চট্টগ্রাম: রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যেখানে সিটি সার্ভিস চালু থাকবে, সেখানেই শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া প্রযোজ্য হবে বলে ঘোষণা দেন পরিবহন নেতারা। কিন্তু এ ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চালক-হেলপারদের বাগবিতণ্ডার শঙ্কা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে গাড়িগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে চালক হেলপার মিলে ফেলে দিচ্ছেন যাত্রীদের। ভাড়া নিয়ে তর্ক হওয়ায় চলতি মাসেই ঘটেছে শিক্ষককে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই শিক্ষক। যদি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয় তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, চট্টগ্রাম মেট্রোতে আমাদের ৯টি সংগঠন রয়েছে। তারা স্ব স্ব এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার বিষয়টি মনিটরিং করবেন। যেকোনো অপ্রতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে বাসচালক আর হেলপারদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রমও করেছি। যাতে তারা কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ না করে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, যেখানে সিটি সার্ভিস চালু আছে সেখানে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। আমরা ছাত্রদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে হাফ ভাড়া কার্যকর করেছি।  তারাও আমাদের কার্যক্রমের প্রতি সম্মান দেখাবে। আমরা যে শর্তগুলো দিয়েছি সেগুলো যেন তারা মেনে চলে।  

শর্তগুলো হলো- হাফ ভাড়া কার্যকর হবে সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা, শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম ও ছবিযুক্ত আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হবে। সরকারি ছুটির দিন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মৌসুমি ছুটিতে হাফ ভাড়া কার্যকর হবে না।

চট্টগ্রাম পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ জাহান বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রেোপলিটনে আমাদের ৯টি সংগঠন রয়েছে। আমাদের নেতৃবৃন্দ স্ব স্ব এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করবেন। যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবেন।  

আগামী শনিবার (১১ ডিসেম্বর) থেকে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া কার্যকর হলে ট্রাফিক পুলিশ এবং বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেটদের কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সেখানেই তারা সুন্দর। তারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা বেমানান। তারা সবাই একযোগে মানববন্ধন করতে পারে। স্মারকলিপি দিতে পারে। কোনো একটি বাসের ক্ষতি হলে দেশের এবং মালিকের ক্ষতি হয়। এছাড়াও শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পাশাপাশি এসব বিষয়ে সচেতন করবেন।

তিনি বলেন, মালিকদেরও অনেক গ্রুপ তাদের সমস্ত বিভাজন ভুলে গিয়ে স্ব স্ব সংগঠন থেকে যাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোমল আচরণ করা হয় সেজন্য কঠোর নির্দেশনা দিতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো কঠোর হতে হবে। নগরে নির্দিষ্ট স্থানে বাস থামার জন্য কঠোর নির্দেশনা দিতে হবে। লাল সাদা রং দিয়ে বাস স্টপগুলো চিহ্নিত করে দিতে হবে। যত্রতত্র বাস থামলে জরিমানা আদায় করতে হবে। ওভারটেক করে যাত্রী নেওয়া যাবে না। ট্রাফিক বিভাগ থেকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করে দিতে হবে।

ট্রাফিক উত্তরের উপ পুলিশ কমিশনার মো. আলী হোসেন বাংলানিউজকে, শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার বিষয়টি যেহেতু মালিক সমিতি ঘোষণা দিয়েছে সেহেতু বিষয়টি তারাই দেখবে। তবে, প্রাথমিকভাবে আমরা দেখবো। যদি কোনো সমস্যা হয় ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২১
বিই/টিসি



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews