ডিজিটাল মার্কেটিং পেমেন্ট পলিসি নিয়ে 'বেসিস সফ্ট এক্সপো-২০১৯' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট পলিসি বিভাগের মেম্বার রেজাউল হাসান।
অনুষ্ঠানের মডারেটর ও আহ্বায়ক ছিলেন বেসিস স্ট্যান্ডিং কমিটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কো-চেয়ারম্যান কেএএম রাশিদুল মজিদ।
মূল বক্তব্য দেন এনালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিসালাত সিদ্দিক।
আলোচক ছিলেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, বেসিসের ডিজিটাল মার্কেটিং স্টেন্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ দিদারুল আলম সানি, মাস্টার কার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, এসএসএল ওয়েরলেসের চিফ অপারেটিং অফিসার আশীষ চক্রবর্তী এবং এরা ইনফোটেক লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. সিরাজুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
মোহাম্মদ রিসালাত সিদ্দিকের প্রেজেন্টেশনে ওঠে আসে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ফেসবুক ও গুগলের ভূমিকা এবং কীভাবে এই জায়ান্ট কোম্পানিগুলো ট্যাক্স না দিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। প্রেজেন্টেশনে আরও ওঠে আসে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেয়া হয় ফেসবুকে যার বেশিরভাগ অংশ যায় ছোট ছোট কোম্পানি অথবা ব্যক্তি উদ্যোগে ফেসবুক পেজে ব্যবসার মাধ্যমে। যার কোনো ট্যাক্স/ভ্যাট সরকার পায় না।
এ ছাড়া গত দুই বছরে দেশের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পরিসর বেশ বেড়েছে। কিন্তু ট্যাক্স/ভ্যাট এবং পেমেন্টের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা কাজ করছে। এ সমস্যা দূর করতে এর সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন আলোচকরা।
আলোচকরা বলেন, ডিজিটাল মার্কেটিং খাতের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে এবং ভ্যাট/ট্যাক্সে স্বচ্ছতা আনতে একটি নির্দিষ্ট পেমেন্ট সিস্টেম দরকার, পাশাপাশি দরকার পরিকল্পিত গাইডলাইনের। যেটি অনুসরণ করে গুগল ও ফেসবুকে পেমেন্ট করা হবে, যাতে করে সরকারের রাজস্ব আয় নিশ্চিত হবে।
এ ছাড়া আলোচকরা সরকারের কাছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে খাতের ওপর আরোপিত অনাবাসী কর ৫ বছরের জন্য রহিত করার দাবি জানান আলোচকরা। যাতে করে সবাই অবৈধ পেমেন্ট ব্যবহার না করে এই বৈধ পেমেন্ট চ্যানেল ব্যবহার করতে উৎসাহিত হয়।
আলোচকরা আরও বলেন, এটি ব্যবহার হলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সব পেমেন্ট লিগ্যাল হবে এবং সরকার জানতে পারবে আসলে কত টাকা গুগল ও ফেসবুকের কাছে যাচ্ছে। যা সরকারকে এই জায়ান্ট কোম্পানিগুলো দেশে আনার জন্য নেগোসিয়েশনে সহায়তা করবে, যেমনটি হয়েছে ইন্ডিয়াতে।
প্রধান অতিথি রেজাউল হাসান বলেন, আমরাও এরকম কিছুই চিন্তা করছি। খুব ভালো লাগলো দেখে যে, আপনাদের চিন্তার সঙ্গে আমাদের চিন্তার মিল।
বেসিসের ডিজিটাল মার্কেটিং কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই পেমেন্ট সিস্টেম চালু হলে অনেক কিছু স্বচ্ছ হবে এবং ভ্যাট/ট্যাক্স আদায় সহজ হবে।
রেজাউল হাসান বলেন, এই প্রস্তাবিত পলিসি বাস্তবায়নে আমি বেসিসকে সর্বাধিক সহায়তা করব।
এ ছাড়া বক্তারা লোকাল বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কগুলোকে ভ্যাট এবং ট্যাক্সের আওতা থেকে মুক্ত করার দাবি জানান। যাতে করে লোকাল ইন্ড্রাস্ট্রিগুলো গুগল-ফেসবুকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজার দখল করতে পারে।
এছাড়াও লোকাল এডভার্টাইজারদের লোকাল প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য উৎসাহিত করা, মনোপলি বাজারনীতি থেকে বের হয়ে মুক্ত বাজার নীতিতে কাজ করার অনুরোধ জানান অনেকে।
যারা ফেসবুকের মতো লোকাল প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করছেন। যেমন রিটস ব্রাউজারের মতো লোকাল ব্রাউজারকে বেশি বেশি সুযোগ সুবিধা এবং প্রচারে সহায়তার জন্য দাবি জানান অনেক আলোচক।
একই সঙ্গে একটি সঠিক বাজারনীতি তৈরি করার ব্যাপারে জোর দাবি জানান আলোচকরা। যাতে করে আসন্ন বাজেটে এটার প্রতিফলন ঘটে এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে লোকাল বাজার বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারে রাজস্ব আয় নিশ্চিত হয়।