সর্বশেষ ২০০৬ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। ১০ বছর পর মাশরাফির হাত ধরে আবারও আইসিসির মর্যাদাপূর্ণ এই টুর্নামেন্টে খেলবে লাল-সবুজরা। স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ১ জুন পর্দা উঠবে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির।

আর এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের অবস্থান ডেথ গ্রুপে। স্বাগতিক ইংল্যান্ড ছাড়াও এই গ্রুপে আছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। আগামী কয়েকটা সপ্তাহ কঠিন পরিস্থিতি সামলাতে হবে মাশরাফিদের। তবে কিউইদের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ম্যাচ জিতে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির কণ্ঠ আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে।

তাইতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের এগিয়ে রাখলেন মাশরাফি। আজকের জয়ের আত্মবিশ্বাস চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কাজে দেবে বলে মনে করেন তিনি, ‘অবশ্যই এগিয়ে থাকবো আমরা। তবে এখনকার চেয়ে ওদের বোলিং আক্রমণটা আরও ধারালো হবে। টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ফেরার পর স্বাভাবিকভাবেই ওদের বোলিংয়ে আরও শক্তি বাড়বে। এছাড়া উইলিয়াসন, গ্যাপটিল দলে যোগ দিলে ভারসাম্য বাড়বে। তারপরও জয় সব সময়ই প্রেরণা দেয়।’

তিনি আরও যোগ করে বলেছেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে আমাদের ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি অনুশীলন ম্যাচ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় দুটি ম্যাচ আছে। জায়গাটা অনেক কঠিন। তারপরও একটা একটা করে জয় পেলে দলের আত্মবিশ্বাস উপরে উঠতে থাকবে। এক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে থাকতে পারবো বলেই মনে হয়। আমরা আয়ারল্যান্ড থেকে ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে ইংল্যান্ডে যাচ্ছি। আশা করছি এই আত্মবিশ্বাসটা কাজে লাগাতে পারব।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী এমন প্রশ্নে মাশরাফির উত্তর, ‘আমরা যে গ্রুপে খেলছি অলমোস্ট ডেথ গ্রুপ। তাই বলা খুবই কঠিন। বিশ্বের সেরা তিনটি দলের বিপক্ষে আমাদের খেলতে হবে। কিছু বলা যায় না। ভালো দিন হলে আমরা জিততে পারি। আমরা সেটাই চেষ্টা করবো। আমরা যেন শুরুটা নিজেদের করে নিতে পারি, সেই চেষ্টাই করব। সুযোগ আসলে সেটা যেন কাজে লাগাতে পারি।’

ম্যাচ শুরুর পর থেকেই কিউই ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হতে থাকে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নাসির টম ল্যাথাম ও নিল ব্রুমের উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরান বাংলাদেশকে। তাই মাশরাফি নিজেদের এই বোলিং নিয়ে বলেছেন, ‘শুরুতে যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে হয়নি। কিছু ক্যাচ ড্রপ হয়েছে। মাঝখানে দুটি উইকেট পরে যাওয়ার পর আমাদের ওপর থেকে কিছুটা চাপ কমে যায়। অনেকদিন পরে ফিরে নাসিরও খুব ভালো বোলিং করেছে। মুস্তাফিজ সব সময়ই ভালো করছে। রুবেল অসাধারণ বোলিং করেছে। আমরা মাঝামাঝি থেকে খুব ভালো বোলিং করা শুরু করি। ওখানে ৫০-৬০টা রান আমরা কমাতে পেরেছি।’

অভিজ্ঞতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রমাণ করেছেন মুশফিক-রিয়াদ জুটি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই জুটি ষষ্ঠ উইকেটে তোলে ৭২ রান। আর তাতেই ১০ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় পায় লাল-সবুজরা। তাই মুশফিক ও রিয়াদের ব্যাটিংকে অবিশ্বাস্য বলে আখ্যা দিলেন মাশরাফি, ‘দ্রুত উইকেট পড়ে গেলে সব সময়ই চাপ তৈরি হয়। সাব্বির-তামিম যেভাবে ব্যাটিং করেছে; সত্যিকার ভাবে আমরা এমন ব্যাটিংই আশা করি। এরপর আমাদের তিনটি উইকেট পড়ে যাওয়াতে আবারো চাপে পড়ে যাই। সেখান থেকে মুশফিক এবং রিয়াদ যেভাবে ব্যাটিং করেছেন। সেটা ছিল সত্যিই অবিশ্বাস্য। এই পরিস্থিতিতে এর আগেও আমরা এমন কয়েকটা ম্যাচ হেরেছি। ওই শঙ্কাটা আজও ছিল। তবে মুশফিক ও রিয়াদ প্রমাণ করেছেন অভিজ্ঞতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতির জন্যই বিসিবি ত্রিদেশীয় সিরিজের আয়োজন করেছিল। বাংলাদেশের চার ম্যাচের মধ্যে একটিমাত্র ম্যাচ হেরেছে। সবমিলিয়ে কেমন কাটলো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এমন প্রশ্নে মাশরাফির উত্তর, ‘আমি তৃপ্ত। হয়তো নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভালো সুযোগ ছিল। হয়তো সুযোগটা নষ্ট করেছি। তারপরও আমরা যা করতে চেয়েছিলাম, কাছাকাছি করতে পেরেছি। এখন ইংল্যান্ডে গিয়ে আমাদের সেরা চেষ্টা করতে হবে।’

প্রথমবারের মতো আইসিসির র‌্যাংকিংয়ের সেরা ছয়ে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশে। এমন সাফল্যের পর দলের অধিনায়ক মাশরাফি বলেছেন, ‘আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল এটা। আমরা জানতাম যে ম্যাচটা জিততে পারলে ৬ নম্বরে উঠে যাবো। আরও একটা জায়গা থেকে ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে ম্যাচটা জিতে যেতে পারি তাহলে আত্মবিশ্বাস নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আমরা যা চাচ্ছিলাম সেটা করতে পেরেছি। এজন্য খুব ভালো লাগছে।’

/আরআই/এফআইআর/



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews