পাসপোর্ট অধিদফতরের ‘টাকার কুমির’ খ্যাত পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ বর্হিগমন বিভাগ-৪ শাখা থেকে তার সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন। প্রজ্ঞাপনের কপি বাংলা ট্রিবিউনের হাতে এসেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বতি কার্যালয় ঢাকা-১ এর ২০২২ সালের ২১ জুন দায়ের করা মামলায় চলতি বছরের গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট আদালতে গৃহীত হয়েছে। এ কারণে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৩৯ (২) এর বিধি মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

আব্দুল্লাহ আল মামুনের বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নুরুল আনোয়ারও।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‍দুর্নীতি করায় তার বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। অধিদফতরের যারাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবেন তাদের প্রত্যেককেই এ ধরনের শাস্তির আওতায় আসতে হবে।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, পাসপোর্টের ঢাকা বিভাগীয় অফিসের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন যেন অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আস্থাভাজন ও সাবেক আইজিপি বেনজীরের ঘনিষ্ট হওয়ার সুবাদে নিয়ম-নীতি, সিনিয়র-জুনিয়র এমনকি কার সঙ্গে কী ব্যবহার করতে হবে সব কিছুই তুচ্ছ ছিল তার কাছে। সরকারি এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এতটাই প্রতাপশালী যে মহাপরিচালকের সামনে তার কোনও আদেশ না মানার ঘোষণা দেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালককে দেন মামলা করার হুমকি। তার ভয়ে শুধু অফিস নয়, প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা পর্যন্ত অতিষ্ঠ থাকতেন। অথচ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকে মামলা চলমান। ইতোমধ্যে চার্জশিটও হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৫ ধরনের গুরুতর অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। অধিদফতর থেকে তাকে চাকরিচ্যুতির আবেদন করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনে আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে গত বছরের ২৭ জানুয়ারি অধিদফতরের ত্রৈমাসিক সভায় বক্তব্য রাখছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক। এ সময় তিনি সব রীতিনীতি ভঙ্গ করে নিজে মাইক নিয়ে উচ্চস্বরে হৈচৈ শুরু করেন। মাল্টিপল অ্যাকটিভ পাসপোর্টে গোয়েন্দা প্রতিবেদন আবশ্যকতার বিষয়ে মহাপরিচালকের নির্দেশনার সমালোচনা করে বক্তব্য দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে মামুন বলেন, ‘আমরা পরিচালকের কোনও আদেশ মানবো না, মন্ত্রণালয়ের আদেশ মানবো। তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অধিদফতর কারণ দর্শানোর নোটিশও জারি করে। কিন্তু তার বক্তব্যে অধিদফতর সন্তুষ্ট না হয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। বর্তমানে এ বিষয়ের ওপর তদন্ত চলমান রয়েছে।’

গত বছরের ২৯ জুলাই তাকে ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস থেকে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে বদলি করা হয়।

বেনজীর আহমেদকে অবৈধ পাসপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলারও আসামি তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুনের বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগোযোগের চেষ্টা করা হলে সাড়া দেননি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews