আবুধাবি টেস্টে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৭ উইকেটে ৯১। আজ দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই ৫ উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেট হাতে রেখে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের চেয়ে পিছিয়ে আছে ১৯১ রানে

আবুধাবিতে কাল টেস্টের প্রথম দিন শেষেই অনেকে আন্দাজ করেছিলেন, রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে বসেছে এই টেস্ট। যেখানে প্রথম দিনে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর ছোট্ট মড়কে পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ৩০০ ছোঁয়ার আগেই। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ রান তুলতেই ২ উইকেট হারানোয় মড়কের ইঙ্গিত পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়াও—কাল দ্বিতীয় দিনে কপালে খারাবি আছে! ঘটছেও ঠিক তা–ই। আজ দ্বিতীয় দিনে পাকিস্তানি পেস ব্যাটারি আর স্পিন ঘূর্ণির সামনে ধুকপুকানি উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়ার।

অস্ট্রেলিয়াকে কালই চোখ রাঙানি দিয়ে রেখেছিলেন চামড়ার কারখানায় কাজ করা থেকে উঠে আসা এক পেসার—মোহাম্মদ আব্বাস। ওপেনার উসমান খাজা আর ‘নাইটওয়াচম্যান’ পিটার সিডলকে তুলে নিয়েছিলেন পাকিস্তানের এই পেসার। আজ প্রথম সেশনে ৭১ রান তুলতেই অস্ট্রেলিয়া হারিয়েছে আরও ৫ উইকেট। এর মধ্যে আব্বাস ও বিলাল আসিফের শিকার দুটি করে উইকেট আর ইয়াসির শাহ নিয়েছেন এক উইকেট। লাঞ্চে যাওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর রীতিমতো ভ্রু–কুঁচকে দেওয়ার মতোই—৭ উইকেটে ৯১। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থেকে তারা এখনো ১৯১ রানে পিছিয়ে।

এমন নয় যে আবুধাবির উইকেট ‘মাইনফিল্ড’ কিংবা পেসবান্ধব। দ্বিতীয় দিনের খেলার শুরুতে ধারাভাষ্যকাররা এই উইকেটকে বলেছেন ‘ব্যাটিং স্বর্গ’। দিনের প্রথম তিন ওভারের মধ্যে তিনটি দুর্দান্ত ড্রাইভ খেলা অ্যারন ফিঞ্চের ব্যাটে সেই কথারই প্রতিচ্ছবি ছিল। কিন্তু ছবিটা পাল্টে দিয়েছেন আব্বাস। কাল ২ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম (ইয়াসির শাহর পর) বোলার হিসেবে ৫০ উইকেট নেওয়ার নজির গড়েন আব্বাস (১০ম টেস্ট)। কাল তিনি যেখানে শেষ করেছিলেন, শুরু করেছেন সেখান থেকেই। চারে ব্যাটিংয়ে নামা শন মার্শকে তুলে নিয়েছেন দিনের চতুর্থ ওভারেই। দুর্দান্ত এক লেংথ ডেলিভারিতে তাঁকে ক্যাচ বানিয়েছেন স্লিপে।

ব্যাটিং অর্ডারের লেজ বেরিয়ে যাওয়ার আগে টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যানই উইকেটে থিতু হতে পারেননি। চতুর্থ উইকেটে ফিঞ্চ ও ট্রাভিস হেডের সম্মিলিত ২০ রানই এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের জুটি। দুজন থিতু হওয়ার আগেই হেডকে ফিরিয়ে জুটিটা ভেঙেছেন আব্বাস। শন মার্শকে যেভাবে আউট করেছিলেন ঠিক সেভাবেই—লেংথ ডেলিভারিতে স্লিপে। এরপর অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের লেজ বের করে আনার কাজটুকু সেরেছেন বিলাল ও ইয়াসির। ৪ উইকেটে ৫৬ রান থেকে মুহূর্তের মহিমায় ৭ উইকেটে ৯১—অর্থাৎ ৩৫ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট ফেলেছেন দুই স্পিনার।

পথের কাঁটা হয়ে থাকা ফিঞ্চকে (৩৯) তুলে নেন বিলাল। অধিনায়ক টিম পেইনকেও ফিরিয়েছেন এই অফ স্পিনার। আর মিচেল মার্শ উইকেট দিয়েছেন ইয়াসিরকে। সব মিলিয়ে প্রথম সেশনে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তান কি এই টেস্টে চালকের আসনে? এখনই তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা। ৫৭ রানে আটকে ৪ উইকেট হারিয়েছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে তাদের স্কোর ২৮২। রানটা আরও বাড়তে পারত যদি শেষ দিকে দ্রুত উইকেট না পড়ত। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে উইকেটে আছেন এক টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যাটিং অলরাউন্ডার মারনাস লাবুশেন।

কিন্তু খেলাটা তো ক্রিকেট—গৌরবময় অনিশ্চয়তাই যার ভূষণ। এখনো ম্যাচের আরও দুটি ইনিংস বাকি। প্রথম টেস্ট এবং এই টেস্টের প্রথম দিন স্মরণে রাখলে বলতে হবে, ‘পিকচার’ও এখনো বাকি আছে!



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews