৪ মিনিট আগে
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
মাদকাসক্তি একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
মাদকাসক্তি নিরাময়ে কোন যাদুর বটিকা নেই। মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে কয়েকটা দিন পুনর্বাসন কেন্দ্রে রেখে দিলে অথবা নামকরা কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গেলেই রাতারাতি সে নিরাময় হয়ে যায় না।
অসীম ধৈর্য নিয়ে দিনের পর দিন প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। এই কথাটি বুঝতে পেরেছেন এমন এক বাবার সাথে কথা হচ্ছিল। তিনি বলছিলেন কিভাবে তার পরিবারে দুর্যোগ নেমে এল, স্বপ্নভঙ্গ হল।
"একজন বাবা, একজন মা এবং তার পরিবারের সদস্যরা, তাদের পরিবার নিয়ে স্বপ্ন থাকে। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা থাকে। সেখানে যদি দেখা যায় যে এরকম পরিস্থিতি, তখন স্বাভাবিকভাবেই তখন স্বপ্নভঙ্গের সম্ভাবনা থাকে। স্বপ্নভঙ্গ কথাটার মধ্যে অনেক মিনিং এসে যায় যে আমার সন্তানকে আমরা কিভাবে কল্পনা করি, কিভাবে দেখতে চাই, আমাদের উত্তরাধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেমন থাকবে না থাকবে সেখানে স্বপ্নভঙ্গের পরিস্থিতি দেখা যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই সকল বাবা মাই একটা দুর্যোগের সম্মুখীন হয়ে যায়। "
যে দুর্যোগের কথা তিনি বলছিলেন সেটি হল সদ্য কৈশোর পার হওয়া ছেলের মাদকাসক্ত হয়ে ওঠা।
তিনি বলছিলেন, "আমরা কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করলাম যে ও বাসায় দেরিতে আসছে এবং আসার পরে কথাবার্তায় এক ধরনের অসংলগ্ন ভাব। তার ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন এটাও দেখে আমাদের মধ্যে চিন্তার উদ্রেক হল যে ও বোধ হয় কিছুর সাথে সংযুক্ত হচ্ছে। এটা পরখ করার জন্য আমরা দেখলাম যে হ্যাঁ ঠিকই, তখন তাকে আমরা নিষেধ করেছি। কিন্তু তারপরও সে গেছে। তখন আমরা ডাক্তারের পরামর্শ নেবার চেষ্টা করলাম। নিজের সন্তানকে কেউই রিহ্যাবে দিতে চায় না....."
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
আচরণে কিছু পরিবর্তন অন্যতম লক্ষণ।
কথাগুলো বলতে গিয়ে তার গলা এক পর্যায়ে বুজে আসছিল। ছেলেকে সারিয়ে তোলার জন্য তার চেষ্টা কয়েক বছর ধরে চলছে।
কিভাবে বোঝা যাবে
কিভাবে বোঝা যাবে পরিবারের একজন সদস্য মাদকাসক্ত কিনা? মূল লক্ষণগুলো কি? সে সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অধীনে কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের রেসিডেন্ট সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. মোঃ রাহেনুল ইসলাম :
-আচরণে কিছু পরিবর্তন।
-হঠাৎ পুরনো বন্ধু বাদ নিয়ে নতুন বন্ধুদের সাথে মেলামেশা বেড়ে যাওয়া।
-খাওয়া দাওয়ায় পরিবর্তন ও চেহারায় ছাপ।
-অসংলগ্ন আচরণ কথাবার্তা বলা। মেজাজ খারাপ থাকা। ঘুম থেকে উঠে মেজাজ খারাপ করা।
-যদি দিনে ঘুমায় রাতে জেগে থাকে। অথবা বেশি ঘুমাতে থাকে।
-বেশি সময় বাথরুমে থাকা বা ঘরের দরজা অনেকক্ষণ বন্ধ করে রাখা।
-মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মিথ্যা বলা বেড়ে যায়। অনেক সময় তাদের চুরির অভ্যাস তৈরি হওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়।
-বিভিন্ন অজুহাতে ঘনঘন টাকা চাওয়া।
ডা.ইসলাম বলেন, এসব নজরে পড়লে সতর্ক হতে হবে।
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
পরিবারগুলো প্রায়শই বিষয়টি লুকোতে চায়।
বাংলাদেশে বেশিরভাগ সময় পরিবারগুলোর শুরুতেই বাস্তবতা অবিশ্বাস করে যে তার পরিবারে একজন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। তারা বিষয়টি লুকোতে চায়, বলছিলেন ডা. মোঃ রাহেনুল ইসলাম।
"প্রথমত তারা খুবই অবিশ্বাস করেন যে এটা আমার ফ্যামিলিতে হতেই পারে না। সেখান থেকে বের হয়ে আসেন যখন তারা দেখেন যে পরিস্থিতি একেবারেই আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে। তখন তারা চেষ্টা করেন গোপন করতে। যেহেতু আমাদের সমাজে মানুষজন এটাকে রোগ হিসেবে দেখতে চান না।"
"দেখা যায় যে ১৮'র উপরে বা সেরকম বয়স হলে বিয়ে দিতে চান, বিদেশ পাঠিয়ে দিতে চান, কোন একটা ব্যবসায় যুক্ত করে দিতে চান, বাড়ি বদল করেন, কিংবা তার সমস্ত ইচ্ছা পূরণ করতে থাকেন। তারা তাদের মতো করে বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। মোটা দাগে পরিবারগুলো আসলে শুভাকাঙ্খী কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাদের আচরণ মাদক ব্যবহার আরও বাড়ায়। তারা আসলে মাদক ব্যবহারকে পুরস্কৃত করেন।"
ডা. রাহেনুল ইসলাম তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় পরিবারের প্রথম প্রতিক্রিয়া বেশিরভাগ সময় এমনটাই দেখেছেন।
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
মাদকাসক্তি খুব জটিল একটি বিষয়।
আর কারণ হিসাবে তিনি বলছেন মাদকদ্রব্যের সাথে জড়িয়ে পড়া ব্যক্তিকে কি পদ্ধতিতে ওই পথ থেকে ফেরাতে হয়, মাদকাসক্তি আসলে কতটা জটিল সে বিষয়টি বেশিরভাগই পরিবারের অজানা।
বিষয়টি পুরোপুরি বুঝে ওঠার আগেই হয়ত ততদিনে মাদকাসক্ত ব্যক্তি আরও বেশি করে জড়িয়ে পরেন অন্ধকার জগতটির সাথে।
কিন্তু বাংলাদেশে পরিবারগুলো মাদকাসক্তির বাস্তবতা কেন লুকাতে চান? এই বিষয়ে প্রচারণার সাথে যুক্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলছেন, "এটার সাথে একটা পরিবারের অসম্মান যুক্ত রয়েছে। যদি পরিবারের সদস্য কেউ মাদকাসক্ত সেটা অন্যরা জেনে ফেলে তাহলে সেটি অসম্মানের। প্রথমতে তাই তারা লুকাতে চায়। দুই ধরনের প্রেশার কাজ করে। দেখা যায় আত্মীয় স্বজন যারা আছে তারাও বলে হায়হায় এই ছেলেটাতো ভাল স্টুডেন্ট ছিল, এখন সে মাদকাসক্ত হয়ে গেছে। নিশ্চয়ই বাবা মায়ের কোন দোষ রয়েছে। এরকম নানা ক্রিটিসিজম পরিবারের সদস্যারও যেমন করে তেমনি নিকট আত্মীয়, প্রতিবেশী তারাও করে থাকে। এসব কারণে পরিবারের মনে ভীতি সঞ্চার হয়।"
ছবির ক্যাপশান,
চিকিৎসায় বেশিরভাগ সময় অভিভাবকরা অনেক দেরি করে ফেলেন।
কথা হচ্ছিল মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের নার্সিং সুপারভাইজার নাসরিন নাহারের সাথে। তার অন্যতম একটি দায়িত্ব হল মাদকাসক্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের সাথে কাজ করা।
তিনি বলছেন, বাংলাদেশে মাদকাসক্ত একজন ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য কোথাও নিয়ে যেতে বেশিরভাগ সময় অভিভাবকরা অনেক দেরি করে ফেলেন।
তার ভাষায়, "এরা এত ভায়োলেন্ট হয়ে যায় যে গার্জিয়ানরা আসলে এদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। হয়ত তারা লাস্ট মোমেন্টে অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু তার আর যখন কন্ট্রোল করতে না পারে তখন আমাদের কাছে নিয়ে আসে। গার্জিয়ানরা যখন রেখে যায় তখন তারা মনে করে যে ছেলেটাকে দিয়ে যাচ্ছি, ছেলেটা পুরো ম্যাজিকের মতো ভাল হয়ে বাসায় ফিরবে। অনেক অভিভাবকই এমন ভাবেন। কিন্তু আসলে তা হয় না। এটা দীর্ঘ ব্যাপার। আমরা তাদেরকে বুঝাই যে আপনারা এটা মনে করেন না যে এখানে ২৮ দিন থাকলো আর সে ভাল হয়ে গেল। আপনাদের কন্টিনিউয়াসলি ওর পেছনে লেগে থাকতে হবে।"
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
মাদকাসক্তির চিকিৎসায় অনেক ধৈর্য প্রয়োজন হয়।
মাদকাসক্তিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি মানসিক রোগের সাথে সম্পর্কিত হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং এর দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন বলে সুপারিশ করেছে। কেননা মাদকাসক্ত ব্যক্তি মাদকের কাছে ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
মাদক গ্রহণের পর রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে তার মস্তিষ্ক সেভাবে তৈরি হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকান অ্যাডিকশন সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে চিকিৎসার পর ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে মাদকাসক্ত ব্যক্তি এক বছরের মধ্যে আবারও মাদকদ্রব্য ব্যাবহার শুরু করেন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের এক সমীক্ষা বলছে বাংলাদেশে মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৫ লাখের মতো। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ৮০ লাখের মতো৷
এই ব্যক্তিদের সাথে জড়িয়ে আছে তাদের পরিবারের আরও লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন। মাদকদ্রব্য সেবনে এই প্রতিটি ব্যক্তি নিজেরা যেমন ধ্বংস হচ্ছেন, একই সাথে তারা বিপর্যস্ত করে তুলছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবন।
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
মাদকাসক্ত ব্যক্তি বিপর্যস্ত করে তোলেন পরিবারের সদস্যদের জীবন।
রফিকুল ইসলাম যে ভীতির কথা উল্লেখ করেছেন, সে কারণে সিদ্ধান্ত নিতে পরিবারগুলোর যে দেরি হয়, তাতে প্রায়শই দেখা যায় হয়ত মাদকাসক্ত ব্যক্তির মাদকের জগতে আরও বেশি ডুবে যেতে থাকেন।
অনেক সময় অনেকেই জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত হন, রীতিমতো সহিংস হয়ে ওঠেন। তারা নিজেরাই নিজেদের জন্য এবং পরিবারের জন্য ঝুঁকি হয়ে ওঠেন।
যেকোনো মূল্যেই হোক মাদকের যোগান নিশ্চিত রাখতে অনেকেই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা তখন আরও জটিল হয়ে ওঠে, বলছিলেন ডা. রাহেনুল ইসলাম।
ততদিনে পরিবারের সদস্যরা তাদের সামাল দিতে গিয়ে বারবার চেষ্টার পর নিজেরাই মানসিক চাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন, আশাহীন হয়ে পড়েন, বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষক উম্মে কাওসার।
"যখন কেউ বছরের পর বছর ধরে এরকম একজনকে ডিল করছেন, তখন তাদের জন্যেও এটা একটা ট্রমা, মানসিক চাপ তৈরি করে। কিভাবে চাপ মোকাবেলা করতে হয় সেটা যখন তারা বুঝতে পারেন না তখন তাদের মধ্যেও নানা ধরনের মানসিক সমস্যা তৈরি হতে পারে।"
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
অনেক পরিবার হাল ছেড়ে দেয়।
"এই চাপ যখন আমরা বের করে দিতে না পারি তখন সেটা আমার মধ্যে জড়ো হতে থাকবে। একটা সময় গিয়ে সেটা কিন্তু আমি আর নিতে পারবো না। যখন দেখা যায় এটা অনেক বছর ধরে হয়েই যাচ্ছে এবং তার কোন উপায় নেই তখন সেই ব্যক্তি একেবারে আশাহীন হয়ে পড়েন, আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং উনি মনে করতে শুরু করেন যে আমি মনে হয় আর পারবো না।"
এরকমই আশাহীন হয়ে প্রায় হাল ছেড়ে দেয়া, মাদকাসক্ত এক ছেলের মা বলছিলেন ছোটবেলা থেকে মানসিক রোগে আক্রান্ত ছেলেটি পরের দিকে মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে। কয়েক মাস আগের এক ঘটনার কথা বলছিলেন তিনি।
ছেলেকে তার ঘরে ঘুমাতে দেখে বাসা থেকে বের হয়েছেন। বাড়ি ফিরে জানলেন ঘুম ভাঙানোর কারণে সেদিন গৃহকর্মীকে বেধড়ক মারধোর করেছে ছেলেটি।
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য হিসেবে গাঁজার ব্যাবহার ব্যাপক।
নিজের নাম, পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলছিলেন, "ও দেখা যেত লাঠি ঠ্যাঙ্গা নিয়ে রীতিমতো মানুষজনকে পিটাপিটি করছে। দেখা গেল তার ধাক্কায় আমি পড়ে গেলাম। দরজাটা ভীষণ জোরে মুখের উপর বন্ধ কর দিল। কাউকে মারধোর করলো। সেদিন আমারই মতো বয়স, আমাদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে যে কাজের মহিলা তার গায়ে হাত তুলেছে কারণ সে তাকে ঘুম থেকে কেন তুলল!"
"কাজের মহিলা যখন বুঝিয়ে বলতে চেয়েছে যে সে কেন তাকে ঘুম থেকে ওঠাল, তখন মোবাইলটা আছাড় মেরে ভেঙে ফেলেছে, তাকে চড়াইছে। আমার ছেলের কথা হচ্ছে কেন সে তাকে বোঝাতে গেল। সে সহজে মানতে চায় না যে ভুল করেছে ... ঘরে এতটাই অশান্তি যে সেটাকে ট্যাকল করার জন্য আল্লার হাতে ছেড়ে দিয়েছি। আল্লাহ যা করে করবে।"
সমাজের সব পর্যায়ে এখন মাদক ঢুকে গেছে। কিন্তু দেশের ৩৫ লাখ মাদকাসক্ত ব্যক্তির জন্য চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে চারশো'র মতো।
সামর্থ্যবান যারা রয়েছেন তারা অনেক অর্থ খরচ করে বেসরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্রে সন্তানের চিকিৎসায় ব্যবস্থা নিচ্ছেন, কিন্তু তবুও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে যারা দরিদ্র রয়েছেন তারা আরও নিঃস্ব হচ্ছেন, বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
বাংলাদেশে পরিবারের সদস্যদের কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
উম্মে কাওসার বলছেন মাদকাসক্তির ক্ষেত্রে যেহেতু পরিবারে বেড়ে ওঠা, বাবা মায়ের সম্পর্ক এরকম নানা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ভূমিকা রাখে তাই মাদকাসক্তির চিকিৎসায় পরিবারকে যুক্ত করা খুবই জরুরী। একই সাথে তাদের নিজেদেরও মানসিক সহায়তা দরকার হয়ে পড়ে।
তিনি বলছেন, "একটি মাদকাসক্ত পরিবারের সদস্যদেরও কাউন্সেলিং দরকার। অনেক সময় ব্যাপারটা হয়ে তাদের নিজেদের ব্যর্থতার একটা বিষয়। তারা মনে করতে থাকেন যে তারা ব্যর্থ। তারা একা বোধ করেন। চরম হতাশায় ডুবে যান।"
কিন্তু বাংলাদেশে মাদকাসক্তির চিকিৎসাই যেখানে অপ্রতুল সেখানে পরিবারের সদস্যদের কাউন্সেলিং-এর ধারনাটিই নেই বললেই চলে। তাই তাদের সহায়তায় তেমন কোন ব্যবস্থাই গড়ে ওঠেনি।
সব মিলিয়ে মাদকদ্রব্য সেবনে একজন ব্যক্তি নিজে যেমন ধ্বংস হচ্ছেন, একই সাথে তারা অসহায় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন পরিবারের সদস্যদের জীবন।