ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম, কফির কাপে চুমুক দিয়েছেন আপনি আর আপনার সঙ্গী, গল্প করছেন কফি এখনি শেষই হয়নি এর মধ্যেই চট্রগ্রাম স্টেশনে উপস্থিত আপনার ট্রেন। স্বপ্ন দেখছেন কি না ভেবে শরীরে চিমটি কাটলেন, কিন্তু না এতো সত্যিই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিষয়টি অসম্ভব মনে হলেও এটি সত্যি হতে পারতো সেই ২০১৭ সালেই। কিন্তু সাবেক ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী হাসিনা আর ভারতের চক্রান্তে ধূলিস্যাৎ হয়ে অধরা রয়ে যায় ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম ৫৫ মিনিটে পৌছানোর সেই স্বপ্ন।
চীনের কর্মকর্তারা সে সময় বাংলাদেশের রেলমন্ত্রণালয়ের সাথে নিয়মিত বৈঠক করতে থাকেন। উদ্দেশ্য প্রতি ঘন্টায় ৩০০ কিমি স্পিডের বুলেট ট্রেন চালু করা। সমস্ত নথিও রেডি, সম্ভাব্যতা যাচাইও শেষ, নকশা চূড়ান্ত করাও শেষের পথে বাকি শুধু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার একটা মূল্যবান সাইন। কিন্তু বিধিবাম সেখানেই হাসিনার কাছে একের পর এক ফোন আসতে থাকে দিল্লি থেকে। দাদাবাবুরা যে নারাজ বাংলাদেশে ৩০০ কিমি স্পিডের বুলেট ট্রেন চালুর ব্যাপারে। বাঙ্গালীদের কপাল পুড়িয়ে হাসিনা সেদিন ভারতের কৃতদাসীর মত আর সাইন করলেন না সেই ফাইলে। এর সাথে সাথে বুলেট ট্রেনের যুগে প্রবেশ করাও হলো না বাংলাদেশের। প্রকপ্লের সেই ফাইল রেল ভবনেই পড়ে রইলো নীরবে নিভৃতে।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা তার বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে দেশকে যেভাবে চালিয়েছেন তাতে মনে হয়েছে বাংলাদেশ কোন আলাদা রাষ্ট্র নয় বরং ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন কোন প্রদেশ। আর হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন বরং মোদি সরকারের নিয়ন্ত্রিত কোন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূস। এই মাস্টারমাইন্ডের নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি হাত দেন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে আটকে থাকা সব প্রকল্পে।
এর ধারাবাহিকতায় ঢাকায় এলো চীনের কর্মকর্তারা, হলো বৈঠক হলো সকল প্রস্তুতিও এবার শুধু এগিয়ে যাবার পালা, আর বিশ্বকে দেখানোর সময় আমরাও বুলেট ট্রেনে চেপে পা রেখেছি একুশ শতকে। ঢাকা-চট্রগ্রাম দ্রুতগতির ট্রেন চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে তা বিরাট প্রভাব ফেলবে। ঢাকার ব্যবসায়ীরা নিমিষেই যেতে পারবে চট্রগ্রামে আবার কাজ সেরে দিনেই চলে আসতে পারবে রাজধানীতে এতে বাড়বে কাজের গতিও। যেখানে বর্তমানে চট্রগ্রাম যেতে সময় লাগে ৬ ঘন্টা সেখানে তখন লাগবে মাত্র ৫৫ মিনিট। একসাথে এই বুলেট ট্রেন পরিবহণ করতে পারবে ৫০০ জন যাত্রী।
দ্রুত গতির এই রেলসেবা চালু হলে বৃদ্ধি পাবে কর্মসংস্থানও। কারণ এই প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত হবে ৬টি স্টেশন। এগুলো হলো ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, পাহাড়তলী ও চট্রগ্রাম। প্রতিটি স্টেশনের আশেপাশে গড়ে উঠবে শিল্প এলাকা আসবে বিদেশি বিনিয়োগও। এভাবেই লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বুলেট ট্রেনের এই পকল্প ঘিরে।
এবার আর ফ্যাসিস্ট হাসিনা নেই, নেই কোন ষড়যন্ত্র। যিনি ওপরে বসে আছেন তিনি একজন বিশ্ব শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ। তার মাস্টারপ্লানের কাছেই হার মানবে ভারতের সকল ষড়যন্ত্র। আর বুলেট ট্রেনের যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশও দেখিয়ে দেবে এটা কোন চা’ ওয়ালার দেশ নয় বরং নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের নতুন বাংলাদেশ।