নিউজ ডেস্ক 
গেল শুক্রবার রাতে ঢাকার গুলশান এলাকায় হামলার পর জিম্মি ঘটনার শুরুতেই হামলাকারীদের গুলিতে নিহত হন বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দীন এবং এসি রবিউল ইসলাম নিহত হন। প্রায় ১২ ঘন্টা পর কমান্ডো বাহিনীর অভিযান শেষে বেরিয়ে আসে হত্যাকান্ডের বিস্তারিত চিত্র। হলি আর্টিসান বেকারীতে জিম্মি করে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়ান, ৭ জন জাপানের নাগরিক, ৩ জন বাংলাদেশী এবং ১ জন ভারতীয়। ইতালীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত ৯ জন ইতালীয়ান নাগরিকদের নাম যথাক্রমে খ্রিশ্চিয়ান রসি, নাদিয়া বেনেদেত্তি, মার্কো টনদাত, এ্যাডেলে পাগলিসি, সিমোনা মন্টি, ক্লডিয়া মারিয়া দ’আন্তনা, ভিনসেনজো দ’এ্যালেস্ট্রো, মারিয়া রিভোলি এবং ক্লডিও কাপেলি। নিহত ৭ জাপানের নাগরিকের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ৩ জন নিহত বাংলাদেশীর মধ্যে আছেন ফারাজ আয়াজ হোসেন, অবিন্তা কবির এবং ইশরাত আখন্দ। নিহত একজন ভারতীয় নাগরিকের নাম তারুশি জৈন।

ইতালীর নিহত ৯ জনের বিস্তারিত:

খ্রিশ্চিয়ান রসি: খ্রিশ্চিয়ান রসির বয়স ৪৭ বছর। তিনি বিবাহিত এবং তিন বছর বয়সী জমজ সন্তানের জনক। তিনি তৈরি পোষাক সংক্রান্ত কনসালটেন্সি ব্যবসা করেন। বাংলাদেশে এবং চীনে অফিস আছে তার। ব্যবসা সংক্রান্ত কাজেই বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি।

নাদিয়া বেনেদেত্তি: নাদিয়া বেনেদেত্তিও টেক্সটাইল এবং পোষাক খাতে কাজ করেন। লন্ডনভিত্তিক ‘স্টুডিও টেক্স লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। ঢাকাতেও একটি শাখা আছে ঐ প্রতিষ্ঠানের।

মার্কো টনদাত: মার্কো টনদাত স্টুডিও টেক্স লিমিটেড নামের ঐ প্রতিষ্ঠানেই কাজ করতেন। তার ৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

এ্যাডেলে পাগলিসি: ৫০ বছর বয়সী এ্যাডেলে পাগলিসি একটি টেক্সটাইল কোম্পানীর ম্যানেজার ছিলেন। শনিবার সকালে তার ইতালীতে ফিরে যাবার কথা ছিল। তার ফেসবুকে প্রোফাইলের ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসের তথ্য অনুযায়ী ঢাকার ‘আর্টসানা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করেন।

সিমোনা মন্টি: সিমোনা মন্টি কিছুদিন আগে থেকে ঢাকায় থাকতে শুরু করেন এবং প্রাথমিক তথ্যে জানা যায় তিনি হলি আর্টিসান বেকারীতে কাজ করতেন।

ক্লডিয়া মারিয়া দ’আন্তনা: ৫৬ বছর বয়সী ক্লডিয়া মারিয়া দ’আন্তনা বাংলাদেশে পরিচালিত ‘ফেডো ট্রেডিং লিমিটেড’ নামের নামের একটি ইতালীয়ান টেক্সটাইল কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বাংলাদেশে তিনি তার স্বামীসহ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছিলেন।

নিহত ভিনসেনজো দ’এ্যালেস্ট্রো, মারিয়া রিভোলি এবং ক্লডিও কাপেলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে জিয়ান গ্যালেজ্জো বসেত্তি গুলশানের হামলায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ইতালীয়ান।

জাপানের ৭ জন:

জাপানের নিহত ৭ জনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি এখনো। তবে এটা জানা গেছে যে, তারা জাপানের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থার কনসালট্যান্ট ছিলেন। আর গুলশানের হামলায় জিম্মি হওয়ার পর বেঁচে যাওয়া একমাত্র জাপানী নাগিরেকর নাম তামাওকি ওয়াতানাবে। তিনি টোকিওভিত্তিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আলমেক কর্পোরেশনে কর্মরত।

ভারতের ১ জন:

তারুশি জৈন নামে নিহত ১৮ বছর বয়সী ভারতীয় নাগরিক ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা ২০ বছর ধরে বাংলাদেশে গার্মেন্টস ব্যবসার সাথে জড়িত।

বাংলাদেশের ৩ জন:

ফারাজ আয়াজ হোসেন: ২০ বছর বয়সী ফারাজ আয়াজ হোসেন সিমিন হোসেন এবং মুহাম্মাদ ওয়াকার বিন হোসেনের ২ ছেলের মধ্যে ছোট। তিনি ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নাতি। ফারাজ ২০১৬ সালে অক্সফোর্ড কলেজ অফ ইমোরি’র গ্রাজুয়েট। গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। 

অবিন্তা কবির: অবিন্তা কবির আমেরিকার মায়ামিতে থাকতেন। তিনিও অক্সফোর্ড কলেজ অফ ইমোরিতে পড়ালেখা করতেন। ২০১৯ সালে তার গ্রাজুয়েশন করার কথা। ইফতার করার জন্য এবং বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য তিনি হলি আর্টিসান বেকারীতে গিয়েছিলেন।

ইশরাত আখন্দ: তিনি মার্কেটিং পেশার সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।

আমেরিকার স্ট্রেট ডিপার্টমেন্ট এক সংবাদ বিবৃতিতে জানিয়েছে, গুলশানের হামলায় একজন আমেরিকান নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৩ ঘণ্টা, ০৩ জুলাই ২০১৬
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews