পরমাণু শক্তি হবে এআইয়ের একটি বড় অংশ। ছবি: এডব্লিউএস

পরমাণু শক্তি হবে এআইয়ের একটি বড় অংশ। ছবি: এডব্লিউএস

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইকে শক্তিশালী করার জন্য যুক্তরাজ্যের আরও পারমাণবিক শক্তির প্রয়োজন বলে মনে করেন অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস-এর প্রধান নির্বাহী ম্যাট গারম্যান।

বিশ্বের অন্যতম বড় ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানির প্রধান বলেছেন, এআই চালাতে যে বিপুল পরিমাণ ডেটা সেন্টারের প্রয়োজন তা চালু রাখতে যুক্তরাজ্যের আরও পারমাণবিক শক্তির প্রয়োজন।

মার্কিন খুচরা বিক্রেতা জায়ান্ট অ্যামাজনের অংশ অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস বা এডব্লিউএস আগামী চার বছরে যুক্তরাজ্যে নতুন ডেটা সেন্টার তৈরিতে আটশ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

ডেটা সেন্টার হচ্ছে এমন এক গুদামঘর, যেখানে অনেক কম্পিউটার থাকে, যা দূর থেকে এআই, ডেটা প্রক্রিয়াকরণ ও স্ট্রিমিংয়ের মতো বিভিন্ন পরিষেবা চালু রাখে। তবে একটি ডেটা সেন্টারই ছোটখাট একটি শহরের সমান পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে।

গারম্যান বলেছেন, ডেটা সেন্টারের এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ‘চমৎকার এক সমাধান’ হতে পারে পারমাণবিক শক্তি। কারণ ‘পরিবেশবান্ধব ও ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দুর্দান্ত উৎস’ হতে পারে এটি।

বিবিসি লিখেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্রেতা হচ্ছে এডব্লিউএস। যুক্তরাজ্যে ৪০টিরও বেশি সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে কোম্পানিটি।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের পাঁচশটি ডেটা সেন্টার দেশটির মোট বিদ্যুতের ২.৫ শতাংশ ব্যবহার করে। আয়ারল্যান্ডের ৮০টি ডেটা সেন্টার ব্যবহার করছে দেশটির মোট বিদ্যুতের ২১ শতাংশ। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৬ শতাংশ ও ৩০ শতাংশে পৌঁছাবে।

যুক্তরাজ্যের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে কেবল ডেটা সেন্টারগুলোই যত বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে তা বর্তমান সময়ে দেশটির সব শিল্পকারখানার সম্মিলিত বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রায় সমান হবে।

গারম্যান বলেছেন, ভবিষ্যতের জ্বালানি চাহিদা এডব্লিউএস-এর পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।

“এটি এমন এক বিষয়, যা নিয়ে অনেক বছর ধরেই পরিকল্পনা করেছি আমরা।

“এতে আগেভাগেই বিনিয়োগ করেছি আমরা। আমার মনে হয়, বিশ্বকে নতুন প্রযুক্তি গড়ে তুলতেই হবে। আমার বিশ্বাস, পরমাণু শক্তি হবে তার একটি বড় অংশ, বিশেষ করে আগামী ১০ বছরের দিক তাকালে।”

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের সমারসেটের হিঙ্কলি পয়েন্টে বিশাল এক নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে ফরাসি কোম্পানি ‘ইডিএফ’। দেশটির সাফোকের সাইজওয়েল-এ তাদের আরেকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত এখনও ঝুলে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

এদিকে, গারম্যানের মতের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন ‘ইডিএফ’-এর যুক্তরাজ্যের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স চিশলম।

চিশলম বলেছেন, “ডেটা সেন্টারের উদ্যোক্তারা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে কেন ঝুঁকছে? কারণ তাদের অনেক শক্তির প্রয়োজন এবং তা নির্ভরযোগ্য হতে হবে।”

“হিঙ্কলি পয়েন্ট সি-এর মতো আরও একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ছোট পারমাণবিক রিয়্যাক্টরের বা এসএমআর-এর ব্যবহার ব্রিটেনের ডিজিটাল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারে।”

‘স্মল মডিউলার রিয়্যাক্টর’ বা এসএমআর হচ্ছে ছোট মডিউলার রিয়্যাক্টর, যেগুলোর আকার একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের সমান। এগুলো যতটা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা পরমাণুশক্তি ভিন্ন অন্য কোনো উপায়ে করতে গেলে সাইজওয়েল বা হিঙ্কলি শহরের সমান আকারের বিদ্যুৎকেন্দ্র বানাতে হত।

এরইমধ্যে ওয়াশিংটন ও ভার্জিনিয়াতে থাকা বিভিন্ন এসএমআর কোম্পানির সঙ্গে পারমাণবিক রিয়্যাক্টর তৈরিতে পার্টনারশিপ করেছে অ্যামাজন, যেখানে রোলস রয়েসের গ্রাহক হবে কোম্পানিটি। কারণ, এখানে নিজেদের এসএমআর ডিজাইন তৈরি করছে রোলস রয়েস।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews