ক্রীড়া প্রতিবেদক : ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ৫০০ স্কোর দেখার প্রত্যাশায় শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ। আশা পূরণ হয়নি এখনো। ৫০০ কী, ৪০০ রানের দেখাই তো মেলেনি। তবে আসর শুরুর আগে সবচেয়ে হম্বিতম্বি করেছিল যে স্বাগতিকরা, চলতি টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর তাদেরই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ছয় উইকেটে ৩৯৭ রান ইংল্যান্ডের।

আর সবচেয়ে বেশিবার তিন শ পেরোনো স্কোর? সেখানে ইংল্যান্ডের সঙ্গী অস্ট্রেলিয়া। এখন পর্যন্ত চারবার করে তিন শতাধিক রান এ দুই দলের। আজ যখন সেই ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি, তখন রানবন্যার প্রত্যাশায় বাড়াবাড়ি নেই কোনো।

ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ শুরু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আট উইকেটে ৩১১ রান দিয়ে। পাকিস্তানের কাছে পরের ম্যাচে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায় তারা; তবে ৩৪৮ রানের জবাব দিতে নেমে ৯ উইকেটে ৩৩৪ পর্যন্ত যায় ঠিকই। বাংলাদেশের বিপক্ষে পরের খেলায় করে ছয় উইকেটে ৩৮৬। খুনে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে যা ছাড়িয়ে যায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে; ছয় উইকেটে ৩৯৭ রানের ইনিংসে। এ দুই ম্যাচের মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন শ ছাড়ানো ইনিংসের প্রয়োজন পড়েনি। তবে সেটি যে খুবই সম্ভব ছিল, ১০১ বল এবং আট উইকেট হাতে ক্যারিবিয়ানদের ছুড়ে দেওয়া ২১৩ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে প্রমাণ করে তা।

এমন বিস্ময়কর ব্যাটিং ধারাবাহিকতা যে ইংল্যান্ডের, তারাই কিনা আবার শ্রীলঙ্কার ২৩২ রানের জবাবে থেমে যায় ২১২ রানে! সর্বশেষ ম্যাচের এই পারফরম্যান্স যে নিছকই এক ব্যতিক্রমী দিন, তা প্রমাণের জন্য আজ নিশ্চয়ই মরিয়া হয়ে থাকবে এউইন মরগানের দল।

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং যেমন টুর্নামেন্টের শুরু থেকে জ্বলে উঠে সর্বশেষ ম্যাচে হোঁচট খেয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার তা নয়। অ্যারন ফিঞ্চের দল বরং ধারালো হচ্ছে ক্রমশ। শেষ চার ম্যাচে টানা তিন শতাধিক রানের দলীয় ইনিংস সেটিই প্রমাণ করে। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের ২০৭ রান পেরিয়ে যায় ৩৫তম ওভারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অবশ্য অলআউট ২৮৮ রানে। এর পর থেকে যেন আরো টগবগিয়ে ছোটে অস্ট্রেলিয়ার রানরথ। ভারতের ৩৫২ রানের জবাবে জিততে পারেনি; তবে ৩১৬ পর্যন্ত তো যায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের রসদ পায় ৩০৭ রানের ইনিংস। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাত উইকেটে ৩৩৪ রানের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ উইকেটে ৩৮১ রানের পাহাড় গড়ে অ্যারন ফিঞ্চের দল। চলতি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরে যা ইংল্যান্ডের দুটি স্কোরের পরই।

সর্বোচ্চ তিনটি স্কোরের দুই দলের দ্বৈরথ আজ। রান-ফোয়ারা তাই ছুটবে না কেন?

দলীয় স্কোর যখন এমন, দুই দলের ব্যাটসম্যানদের ফর্মে থাকাটাও তাই স্বাভাবিক। রয়েছেনও। ইংল্যান্ডের জো রুট ছয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে পাঁচবারই করেন পঞ্চাশ ছাড়ানো স্কোর। দুই সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে ৮৪.৮০ গড়ে ৪২৪ রান। পঞ্চাশ পেরোনো গড় ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে আরো তিনজনের—জেসন রয় (৭১.৬৬), মরগান (৫৪) ও বেন স্টোকস (৫০.৫০)। ইনজুরিতে পড়ার আগে জেসন রয় তিন ইনিংসে একটি করে সেঞ্চুরি-ফিফটিতে করেন ২১৫ রান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ৭১ বলে ১৪৮ রানে অবিশ্বাস্য ইনিংসটিসহ মরগান ছয় ম্যাচের পাঁচ ইনিংসে করেন ২৭০ রান। স্টোকস সেঞ্চুরি না পেলেও দুই ফিফটিতে করেছেন ২০২ রান। ওদিকে জস বাটলার পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরিসহ ৩৯.৪০ গড়ে করেছেন ১৯৭ রান। ওপেনার জনি বেয়ারস্টো দুই ফিফটিতে ৩৬.৩৩ গড়ে করেছেন ২১৮ রান।

অসি ব্যাটসম্যানের ব্যাটেও খই ফোটার মতো রান ছুটছে। ডেভিড ওয়ার্নার দুটি করে সেঞ্চুরি-ফিফটিতে ৮৯.৪০ গড়ে করেছেন ৪৪৭ রান। সমান ছয় ম্যাচের ছয় ইনিংসে অ্যারন ফিঞ্চের রান ৩৯৬; এক সেঞ্চুরি, তিন ফিফটিতে। রানে পিছিয়ে থাকলেও ওয়ার্নারের (৮৭.৩০) চেয়ে স্ট্রাইকরেটে ঢের এগিয়ে অধিনায়ক (১০৯.৬৯)। স্টিভেন স্মিথ ছয় ম্যাচে ২৪৪ রান করেছেন তিন ফিফটির মালায়; ৪০.৬৬ গড়ে। উসমান খাজার ফিফটি একটি; ৩১.১৬ গড়ে করেছেন ১৮৭ রান। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের কোনো ফিফটি পর্যন্ত নেই। তবে ছয় ইনিংসে তাঁর ১৩০ রান এসেছে ২০৯.৬৭ স্ট্রাইকরেটে। অস্ট্রেলিয়ার রানস্রোত বইয়ে দেওয়ায় এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানের অবদানও তাই কম নয়।

সে বিস্ফোরক ব্যাটিং লাইন অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড দুই দলেরই। ব্যাটসম্যানরাও রয়েছেন বিধ্বংসী ফর্মে। চার-ছক্কার সিগন্যাল দিতে দিতে আজ না আম্পায়ারদের হাতই ব্যথা হয়ে যায়!



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews