হাজি হৃদয়ের গহিন থেকে ডাকছে, ‘লাব্বাইক, আল্লাহুমা  লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা-শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিআমাতা লাকা ওয়াল মুলক লা-শারিকা লাক’ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির। আমি হাজির। আপনার কোনো শরিক নেই, আমি হাজির, নিশ্চয়ই সব প্রশংসা ও নিয়ামত আপনার। আর সব সাম্রাজ্যও। কোনো শরিক নেই আপনার।’ মক্কা তাওয়াফ ও মদিনায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজায় দাঁড়িয়ে সালাম দেওয়ার সুযোগ পাওয়া মুমিন জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্বপ্ন। মুমিনরা প্রতিদিনই মহান আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন পুণ্যভূমিতে যাওয়ার আশায়। কাবা ও মদিনার রওজার পানে একবার দৃষ্টি দিতে  পারলে মহান আল্লাহর মেহমান হাজিদের হৃদয় শীতল হয়ে যায় শান্তির পরশে। যে কারণে আমাদের সবার ইচ্ছা হয় পবিত্র হজ করে সওয়াব অর্জনের। তবে অনেকের সেই সামর্থ্য নেই। তাই সর্বপ্রথম দোয়া করি, হে আল্লাহ হজের পুণ্য অর্জনে আমাদের সবাইকে হজে যাওয়ার সুযোগ করে দিন।

অন্যদিকে হজে যাওয়ার সামর্থ্য নেই বলে মন খারাপ করারও কিছু নেই। কারণ হজ শুধু আর্থিকভাবে সামর্থ্যবানদের জন্য ফরজ ইবাদত। যাদের সে সামর্থ্য নেই, তারা নিজ এলাকায় বসে হজের সওয়াব পেতে পারেন কিছু আমলের মাধ্যমে। এজন্য চাই সর্বপ্রথম নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে প্রবেশ করা।

আবু দাউদ শরিফে উল্লেখ রয়েছে, যে ব্যক্তি তার ঘর থেকে পরিপূর্ণ পবিত্রতার সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের উদ্দেশে রওনা হলেন, তিনি ইহরামধারী হাজির সমান সওয়াব লাভ করবেন। আর যে ব্যক্তি চাশতের নামাজের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন, তিনি ওমরাহকারীর সমান সওয়াব লাভ করবেন।

ধনীদের সামর্থ্য থাকায় হজ করে সওয়াব পেয়ে গেলেন।  অথচ যাদের সামর্থ্য নেই, তারা সেই সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবেন এমনটি নয়। প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার তাসবিহ পাঠের কারণে হজের সওয়াব পাওয়া যেতে পারে। সাহাবাগণ আল্লাহর রসুল (সা.)-এর কাছে অনুযোগ করলেন, বিত্তশালীরা আমলে এগিয়ে যাচ্ছেন...।

তখন আল্লাহর রসুল (সা.) বললেন, ‘এমন নয় কি যে, আল্লাহ তোমাদের জন্য এশার জামাতকে হজের সমান এবং ফজরের জামাতকে ওমরার সমান করেছেন?’ রসুল (সা.) বললেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করল, অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত নামাজের স্থানে বসে আল্লাহর জিকিরে লিপ্ত থাকল, এরপর নামাজের ওয়াক্ত হলে দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, তার জন্য রয়েছে পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সওয়াব।’ তিরমিজি শরিফ।

হজের সওয়াব চেহারার দিকে তাকিয়েই পাওয়া সম্ভব। মা-বাবার চেহারার দিকে তাকালে হজের সওয়াব পাওয়া যাবে। এক ব্যক্তি রসুল (সা.)-এর কাছে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসুল (সা.) আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সামর্থ্য  নেই! রসুল (সা.) বললেন, ‘তোমার পিতা-মাতা কেউ কি জীবিত আছেন?’  উত্তরে বললেন, হ্যাঁ। তখন রসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি তাঁর প্রতি সদাচরণে মনোযোগী হও, তবে তুমি হজ আদায়কারী, ওমরা আদায়কারী এবং মুজাহিদের সমান সওয়াব লাভ করবে (ত্বাবরানী)।’

প্রিয় পাঠক, নিজের আয় থেকে কিছু অংশ হজে যাওয়ার নিয়ত করে জমা রাখুন।

তাহাজ্জুদ আদায় করে প্রতি নামাজের দোয়ায় হজে যাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করুন। হে আল্লাহ যারা হজে গিয়েছেন তাদের হজ কবুল করুন, আমাদের যাওয়ার সুযোগ প্রদান করুন। আমিন।



লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews