রুশ মিডিয়াকে ইরানি একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, যদি ইহুদিবাদীরা আবারো ইরানের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর আগ্রাসন চালায়, তেহরান জবরদস্ত শিক্ষা দেবে। ১২ দিনের আরোপিত যুদ্ধে ইহুদিবাদীদের দুর্বলতাগুলো ইরান জেনে গেছে এবং এই শিক্ষা থেকে ভবিষ্যতে আগ্রাসনকে ইহুদিবাদী গোষ্ঠীর জন্য ‘শেষ যুদ্ধে’ রূপান্তর করবে।
ইরানের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম হামশাহরি অনলাইন, আইএসএনএ-এর বরাত দিয়ে আরো জানিয়েছে, ইরানি সূত্র রুশ মিডিয়াকে বলেছে, ইরানের সাথে ইহুদিবাদী গোষ্ঠীর পরবর্তী সামরিক সংঘর্ষই হবে দখলকৃত ভূখণ্ডে ‘শেষ লড়াই’। এই যুদ্ধে ইসরাইল ধ্বংস হয়ে যাবে।
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সূত্রটি জানায়, তেহরান এখন তার প্রধান শত্রুর দুর্বলতা জেনে গেছে।
রাশিয়া টুডে নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, ইরানি কর্মকর্তারা এর আগে বলেছেন, তাদের কাছে অনেক উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র মজুত আছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করতে সক্ষম।
ইসরাইল ইরানের ওপর আগ্রাসী সামরিক হামলা চালায় ১৩ জুনের প্রথম প্রহরে। এই হামলায় পারমাণবিক স্থাপনাগুলো, সামরিক কেন্দ্র, এমনকি চিকিৎসা কেন্দ্র, এভিন কারাগার ও আবাসিক এলাকা লক্ষ্যবস্তু হয়। ফলে বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
পরবর্তীতে সরাসরি সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রও।
মার্কিনিরা ফোরদো, ইসফাহান ও নাতানজে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বাংকার-বিধ্বংসী বোমা নিক্ষেপ করে। স্থাপনাগুলো ব্যাপক ক্ষতির শিকার হলেও বাইরের পরিবেশে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বৃদ্ধি পায়নি।
তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পরোক্ষভাবে আলোচনার চলাকালীন এই আগ্রাসন চালানো হয়। তৃতীয় দেশের মাধ্যমে দু’পক্ষ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করা ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কূটনীতির সুযোগের কথা বললেও তিনি তেল আবিবের হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত ছিলেন এবং হামলাকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
ইরান এই আগ্রাসনের জবাবে ‘ওদেহ সাদেক ৩’ এবং ‘বিশরাত ফাতেহ’ নামে দু’টি সামরিক অভিযান চালায়। যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে আগ্রাসন বন্ধ হয়।
রাশিয়া টুডে আরো জানায় যে ইরানি কর্মকর্তারা আগেই বলেছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্রী ইরানের কাছে হাজার হাজার নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র আছে। নতুন সামরিক সংঘর্ষ শুরু হলে প্রতিদিন ইসরাইলকে লক্ষ্য করে অন্তত কয়েক শ’ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হবে।
অবহিত সূত্র জানায়, ইরানি কর্তৃপক্ষ দেশের ভেতরে এবং প্রবাসী ইরানিদের কাছ থেকে ‘অভূতপূর্ব জনসমর্থন’ পাচ্ছে।
তাদের বিশ্বাস, এই সমর্থন দিয়ে তারা ‘ইসরাইলি শাসনের হুমকি স্থায়ীভাবে নির্মূলের ঐতিহাসিক সুযোগ’ কাজে লাগাতে পারবে।
সূত্রটি আরো বলেছে, ইরানি শাসন পরিষ্কারভাবে জানে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারে। যদি আবারো যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সাথে যুদ্ধে জড়ায়, তেহরান ওয়াশিংটনের ‘চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়’ প্রস্তুত থাকবে।