কী সুন্দর একটা গোছানো সংসার ছিল আমাদের! বাবা ছিলেন কাঠমিস্ত্রি, কৃষিকাজও করতেন। একবার প্যারাস্যুট সুতা দিয়ে এত সুন্দর একটা সোফা বানিয়েছিলেন, আশপাশের গ্রাম থেকেও লোকে দেখতে এসেছিল। বড় বড় নৌকা বানাতেন। সেগুলো ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়ও বিক্রি হতো। সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে আমাদের নিজেদের জমি, জায়গা, ভিটাবাড়ি সব ছিল।

আমরা ছয় ভাইবোন। বড় বোনের তখন বিয়ে হয়ে গেছে। আমি উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে, আমার পরের বোন প্রথম বর্ষে। বাকি তিন ভাই-বোন অনেক ছোট। এ রকম একটা সময়ে, ২০১৫ সালে বাবার স্ট্রোক করল। তারপর চলাফেরা করতে পারতেন; কিন্তু কোনো কাজ করার শক্তি পেতেন না। হুট করেই আমরা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়লাম।

জমানো যা টাকা ছিল, তার একটা বড় অংশ বাবার চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেল। সাতজনের পরিবার। বসে বসে খেলে আর কত দিন চলে? কিছুদিনের মধ্যেই আমরা ভীষণ অর্থ সংকটে পড়লাম। সেই সময়ে এগিয়ে এলেন আমার মামারা।

এক মামা আর মামাতো ভাই গ্রিসে থাকতেন। তাঁরা প্রতি মাসে চাল, ডাল ও তেল কেনার টাকা দিতেন। আরেক মামা মাসের শুরুতেই বাজার করে দিয়ে যেতেন। সেই মামাই কথাটা প্রথম তুললেন, ‘বাড়ির দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিলে কেমন হয়? সংসারটাও তাহলে অনেকটাই “হালকা” হয়ে যাবে।’ তিনি বোঝালেন, খাওয়ার চেয়েও বড় খরচ পড়াশোনা। সেটি চালানোর মতো অবস্থা আমাদের পরিবারের নেই। অসুস্থ বাবা তখনো বিছানায় শুয়ে শুয়ে বলতেন, ‘সাদিকা যেদিন পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবে, সেদিন আমি সুস্থ হব।’



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews