ছবির উৎস, Mehedi nur porosh
ছবির ক্যাপশান,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তের সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের নোয়াবাদী গ্রামে টহল দিচ্ছে বিজিবি, আজ শুক্রবারের ছবি
১৮ মিনিট আগে
গত কিছুদিন ধরেই ভারতে 'অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি' হিসেবে চিহ্নিতদের অনেককে সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে পুশ-ইন করা হচ্ছে। খাগড়াছড়ি, কুড়িগ্রাম, সিলেট ও মৌলভীবাজারের পর এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্ত দিয়ে পুশ-ইন করার চেষ্টা করে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ।
তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি ও স্থানীয়দের যৌথ প্রচেষ্টায় তা আর সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জব্বার আহমেদ।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "পুশ-ইন অ্যাটেম্পটের একটা পরিকল্পনা হয়তো ছিল। এটাকে প্রতিহত করা হয়েছে।"
সাড়ে সাতশোর বেশি লোককে পুশইন চেষ্টার তথ্য পেয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
"আর এই খবর পাওয়ার পরই বিজিবির টহল জোরদার করা হয় এবং টহলের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হয়," বলছিলেন তিনি।
নতুন করে বিজয়নগর সীমান্ত দিয়ে পুশ-ইন হতে পারে এমন খবর শোনার পর বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয়রাও রাতের বেলা টহল দিতে নেমে আসে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মামুন চৌধুরী বলেন, "গতরাতে আনুমানিক রাত দুইটার দিকে আমরা বিজিবির কাছ থেকে জানতে পারলাম ইন্ডিয়া থেকে কিছু মুসলমান এরা বাংলাদেশে নামাবে। ওনারা গোয়েন্দা সূত্র খবর পেয়েছে।"
সেই সূত্র ধরেই মাইকিং করে স্থানীয়দের নিয়ে সীমান্ত এলাকায় চলে আসার আহ্বান করা হয় বলে জানান তিনি।
পরে গ্রামে মাইকিং করে গ্রামের যুবকদের নিয়ে তারা সীমান্ত এলাকায় যান এবং দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা অবস্থান করেন।
এসময় বিএসএফের গাড়ি দেখেছেন বলেও জানান তিনি। তবে গাড়ির ভেতরে কী ছিল সে বিষয়ে ধারণা নেই বলেও জানান মি. চৌধুরী।
বিজিবি ও স্থানীয়দের ধারণা, অনেক মানুষের উপস্থিতি এবং জোরদার টহলের বিষয়টি বুঝতে পেরে বিএসএফ আর পুশইন চেষ্টা করেনি।
এদিকে যে কোনো ধরনের পুশইন চেষ্টা বন্ধ করতে এখনো টহলের পরিমাণ জোরদার আছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জব্বার আহমেদ।
"আমরা কোনো কিছু এখান থেকে পাস হতে দেবো না এবং কোনো প্রকার পুশইন হবে না," বলেন তিনি।
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
গত কিছুদিনে কয়েকবার 'অবৈধ বাংলাদেশিদের' পুশব্যাক করেছে বিএসএফ, প্রতীকী ছবি
এর আগে, ভারতের রাজস্থান থেকে 'অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশি' সন্দেহে আটক ১৪৮ জনকে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় স্থানান্তর করা হয় বলে জানতে পারে বিবিসি।
সেখানে আটক আরো ছয় শতাধিক 'চিহ্নিত বাংলাদেশি'কে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানায় সেখানকার কর্তৃপক্ষ।
পহেলগাম হামলার পর ভারতের নানা রাজ্যে 'অনুপ্রবেশকারী' খোঁজার অভিযান শুরু হয়েছিল।
এর অংশ হিসেবে 'অবৈধভাবে' ভারতে বসবাসকারী 'বাংলাদেশি' সন্দেহে অনেককে আটক করা হয়।
রাজস্থানে 'অবৈধ বাংলাদেশি' চিহ্নিত করার অভিযানে ভারতীয় বাংলাভাষী মুসলমানও আটক হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিবিসি এরকম একাধিক ভারতীয় বাংলাভাষী আটক হওয়ার খবর পেয়েছে।
ইতোমধ্যেই রাজস্থান পুলিশ যাদের 'বাংলাদেশি' বলে চিহ্নিত করতে পেরেছে, তাদের প্রথম দলটিকে বুধবার যোধপুরের বিমানবন্দর থেকে বিশেষ বিমানে চাপিয়ে ত্রিপুরার আগরতলায় পাঠানো হয়।
প্রথম দলে ১৪৮ জন চিহ্নিত 'বাংলাদেশি' আছেন বলে রাজস্থান থেকে বিবিসির সহযোগী সংবাদদাতা জানিয়েছেন।
আগরতলার বিমানবন্দর সূত্র নিশ্চিত করেছে, ওই বিশেষ বিমানটি বুধবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যা সাতটা নাগাত সেখানে পৌঁছায়।
ধারণা করা হচ্ছিলো, স্থানান্তর করা এই ব্যক্তিদের বাংলাদেশে পুশ-ব্যাক করা হতে পারে।
গত সপ্তাহে ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা, শান্তিপুর ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে মোট ৭২ জনকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করানো হয়েছে; অর্থাৎ তাদেরকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন বিবিসিকে জানিয়েছিল।
এর বাইরে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট এবং মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়েও সম্প্রতি পুশ-ইনের ঘটনা ঘটেছে।