নতুন শুরুর স্বপ্ন নিয়ে নতুন অধিনায়ক মেহেদী মিরাজের নেতৃত্বে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। তবে এমন কিছু হলো কলম্বোতে, যা ছিল কল্পনার বাহিরে। ‘ভুতুড়ে’ ভাবে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর প্রায় চার মাস বিরতি শেষে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলতে নেমেছিল পাঁচ মোড়লের কাউকে ছাড়াই। ২০ বছর আর ৩৩১ ম্যাচ পর ঘটল এমন ঘটনা!
২৪৪ রানে শ্রীলঙ্কাকে আটকে দিয়ে জয়ের পথেই ছুটছিল বাংলাদেশ। সবকিছু ঠিকই ছিল। তানজিদ তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে দলকে পৌঁছে দেন তিন অংকে।
তবে তখনই ফিরতে হয় শান্তকে, রান আউট হন তিনি। এরপর আর মাত্র ৫ রান যোগ হতেই ফেরেন তানজিদ তামিম, লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী মিরাজ, তানজিম সাকিব ও তাসকিন আহমেদ।
১ উইকেটে ১০০ থেকে ১০৫ রানে পৌঁছায় ৮ উইকেটে! অর্থাৎ মাত্র ৫ রানে বাংলাদেশ হারায় ৭ উইকেট! ভুতুড়ে ঘটনাই বটে। যা বাকি সবার মতো অবাক করেছে তাসকিন আহমেদকেও।
দীর্ঘদিন পর চোট কাটিয়ে গতকালই দলে ফিরেন তাসকিন। তবে বোলিংয়ে ছিল না ম্যাচ না খেলার ছাপ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখেন চাপ, নেন ৪ উইকেট। বলা যায়, শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরার কাজটা তিনিই করেন।
তবে নিজের কাজটা ঠিকমতো করলেও তাসকিন হেরে গেছেন, দল খারাপ করায় পরাজিতদের কাতারে তিনি। কিন্তু এভাবেও দল হারতে পারে, তা তাসকিনের কাছেও চমকপ্রদ।
এক কাপ কফি খেতে গিয়ে তাসকিন দেখেন ৫ উইকেট নেই দলের! ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচের এমন পরিস্থিতিতে নিজের প্রতিক্রিয়ায় এমনটাই জানান তাসকিন। বলেন, ‘আমরা খুব ভালো মুডে ছিলাম, কফি খাচ্ছিলাম, চিল করছিলাম। কিন্তু মুহূর্তেই দেখি পাঁচ উইকেট পড়ে গেছে। ক্রিকেটে অনেক কিছুই ঘটে। অনিশ্চয়তার খেলা। কিন্তু এমনটা প্রত্যাশা করিনি।’
এরপর এমন করে হেরে যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন তাসকিন। বলেন, ‘আমি জানি সমর্থক যারা আছে, তারা চায় আমরা ভালো করি। সমর্থকদের সরি বলছি, সহজ ম্যাচটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে গেছি।’
‘আমরাও চাই ভালোই করতে। এমন ফলাফলের পর যখন হোটেলে যাব, কেউই স্বস্তিতে ঘুমাতে পারবে না। খারাপ লাগবেই।’
তবে এরপর আবার আশারবাণী শুনান তাসকিন। ‘আমরা দ্রুত কাটিয়ে উঠব সব সমস্যা। ভালো জয় উপহার দেবো। স্বপ্ন দেখা ছাড়া তো সামনে এগোনো যায় না। আমরা কষ্ট করছি।’
হারের কারণ স্পষ্ট হলেও তাসকিন দাবি করছেন থিতু হয়ে যাওয়া দু’জন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ায়- এমন বিপর্যয় নেমেছে। বলেন, ‘দুই জন সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।’
‘তামিম আউটের পর আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এরপর যে আউটগুলো হয়েছে, অপ্রত্যাশিত ছিল। যেভাবে আউট হয়েছি, এতটা বাজে দল আমরা নই। সবারই সামর্থ্য আছে। কিন্তু ওই বিপর্যয়টার জন্যই হেরে গেলাম।’
সে সামর্থ্যের প্রমাণ রাখার সুযোগ তাসকিনরা পাবেন আগামী শনিবার (৫ জুলাই)। সেদিন কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।
সিরিজ বাঁচাতে তাসকিনদের সে ম্যাচ এখন ‘ডু অর ডাই’। জয় ছাড়া বিকল্প নাই।