সাবেক সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে তার জীবনের নানা স্মৃতি ও সমাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, তিনি সবসময় সততার পথে থাকেন এবং কখনো চোর হতে রাজি হননি। চাকরি জীবনের শুরু থেকে তিনি অনেক সংগ্রাম করেছেন এবং পরিশ্রমের মূল্য দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি যখন চাকরিতে ঢুকলাম ক্যাডার জবে, প্রথম কাজ ছিল আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা, ৫০ টাকায় বেতন পেতাম। এরপর ইন্টারমিডিয়েট পাস করে হাই স্কুলে শিক্ষকতা করলাম। আমার হেডমাস্টার আমার শিক্ষক ছিলেন, তিনি আমাকে ২০০ টাকা বেতন দিলেন। পরবর্তীতে অনার্স পাস করে চরফেশন কলেজে ইংরেজির প্রফেসর হলাম।
তিনি স্মরণ করেন, ১৯৭৪ সালে যখন তিনি কলেজে শিক্ষক ছিলেন, তখন তার প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম সাহেব ছিলেন, যিনি আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন এবং খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। প্রিন্সিপাল সাহেব বলেছিলেন, বদিউর সাহেব, আমি আপনার থেকে বেতন বেশি পেলে আমার প্রিন্সিপাল গিরি থাকবে না। আপনার বেতন ৬০০ টাকা, এখান থেকে ১০০ টাকা আমার আব্বার জন্য পাঠাও।
তিনি আরও বলেন, বেতন থেকে আমার আব্বার জন্য পাঠানো টাকা নিয়ে আমাকে জবাবদিহিতা দিতে হতো। আজকের সমাজে সেই জবাবদিহিতা নেই। তাই আমরা এখন আগের মতো চলতে পারছি না।
এরপর বদিউর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন, যেখানে তার বেতন ছিল ৪৭৫ টাকা। তিনি জানালেন, নতুন বউ নিয়ে বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে বাসাবাড়ির মালিকার সাহায্যে মাত্র ২৫ টাকা কমে বাসাবাড়ি পেলেন। তিনি বললেন, ২৫ টাকা কমাতে পা ধরে সালাম করলাম। তখন বুঝলাম, এটাই আমাদের চলার পথ।
বদিউর রহমান বলেন, ৭৭-৭৮ সালের দিকে থাইল্যান্ডের রেশনের চাল আসতো, যা গরম গরম খেলে খাওয়া যেত, কিন্তু ঠান্ডা হলে প্লাস্টিকের মত শক্ত হয়ে যেত। তাতেই অনেক সমস্যা হতো। এরকম বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়্য
তিনি অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, চাকরির প্রথম দশকে সরকারি বাসা পাওয়াটা ছিল বিরাট অর্জন। তখন স্টেট অফিস ছিল তীর্থস্থান। এখন চাকরিতে এসে গাড়ি কিনে ফেলে ফ্ল্যাট নেওয়া হয়ে গেছে। তবে সমাজ ও রাষ্ট্র এখন চোরদের মেনে নিচ্ছে। সবাই একসাথে চোর হয়ে গেছে, আর বড় চোর রাজনীতিবিদরা।
ফরিদ
