সংবিধান ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কাজে সেনাবাহিনী তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। দেশের সার্বিক উন্নয়নে সব কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী বড় অবদান রেখে চলেছে। পবিত্র সংবিধান ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক যেকোনও হুমকি মোকাবিলায় সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে আর্মি ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ষষ্ঠ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে সকাল ১১টার দিকে তিনি কাদিরাবাদ সেনানিবাসে পৌঁছান।
দেশের অগ্রগতিতে সেনাবাহিনীকে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই না দেশে কোনও রকম সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকাসক্তি থাকুক। এগুলো সমাজকে নষ্ট করে। আমরা দেশের মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। দেশের গণতন্ত্রকে সাংবিধানিকভাবে অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আধুনিক, উন্নত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে সেনাবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের সুদৃঢ় পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আমার দুই ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ও শহীদ লে. শেখ জামাল মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। শেখ জামাল ১৯৭৫ সালে রয়াল মিলিটারি সেন্ট হার্স্ট থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের পর কমিশন শেষে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। আমি আপনাদের মাঝে আমার হারানো ভাইদের খুঁজে পাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এ কোরের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ও আত্মত্যাগের ইতিহাস।’

সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমরা সরকারে আছি। তাই দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি না, আমরা ডেভেলপিং কান্ট্রি। দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা ব্যাপকভাবে কাজ করছি। দেশের সব ছেলেমেয়ের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সার্বিক বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ চালু করেছি। এখন সারাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিস আছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সেই ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করে নিজেদের আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমরা দেশের সব মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দিয়েছি। আমরা থ্রিজি চালু করেছি, এখন ফোরজি চালু করছি।’

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। আমাদের লক্ষ্য এই হার ১৪ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনব। যেন বাংলাদেশকে কেউ দরিদ্র দেশ বলে অবহেলা করতে না পারে, করুণা করতে না পারে।’
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ নিজেদের অর্থায়নে, নিজেদের কাজ করে এগিয়ে যাবে। এরই মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ ভাগ নিজেদের অর্থায়নে ব্যয় করার সক্ষমতা অর্জন করেছি। প্রথমবার মাত্র ৬১ হাজার টাকার যে বাজেট পেয়েছিলাম, তা এখন ৪ লাখ কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে। এই উন্নয়নের ছোঁয়া গ্রামবাংলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন-
খালেদা জিয়ার জরিমানা স্থগিত, জামিন আবেদনে শুনানি রবিবার



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews