স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ





১০:৪৪ পিএম, ১২ জুলাই ২০২০ রবিবার











নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, মৃত্যু কখনও বলে আসে না। আর মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা সকল মানুষের দায়িত্ব। আজকে আমরা যাদের স্মরণে দোয়া মাহফিল করছি আগামীকাল এখানে আমার ছবিও আসতে পারে। আমরা এমন অবস্থার মধ্যে কে কখন চলে বলা যায় না। এজন্য সবাইকে অনুরাধ করবো বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য। এই দুঃসময় কে কখন চলে যাবে জানি না। এই জন্য একটাই কাজ একে অপরের জন্য দোয়া করা। দল মত নির্বিশেষে সবকিছুর উর্ধ্বে থেকে মানুষের জন্য দোয়া করা।

করোনাকালে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

১২ জুলাই রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় বিভিন্ন এলাকার অসহায় মানুষের মাঝে শাড়ি ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়।

সিদ্ধিরগঞ্জের একজন নারীর দোয়া চাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে শামীম ওসমান বলেন, ‘‘সিদ্ধিরগঞ্জের এক ভদ্র মহিলা ফোন করে বলল তার স্বামী এনজিওতে কাজ করে। আমাকে বললেন আমি নি¤œবিত্ত। আপনি যদি আমাকে সাহায্যও করেন আমি নিতে পারবো না। আমি বললাম তাহলে ফোন করেছেন কেন। বললেন ফোন করেছি কারও কাছে তো কষ্টের কথা শেয়ার করতে হবে। আমি বললাম বলেন, স্কুলে ক্লাস হচ্ছে না কিন্তু বেতন তো দিতে হচ্ছে। আমরা এভাবে কতদিন পারবো কিন্তু হাজব্যান্ড তো পারছেন না। আমি আপনার জন্য কি করতে পারি। আপনি আমাদের জন্য দোয়া করেন।’’

সামনে অর্থনীতিতে মহামন্দা আসছে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, সামনের সময়টা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন সময় আসছে। সারাবিশ^ অর্থনীতিতে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় মহামন্দা আসছে। এই মহামন্দা আমাদের মোকাবেলা করতে পারে। সেখানে আমরা থাকতেও পারি নাও থাকতে পারি। আমাদের এই জিনিসটা খেয়াল রাখতে হবে।

সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মিডিয়ার বদৌলতে আজকে নারায়ণগঞ্জবাসীর সমস্যার সমাধান হয়েছে। আমি একদম আল্লাহকে স্বাক্ষী রেখে বলছি করোনার সময়ে প্রত্যেকটা কাজেই হয়তো আমরা করেছি কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন মিডিয়ার ভাইয়েরা। তাদের রিপোর্টের উপর নির্ভর করেই আমাদের সমস্যা সমাধান হয়েছে। এজন্য মিডিয়ার ভাইয়ের জন্য অন্তর থেকে একদম মনের গভীর থেকে দোয়া করছি।

মৃত ব্যক্তিদের জন্য দেয়া চেয়ে শামীম ওসমান বলেন, তাদের জন্য কিছু করার নেই। তাদের জন্য একটাই করার আছে সেটা হলো দোয়া করা। সবাই কিন্তু করোনায় মারা যাচ্ছে না। তারপরেও এখনকার মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মৃত্যু মনে হওয়ার কারণ মৃত্যু হচ্ছে কিন্তু আমরা দেখতে পারছি। মায়ের লাশ ছেলে দেখতে পারছে না ছেলের লাশ মা দেখতে পারছে না। আমরা বুঝতে পারছি না এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব না পরীক্ষা। অনেকেই বলেন সাইন্স। কিন্ত আমি বিশ^াস করি সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ছাড়া কিছু হয় না। এটা বিশ^াস করার জন্য বেশিদূর যেতে হবে না। লঞ্চডুবির ১৩ ঘন্টা পর একজনকে জীবীত উদ্ধার করা হয়েছে।

হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করে তিনি বলেন, এখন আমাদের কাজ হচ্ছে একটাই সবাই সবার জন্য কিছু করতে চাই। আমি আপনাদের সবার কাছে দোয়া চাই। আমরা যাতে জীবনের শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত ওইভাবে কাজ করতে চাই যাতে আল্লাহকে খুশি করে এই দুনিয়া ছাড়তে পারি। আমরা রাজনীতি করি। আমার একটাই অনুরোধ অনেক সময় অনেক কথা বলেছি। এই কথা বলতে গিয়ে অনেকেই কষ্ট পেয়ে থাকতে পারেন। আমি হাতজোড় করে সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। মৃত্যুর পর মাফ চাওয়ার সুযোগ থাকে না। আমি যদি মারা যায় তাহলে এভাবে আপনাদের সামনে কেউ বলবে না মাফ করে দেন। আমি আমার পক্ষ থেকে মাফ চেয়ে নিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রীর জন্য চেয়ে শামীম ওসমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলার করা জন্য একজন মানুষের বেঁচে থাকা খুব দরকার। আর তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার জন্য সবাই দোয়া করবেন। বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনাকে বেঁেচ থাকা দরকার শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের জন্য না।

‘‘দুর্যোগের মধ্যেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। এই দুঃসময়ের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ বুঝতে পেরেছে দুনিয়ায় আমার সময় খুবই অল্প এবং আমার কোনো ক্ষমতা নাই। এটাও ঠিক এই দুঃসময়ের মধ্যে কিছু মানুষ চুরি করে। কিছু মানুষ করোনা সার্টিফিকেট নকল করে পয়সা কামায়। এই সমস্ত মানুষের কারণেই আল্লাহ গজব দিয়ে থাকেন।’’ যোগ করেন শামীম ওসমান।

তিনি বলেন, ‘৯০ পার্সেন্ট মানুষ সামাজিক দূরত্ব মানে না মাস্ক পড়ছেন না। আমরা শুধুমাত্র আল্লাহর রহমতে বেঁচে আছি। নাহলে ইউরোপ আমেরিকার মতো রাস্তায় রাস্তায় মানুষের লাশ পড়ে থাকতো। যারা ইয়াং জেনারেশন আছেন আপনারা সবাইকে সচেতন করবেন। নিজেরা অযথা ঘুরাঘুরি করে পরিবারের বয়স্ক মানুষদের বিপদে ফেলবে না। সামনে আরও ক্রাইসিস বাড়বে। কুরবানী ঈদ আসছে সামনে। কিভাবে কি হবে আমি বুঝতেছি না। এই অবস্থায় আমরা যদি একটু সচেতন থাকি তাহলে আল্লাহর রহমতে সুস্থ থাকবো।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক, সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান মতি, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূইয়া সাজনু, যুবলীগ নেতা এহসানুল হক নিপু ও জানে আলম বিপ্লব সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews