স্বাভাবিক বা নরমাল ডেলিভারি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা মা ও নবজাতকের সুস্থতার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। তবে বর্তমান সময়ে নানা কারণে অনেকেই সিজারিয়ান প্রসবের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। অথচ নিয়ম মেনে জীবনযাপন করলে অধিকাংশ মা-ই স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করতে সক্ষম হন।
এ বিষয়ে এক ভিডিও বার্তায় বিস্তারিত নির্দেশনা দিয়ে গাইনোকোলজী বিভাগের অধ্যাপক ডঃ জিন্নাত আরা নাসরিন বলেন, “সিজারিয়ান সেকশন যদি বিশেষ কারণে প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটি করা হবে। কিন্তু যাদের শারীরিক অবস্থা ভালো, বাচ্চার অবস্থান স্বাভাবিক—তাদের উচিত নরমাল ডেলিভারির প্রস্তুতি নেওয়া।”
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়াতে গর্ভবতী মায়ের যেসব বিষয় মেনে চলা প্রয়োজন:
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি স্বাভাবিক প্রসবের পথে বড় বাধা। তিনি জানান, “পুরো গর্ভাবস্থায় ৮ থেকে ১০ কেজির বেশি ওজন বাড়া একেবারেই অনুচিত। ভাত, চিনি ও মিষ্টি কমিয়ে প্রোটিন ও সবজি-ভিত্তিক খাবার খেতে হবে।”
প্রথম তিন মাস ব্যায়ামে সাবধানতা থাকলেও পরবর্তী সময় মায়ের হাঁটাচলা ও হালকা কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিত। চিকিৎসক বলেন, “শুধু ভারী কাজ বাদ দিয়ে রান্না, অফিসের হালকা কাজ ইত্যাদি চালিয়ে যেতে হবে।”
“প্রতিদিন কমপক্ষে আধা ঘণ্টা হাঁটা উচিত,” বলেন চিকিৎসক। হাঁটার সময়টুকু ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে—সকালে ১০ মিনিট, দুপুরে ১০ মিনিট, রাতে ১০ মিনিট।
জননেন্দ্রিয় অঞ্চলের পেশি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেগেলস এক্সারসাইজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রসবকালে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
হালকা ইয়োগা এবং প্রতিদিন ১৫ মিনিট মেডিটেশন প্রসবকালীন মানসিক দৃঢ়তা ও ইচ্ছাশক্তি বাড়ায়। চিকিৎসক বলেন, “মেডিটেশন আপনাকে আত্মবিশ্বাস দেবে—আপনি নরমাল ডেলিভারি পারবেন।”
গর্ভকালীন সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সব পরীক্ষা ও ওষুধ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
চিকিৎসক বার্তার শেষাংশে বলেন, “আপনার যদি কোনো দ্বিধা বা প্রশ্ন থাকে, তাহলে সরাসরি আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আমাদের চাওয়া—একটি সুস্থ মা, একটি সুস্থ শিশু এবং একটি নিরাপদ প্রসব।”