বাংলাদেশে পিসি গেইমিংয়ের শুরুর দিকের গেইমারদের কাছে এইজ অব এম্পায়ারস শুধু গেইম নয়, এক অনুভূতির অন্য নাম! কত বিনিদ্র রাতই না তাদের কেটেছে কম্পিউটারের মনিটরের দিকে তাকিয়ে। ল্যান গেইমিংয়ে বন্ধু কিংবা নেটওয়ার্ক কেবলের অন্য পাশের অজানা প্রতিপক্ষের সঙ্গে সভ্যতার লড়াইয়ে মজে না থাকলে সিজিপিএটা কত বেশি থাকত, সেই গর্বও করেছেন অনেকে! এখন তো গেইমগুলোতে গ্রাফিকস আর অ্যাকশনের কারবারই বেশি। অথচ এইজ অব এম্পায়ারের মতো রিয়াল টাইম স্ট্র্যাটেজি গেইম খেলতে মগজটা যেভাবে খাটাতে হয়, সেটা কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর কাজের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

এইজ অব এম্পায়ারস ছিল মূলত সভ্যতার অগ্রযাত্রার এক ভার্চুয়াল অভিজ্ঞতা। প্রস্তর যুগের মানুষের সম্পদ সংগ্রহ, খাদ্য সংগ্রহ, সম্পদ বাড়িয়ে পাথর যুগ থেকে লৌহ যুগে পদার্পণ, খামার, কৃষি ও মাছ ধরার কলাকৌশল উদ্ভাবনের সঙ্গে অস্ত্রের আবিষ্কার এবং সম্পদ পাহারার জন্য সেনাবাহিনীর জন্ম, ধাপে ধাপে জ্ঞানের বিকাশ, সেই সঙ্গে বহিঃশত্রুর আক্রমণ ঠেকানোর জন্য যন্ত্রসভ্যতার অগ্রযাত্রা—সবই ছিল এই গেইমে।

বিশাল মানচিত্রে একেক জাতির একেক বৈশিষ্ট্য নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান। বেছে নিতে হবে ব্রিটন, গল, ভাইকিং, অ্যাজটেক—এ রকম অনেক সভ্যতা থেকে কোনো একটি। কেউ দক্ষ ঘোড়সওয়ার, কেউবা দক্ষ নাবিক। কারো দক্ষতা দুর্গ তৈরিতে, কারো রণকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধজাহাজ। কারো আবার জাদুবিদ্যার জোর বেশি। প্রথমে শিকার ও ঝোপঝাড় থেকে খাবার সংগ্রহ আর খনি থেকে পাথর সংগ্রহ করেই আদিম সভ্যতার পথচলা।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খনি থেকে সোনা সংগ্রহ, মাছ ধরার নৌকা ও কৃষি খামার থেকে শস্য সংগ্রহ, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি আবিষ্কারের মাধ্যমে ফলন বাড়ানো। সম্পদের লোভে আসবে অন্য সভ্যতার বর্গি দল। তাদের ঠেকাতে প্রথমে পদাতিক সৈনিক, পরে ঘোড়সওয়ার তৈরি। কিংবা সম্পদের ঘাটতি মেটাতে ঝাঁপিয়ে পড়া অন্য রাজ্যে। আক্রমণের জন্য চাই তীরন্দাজ আর আহতদের সারাতে বদ্যি। পাশের রাজ্যের সঙ্গে শত্রুতা নাকি মিত্রতা? আছে বাজার, যেখানে বিনিময় করা যায় কাঠ, পাথর ও সোনা।

মানচিত্রের নানা জায়গায় ছড়ানো আছে রেলিক।

যে জাতি চারটা রেলিক একত্র করে ফেলতে পারবে, ২০ বছর সেগুলো তাদের কাছে থাকলে তারাই হবে অজেয়। আছে ওয়ান্ডার বা আশ্চর্য স্থাপনা নির্মাণ। একবার ওয়ান্ডার তৈরি করলে বিজয় নিশ্চিত। এমন কত কিছু! এ যেন বাস্তব পৃথিবীরই ভার্চুয়াল রূপ। 

একসময়ের খুবই জনপ্রিয় এই গেইমের পথচলা শুরু ১৯৯৭ সালে। এনসেম্বল স্টুডিওর বানানো গেইমটির পরিবেশক প্রথম থেকেই ছিল মাইক্রোসফট।

এই সিরিজের গেইম বিশ্বজুড়ে বিক্রি হয়েছে দুই কোটিরও বেশি কপি। তবে মিলেনিয়ামের মাঝের সময়টায় যে রমরমা ছিল এইজ অব এম্পায়ারস সিরিজের গেইমগুলোর, হালে সেই উন্মাদনা আর নেই। নতুন করে এই ঝিমিয়ে পড়া গেইমকে আরেকটু চাঙ্গা করে তুলতেই গত বছরের ইলেকট্রনিক এন্টারটেইনমেন্ট এক্সপোতে এইজ অব এম্পায়ারসের নতুন সংস্করণ ‘ডিফাইনিটিভ এডিশন’-এর আগমনী বার্তা জানিয়েছিলেন মাইক্রোসফট স্টুডিওর ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর অ্যাডাম ইসগ্রিন। ফোরকে রেজল্যুশন, রিমাস্টারড সাউন্ডট্র্যাকসহ গেইম প্লেতে অনেক উন্নতির ছোঁয়া এনে গেইমপ্লে দেখানো হয় ইথ্রিতে। লৌহ যুগে মিসরীয় সভ্যতার অংশবিশেষ দেখানো হয় গেইম প্লেতে। যাতে দেখা গেছে বেড়েছে অনস্ক্রিন ক্যারেক্টার রিকগনিশন ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। গেইমপ্লে সেই আগের মতোই। মাউসের ক্লিকেই চলবে সভ্যতার চাকা ঘোরানো!

এইজ অব এম্পায়ারের নতুন সংস্করণ পিসিতে খেলা ছাড়া মাইক্রোসফটের অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেইমিং প্ল্যাটফর্ম এক্সবক্স লাইভেও।

প্রচলিতভাবে ডিভিডি বা ব্লু-রে ডিস্কে নয়, শুরুতে উইন্ডোজ স্টোরে বিক্রি হবে এইজ অব এম্পায়ারস: ডিফাইনিটিভ এডিশন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews