ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির জন্য শনিবার থেকে মিসরের কায়রোতে আলোচনায় বসেছে হামাস ও ইসরাইল। মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গতকাল ছিল আলোচনার দ্বিতীয় দিন। গাজার বাসিন্দা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আলোচনা চলাকালীন বিমান ও ট্যাংক দিয়ে গাজায় গুলি চালিয়েছে ইসরাইল। এতে বহু হতাহত হয়েছে।

তবে আলোচনায় এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস বলেছে, যেকোনো চুক্তির মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে। মধ্যস্থতায় জড়িত একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, হামাস প্রতিনিধি দল একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কায়রোতে পৌঁছেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে এবং ইসরাইলি বাহিনীকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। তবে সেনা প্রত্যাহারের কোনো প্রতিশ্রুতি ইসরাইল এখনো দেয়নি।
চুক্তির মাধ্যমে হামাসের কাছে বন্দী প্রায় ১৩০ জিম্মিদের মধ্যে অন্তত কিছু বন্দীকে মুক্ত করার চুক্তি চায় ইসরাইল। তবে একজন ইসরাইলি কর্মকর্তা শনিবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাদের মূল লক্ষ্য অপরিবর্তিত ছিল। ইসরাইল কোনো অবস্থাতেই যুদ্ধ শেষ করার চুক্তিতে যাবে না। কারণ তাদের লক্ষ্য হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও নির্মূল করা। অন্য একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনা এখন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। কারণ দখলদাররা (ইসরাইল) যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়। তবে হামাস প্রতিনিধিদল এখনো কায়রোতে রয়েছে এই আশায় যে মধ্যস্থতাকারীরা ইসরাইলকে তার অবস্থান পরিবর্তন করতে চাপ দিতে পারে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরাইলের হামলায় ৩৪ হাজার ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ৭৭ হাজারের বেশি আহত হয়েছে। ইসরাইলি বোমার আঘাতে উপকূলীয় ছিটমহলের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়েছে এবং তীব্র মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইল-হামাস সংঘাতের শুরু থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করে আসছে কাতার। দেশটিতে হামাসের একটি রাজনৈতিক কার্যালয়ও রয়েছে। সেইসঙ্গে গাজার প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দাদের দুর্দশা দূর করতে মিসরও যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।

এদিকে, ইসরাইল নিয়ে ঢেঁকি গেলার মতো অবস্থায় পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফিলিস্তিনের মুক্তির দাবিতে পথে নামছেন আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। শাস্তির মুখে পড়েও পিছু হটছেন না তারা। ওই সমস্ত শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ব্যবস্থা তারা করে দেবে বলে বার্তা দিয়েছে হুথি। শিক্ষার্থী-বিক্ষোভ এবং ভিন্ দেশের যুদ্ধে প্রচুর খরচের প্রশ্নে ভোটের আগে সব মিলিয়ে বেশ বিপাকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট। এর মধ্যে ফিলিস্তিনপন্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, ‘বাইডেনের ভিয়েতনাম’ হয়ে উঠতে পারে ইসরাইল। ভারমন্টের সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষার্থীদের ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়েছেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বাইডেনের তুলনা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের সঙ্গে, যিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে শিক্ষার্থী-বিক্ষোভের জেরে ১৯৬৮ সালে পুনর্নিবাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এ বার ইসরাইল নিয়ে তার অবস্থানের জন্য যুব সম্প্রদায় ও ডেমোক্র্যাটদের বড় অংশের সমর্থন খুইয়ে বাইডেন হেরে যেতে পারেন আগামী নভেম্বর মাসের নির্বাচনে, বলছেন স্যান্ডার্স। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আল-জাজিরা।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews