রিও ডি জেনেইরোতে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা গাজায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ তুলে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে তা বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রিও ডি জেনেইরো থেকে এএফপি জানায়, লুলা বলেন, ‘আমরা ইসরাইলের হাতে গাজায় সংগঠিত গণহত্যার প্রতি উদাসীন থাকতে পারি না। নিরীহ বেসামরিক মানুষের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড এবং যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ক্ষুধার ব্যবহার মানবতা পরিপন্থী।’
হামাসের সমালোচনাও করেন লুলা। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল, তার কোনো ন্যায্যতা নেই। ওই হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিক।
তবে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল যে মাত্রায় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, সেটিও লুলা কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলার প্রতিক্রিয়ায় পুরো একটি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দেয়া কখনোই যৌক্তিক নয়।’
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরাইলের হামলায় এ পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৪১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসঙ্ঘ এই পরিসংখ্যানকে ‘বিশ্বস্ত’ বলে গণ্য করছে।
ব্রিকস সম্মেলনে উপস্থিত ১১টি সদস্য দেশের মধ্যে রয়েছে ইরান ও রাশিয়া (ইসরাইলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ইরানের মিত্র)। এসব রাষ্ট্র একমত হলেও ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি নিন্দা জানানো নিয়ে এখনো মতবিরোধ রয়েছে।
এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে গত মাসের মতোই ‘গভীর উদ্বেগ’ জানানো হবে, তবে সরাসরি ইসরাইল বা যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করা হবে না।
এ বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন দোহায় ইসরাইল-হামাসের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় আলোচনায় অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ইসরেইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাম্প আশাবাদী যে- আগামী সপ্তাহেই একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব হবে।
সূত্র : এএফপি