ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে ভুয়া, নগ্ন ছবি তৈরি করতে পারে এমন অ্যাপের প্রচার চালানোর অভিযোগে হংকংভিত্তিক একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে মেটা।
সিএনবিসি এক প্রতিবেদনে বলছে, জয় টাইমলাইন এইচকে লিমিটেড নামের কোম্পানিটি ‘ক্রাশ এআই’ নামের একটি অ্যাপ এবং তার বিভিন্ন সংস্করণের বিজ্ঞাপন দিয়েছে মেটার প্ল্যাটফর্মে।
এই অ্যাপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে কারও ছবিকে নগ্ন রূপে রূপান্তর করতে পারে যা ভুক্তভোগীর অনুমতি ছাড়াই করা হচ্ছে।
মেটা হংকংয়ে মামলা করেছে জয় টাইমলাইন কোম্পানির বিরুদ্ধে, যাতে প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্ল্যাটফর্মে এই অ্যাপের প্রচার বন্ধ করে।
মেটা বলছে, “এই অ্যাপ আমাদের বিজ্ঞাপন পর্যালোচনার প্রক্রিয়া এড়িয়ে বারবার বিজ্ঞাপন চালানোর চেষ্টা করেছে। আমরা তা সরিয়ে দেওয়ার পরও তারা নতুনভাবে বিজ্ঞাপন চালিয়ে গেছে।
“এই মামলা দেখায়, আমরা বিষয়টিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। আমরা আমাদের কমিউনিটিকে সুরক্ষিত রাখতে আইনি পদক্ষেপসহ সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেব,” বলা হয়েছে মেটার বিবৃতিতে।
মেটা বলছে, তারা এখন এমন বিজ্ঞাপন শনাক্তে নতুন প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যা নগ্নতা সরাসরি না থাকলেও বিজ্ঞাপনটিকে চিহ্নিত করতে সক্ষম। বহিরাগত বিশেষজ্ঞ ও নিজেদের স্পেশালিস্ট টিমের সঙ্গে কাজ করছে, যাতে এসব অ্যাপ নির্মাতা যে পদ্ধতিতে নজর এড়িয়ে কাজ করে, তা প্রতিহত করা যায়।
তারা আরও বলছে, অন্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সঙ্গেও এই তথ্য মেটা শেয়ার করবে, যাতে তারা নিজ নিজ প্ল্যাটফর্মে ক্রাশ এআই বা এমন অ্যাপ বন্ধ করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ডিক ডারবিন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্ক জাকারবার্গকে চিঠি লিখে বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মেটার নিজস্ব বিজ্ঞাপন নীতিমালা লঙ্ঘন করে জয় টাইমলাইন অন্তত আট হাজার ১০টি ক্রাশ এআই সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন চালিয়েছে বছরের প্রথম দুই সপ্তাহেই।
এই চিঠিতে ডারবিন উল্লেখ করেন টেক নিউজ প্ল্যাটফর্ম ফোর জিরো ফোর মিডিয়া এবং কর্নেল টেক-এর গবেষক অ্যালেক্সিওস মান্টজারলিস পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফল।
মেটা বলছে, তারা ‘কোঅর্ডিনেটেড ইনঅথেন্টিক এক্টিভিটি’ (সমন্বিত ভুয়া কার্যক্রম) চিহ্নিত করতে যে কৌশল ব্যবহার করে, সেই একই কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে এসব অ্যাকাউন্ট শনাক্ত ও সরাতে।
‘চলতি বছরের শুরু থেকেই আমরা চারটি আলাদা অ্যাকাউন্ট নেটওয়ার্ক শনাক্ত করেছি, যারা এ ধরনের অ্যাএপর প্রচার চালাচ্ছিল,’ বলা হয়েছে মেটার পক্ষ থেকে।
এআইনির্ভর ‘ন্যুডিফাই অ্যাপের বিস্তার এবং সামাজিক মাধ্যমে এর বিজ্ঞাপন ছড়ানোর ঘটনায় গবেষক ও অধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এসব অ্যাপ প্রযুক্তির অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত প্রাইভেসি লঙ্ঘন করছে, যার বিরুদ্ধে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।