচালক মামলার আসামি, জানেন না বাদী
রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমানকে যে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ওই মামলাটি দায়ের হয় চলতি বছরের ২ এপ্রিল। মামলার বাদী আরিফুল ইসলাম মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী।
তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট তিনি সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পিঠে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি কামরাঙ্গীরচর এলাকায় থাকেন। আরিফুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, আমি নিজে মামলাটি করিনি। আমাদের এলাকার মনি চেয়ারম্যান অনুদানের কথা বলে আমার কাছ থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। পরে জানতে পারি মামলা হয়েছে এবং আমি মামলার বাদী।
তিনি বলেন, আমি কাউকে আসামি করিনি। তারাই আসামিদের নাম দিয়ে দিয়েছে। আমাকে পুতুল বানানো হয়েছে। আসামিদের মধ্যে যারা বড় বড় তাদের আমি চিনি। আর কাউকে চিনি না। ওইখানে কারা গুলি করেছে তাও আমি জানি না। আমি মিছিলের সামনে ছিলাম। মিছিল ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর গুলি করা হয়।
রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তারের ঘটনা শুনে তিনি বলেন, ওই নামে কেউ আসামি আছে বলে আমার জানা নাই। আমি তাকে আসামি করিনি। আর সে ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গেছে সেটা তার বিষয়। তাকে এই মামলায় কেন গ্রেপ্তার করা হবে!
তার মামলা নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে বলে উল্লেখ করে রিকশাচালককে ছাড়ানোর জন্য তার করণীয় কিছু থাকলে তা তিনি করতে আগ্রহী বলে জানান। তিনি বলেন, এই মামলাটা নিয়ে আমি বিপদে আছি। মামলাটি প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ থাকলে আমি করতে চাই।
রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে সোমবার হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকার মহানগর হাকিম এম এ আজহারুর ইসলাম জামিন দিয়েছেন বলে জানান তার আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী।
তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তিনি মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, ওই মামলায় তিনি আসামি নন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতও নন। তারপরও পুলিশ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আটক করেছিল।
পুলিশের কাছে কী নির্দেশনা ছিল?
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) মো. তালেবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, আজিজুর রহমানকে সন্দেহজনকভাবে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে ধানমন্ডি থানার ওসিকে।
১৫ আগস্ট ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানো বা ওই এলাকায় যাওয়ার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ থেকে আটক রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমানকে কীসের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে কোনো অসঙ্গতি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। দায়েরকৃত মামলায় আজিজুর রহমানের সম্পৃক্ততা তদন্ত শেষ করার ক্ষেত্রে সম্প্রতি সংশোধিত সিআরপিসির ১৭৩(এ) ধারা মোতাবেক অতিসত্ত্বর প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে সাদা পোশাকে উপস্থিত ধানমন্ডি থানার ওসি ক্যশৈন্যু মারমা বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকদের প্রশ্নর জবাবে বলেন, ৩২ নম্বরে নাশকতার পরিকল্পনার কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই। সরকারিভাবে যেহেতু তাদের (আওয়ামী লীগ) কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, আমরা সেই নির্দেশনা ফলো করবো।
তিনি বলেন, আপনারা হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন, কিছুদিন আগে আমাদের যে প্রেস সচিব, তিনি কিছু ইন্সট্রাকশন্স দিয়েছিলেন। সেই ইন্সট্রাকশন্স মোতাবেক আমরা কাজ করবো।
তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ওই দিনই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ওটা তো আমার ডিপার্টমেন্ট নারে ভাই। ওনাদেরকে আমি ইন্সট্রাকশন দেব কেন? পুলিশ এর হোম মিনিস্ট্রি আছে, আইজিপি আছে, ডিএমপি কমিশনার আছে। সে তার লাইন অব ডিউটি অনুযায়ী ইন্সট্রাকশন পাবে, সেটা আমি দেব কেন। আমার তো রুলস অব বিজনেসেও এটা পড়ে না। সরকারের রুলস অব বিজনেসে কি এটা পড়ে যে আমি পুলিশকে বলবো যে, আপনারা এটা করেন।
এ নিয়ে ধানমন্ডি থানার ওসি ক্যশৈন্যু মারমার কাছে রোববার জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। আর আজিজুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়েও তিনি কোনো জবাব দেননি।
‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন'
১৫ আগস্টে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে বাধা ও আটক, আটকের পর রিকশা চালক মো. আজিজুর রাহমানকে জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের সময়কার হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার এবং ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ ট্যাগ দেয়া নিয়ে ডয়চে ভেলে কথা বলেছে মানবাধিকারকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সমাজ বিশ্লেষকদের সঙ্গে।
মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, একজন মানুষ একজন মৃত ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে যাবে। তাকে সেই সুযোগ তো রাষ্ট্র দেবেই না, বরং তাকে একটি মিথ্যা হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এই ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। ফ্যাসিবাদের সময় যেসব ঘটনা ঘটেছে আর বর্তমানে পত্রপত্রিকা ও মানুষের মুখে যা শুনছি, দেখছি তাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে হতভম্ব। সে তার হৃদয়ের ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে এই ধরনের হয়রানির শিকার হবে, মিথ্যা মামলায় চালান করা হবে এরচেয়ে বড় কোনো বর্বরতার উদাহরণ আমি দিতে পারবো না।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে (যদি) সিদ্ধান্ত নিতো যে, ওখানে কেউ ফুলের মালা দিতে পারবে না, দিলে সেটা অপরাধ। সেই অপরাধে আটক করতে পারতো। কিন্তু এভাবে মিথ্যা মামলায় কীভাবে আটক করে।
হতাশা ব্যক্ত করে তিনি আরো বলেন, আমরা কোন জামানায় প্রবেশ করলাম। মৃত ব্যক্তির জন্য মিলাদ পড়লে আটক করা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রদ্ধা জানালে, লিখলে কালচারাল ফ্যাসিস্ট বলে ছবিতে ঘোষণা দিয়ে জুতা মারা হবে। আগে জাহেলিয়াত বলে জানতাম, এটা তো সেদিকেই যাচ্ছে।
আইনগত কোনো বিধি-নিষেধ না থাকার পরও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক ও শ্রদ্ধা জানাতে আসাদের বাধা দেওয়াকে সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক।
তিনি বলেন, কোনো আদর্শ বা চিন্তার প্রতি দেশে আইনি কোনো বাধা নিষেধ না থাকার পরও কোনো ব্যক্তি যদি তার আবেগকে ধারণ করে, শোক প্রকাশ করে তাহলে তাকে তো বাধা দেয়া যাবে না। তাহলে তো তার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হলো। আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে কোথাও যেতে নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে। সেটা থাকলে এবং সেটা কেউ না মানলে তার বিরুদ্ধে সেই অপরাধে মামলা হতে পারে। কিন্ত হত্যাচেষ্টার আগের মামলায় যার সঙ্গে সে জড়িত না, একজন রিকশাচালক, তাকে গ্রেপ্তার করা তো তার সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে আমাদের পরিশুদ্ধ করার জন্য। আমরা অন্যের সংস্কার চাই, নিজেদের সংস্কার করি না। ইমামকে গ্রেপ্তার করা হবে। কাউকে তার মতপ্রকাশ করতে দেয়া হবে না। এতে তো মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করে পোস্ট দেয়া সংস্কৃতিকর্মীদের বিরুদ্ধে কর্মসূচীর সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই কিন্তু জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। এখন আমার মতের সাথে তাদের মত মিলছে না তাই তাদের কালচারাল ফ্যাসিস্ট বলে দিচ্ছি। আসলে এর মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতা রুদ্ধ করা হচ্ছে। আমার মত ছাড়া অন্যদের মত আমি প্রকাশ করতে দিচ্ছি না। আমি মুক্তমতের বিরুদ্ধে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছি।
এ বিষয়ে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি। তার মতে, সরকারের উচিত ছিল এই ধরনের তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রথমে আহ্বান জানানো এবং পরে ব্যবস্থা নেয়া।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স্নিগ্ধা রেজওয়ানা ১৫ আগস্ট যেসব ঘটনা ঘটেছে তার প্রক্রিয়ায় ফ্যাসিজমের উপাদান দেখতে পান। তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, কোনো ব্যক্তি কোথায় যাবে, কি যাবে না সেটা নিয়ে যদি বাধা দেয়া হয়, যদি সেখানে কোনো আইনগত লিগ্যাল নোটিশ না থাকে, তাকে যদি বাধা দেয়া হয় সেটা ব্যক্তির গতিময়তার ওপর বাধা প্রদান করা। সেই বাধা দেয়ার এখতিয়ার কারো নাই, ১৫ আগস্ট ৩২ নম্বরে যাওয়ার ব্যাপারে যেহেতু কোনো আইনি বাধা ছিল না। এরপরও যা করা হয়েছে, যে প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়া হয়েছে, হয়রানি করা হয়েছে, এই পুরো প্রক্রিয়াটির নাম ফ্যাসিজম।
৩২ নম্বরে এই বাধা দেয়ার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনো অবস্থান দেখা যায়নি। উল্টো যারা যেতে চেয়েছে তাদের আটক করা, রিকশাচালককে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোরও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের কালচারাল ফ্যাসিস্ট অ্যাখ্যায়িত করে কর্মসূচী পালন নিয়ে তিনি বলেন, কাউকে কালাচারাল ফ্যাসিস্ট বলার মানে হলো তার মতামত প্রকাশ করতে বাধা দেয়া । তাকে ভয় দেখানো। তার মতকে অবদমিত করা। এটা যারা করেন তারা ফ্যাসিবাদ দ্বারা এতটাই হেজিমোনাইজড যে, তারা নিজেরাই যে ফ্যাসিস্ট তা বুঝতে পারেন না।
সরকার যা বলছে
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ১৫ আগস্ট এখন আর কোনো জাতীয় দিবস না। সুতরাং এই দিবস পালন করা, না করা নিয়ে সরকারের কোনো অবস্থান নাই। তবে এই দিবসকে সামনে রেখে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পক্ষ থেকে আগে থেকেই উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া হচ্ছিল। যেটাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি অবনতির এক ধরনের আশঙ্কা করেছে। সেই আশঙ্কা থেকে নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। সেই ব্যবস্থা নেয়ার কারণে যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থা এড়ানো গেছে।
তিনি জানান, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে অনেককেই আটক করা হয়েছিল এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের অধিকাংশকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। একজন ব্যক্তিকে আটকের পর একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই বিষয়ে ধানমন্ডির ওসির কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।
এরইমধ্যে অতিদ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে যাতে সে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়, বলেন তিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কালচারাল ফ্যাসিস্ট বা জুতা নিক্ষেপ এটা হচ্ছে ক্যাম্পাসে কারো কারো প্রতিবাদ। এটার সাথে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নাই।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা সংস্করণের হয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন হারুন উর রশীদ স্বপন। এই প্রতিবেদনের সব ধরনের দায়ভার ডয়চে ভেলের।