কুষ্টিয়া-৩ আসনের জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী ইসলামী বক্তা আমির হামজাকে নিয়ে সম্প্রীতি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন নাগরিক টিভির ইডিটর ইন চিফ নাজমুস সাকিব। এই সাংবাদিক তার আলোচনায় তুলে ধরেন আমির হামজার নানা কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি। তার আলোচনার শুরুতের দেখা যায়, আমির হামজার আগের দুটি বক্তব্যের ভিডিও প্রচার করতে। যার একটি ছিলো ফ্যাসিস্ট হাসিনার বন্দনাময়। যেখানে এই বক্তাকে বলতে শোনা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের লোক জামায়াতের কেউ নন। অপর ভিডিওতে দেখা যায়, জামায়াতের আমিরের কথা উল্লেখ করে দলটির প্রশংসা করতে।
এরপর আলোচনায়, আমির হামজাকে ইসলামের অপব্যাখ্যা দেওয়া ভণ্ড বক্তা আখ্যা দিয়ে এই সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন জামায়াত কি আমির হামজার এসব দেখে না? এমনকি বলিউডের নায়িকা রাশ্মিকা মান্দানাকে নিয়ে আমির হামজার করা মন্তব্যের একটি বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ তুলে ধরে জামায়াতের প্রতি তার প্রশ্ন, ‘ জামায়েত কি জানে না যে এই ব্যক্তি একজন ইসলামী বক্তা হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে একজন বেপর্দা সিনেমার নায়িকার শারীরিক অবয়বের বর্ণনা দিয়েছিলেন?’
এরপর নাজমুস সাকিব তুলে ধরেন আমির হামজার ২০২৪ সালের ভুয়া পাসপোর্ট কাণ্ডের এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সেই সাথে এই বক্তার কারণে যে বাংলাদেশিরা বর্তমানে সিঙ্গাপুরে কঠিন বিপদ আর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমির হামজার এ ধরনের উল্টাপাল্টা এবং আপত্তিকর বক্তব্য দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছিয়ে গিয়েছে। হাসিনার পতনের সাথে সাথেই অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৩ই আগস্ট সিঙ্গাপুরে একটি ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভিন্ন নামে টুরিস্ট ভিসায় এসে ১৫ই আগস্ট সিঙ্গাপুরে এক মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারদের ডরমেটরিতে আয়োজিত এক মাহফিলে অমুসলিম সবাইকে কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন এই আমির হামজা এবং আমির হামজার ওই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপগুলো যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় তখন সিঙ্গাপুরের সরকার এবং ওই দেশের স্থানীয় যারা রয়েছেন তারা এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান এবং সিঙ্গাপুর সরকার এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে নোটিশ দিলেও বাংলাদেশ সরকার আমির হামজাকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেনি।’
আমির হামজার সেই কর্মকণ্ডের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশিদের হেনস্তার স্বীকার হতে হচ্ছে উল্লেখ করে এই সাংবাদিক বলেন, ‘এর ফলে সিঙ্গাপুরের এ সমস্ত ডরমেট গুলোতে আজকাল চেক-ইন এবং চেক-আউটের সময় বাংলাদেশীদের ব্যাগ ভালোভাবে তল্লাশী করা হয়। দেখা হয় যে সেখানে কোন উগ্রপন্থী পুস্তক আছে কিনা। এবং আমির হামজার কারণে সিঙ্গাপুরের প্রবাসী বাংলাদেশীদের যে হয়রানী সেটা কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি। বরং দিনে দিনে এই হয়রানীগুলো কিন্তু আরো বাড়ছে। অতি সম্প্রতি বিএমইটি কর্তৃক সিঙ্গাপুরগামী নতুন পুরাতন সকল যাত্রীদেও তিনদিনের ক্লাস বা পিডিও অর্থাৎ প্রি ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ক্লাস সাপেক্ষে সার্টিফিকেট প্রদানের পরেই ম্যানপাওয়ার কার্ড বা বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স কার্ড করা যাবে। সিঙ্গাপুওে যেতে ইচ্ছুক ভাই বোনেরা মনে করেন যে আমির হামজার কারণেই তাদেরকে এইসব নতুন আইন কানুনের ঝামেলার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।’
এরপর নাজমুস সাকিব হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ধরনের একজন বিতর্কিত মানুষকেই দেশের অন্যতম প্রধান একটি রাজনৈতিক দল যখন নমিনেশন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সেটা সত্যিই হতাশাজনক একটি ব্যাপার।’