মহান আল্লাহ তায়ালা সবচেয়ে বড়। দুনিয়ায় তার বিরোধিতা করে কেউ স্থায়ী হতে পারেনি। ইতিহাসের অনেক প্রভাবশালী রাজা-বাদশাহকে খুবই তুচ্ছভাবে মৃত্যু দিয়েছেন তিনি। নমরুদ মৃত্যবরণ করেছে মশার কামড়ে, ফেরাউন পানিতে ডুবে আর আবু জাহেল নিহত হয়েছে ছোট্ট দুই কিশোরের হাতে।
আবু জাহেলের নিহত হওয়ার ব্যাপারে হজরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রা: বলেন, বদর যুদ্ধের দিনে আমি মুসলিমদের কাতারের মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখি যে, ডানে-বামে দুইজন আনসার কিশোর। তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে আমি চিন্তা করছিলাম, হঠাৎ একজন চুপিসারে আমাকে বললো, চাচাজান, আবু জাহেল কে তা আমাকে দেখিয়ে দিন।
আমি বললাম, ভাতিজা, তুমি তার কী করবে? সে বললো, আমি শুনেছি, আবু জাহেল প্রিয় নবী সা:-কে গাড়ি দেয়। সেই সত্ত্বার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যদি আমরা আবু জাহেলকে দেখতে পাই তবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার কাছ থেকে আলাদা হবো না, যতক্ষণ পর্যন্ত তার এবং আমাদের মৃত্যু যার আগে লেখা রয়েছে, তার মৃত্যু না হয়।
হজরত আব্দুর রহমান রা: বলেন, একথা শুনে আমি অবাক। অন্য একজন আনসার কিশোরও চুপিসারে আমাকে একই কথা বললো। কয়েক মুহূর্ত পরে আমি আবু জাহেলকে লোকদের মধ্যে বিচরণ করতে দেখছিলাম। আমি উভয় আনসার কিশোরকে বললাম, ওই দেখো তোমাদের শিকার। যার সম্পর্কে তোমরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছো।
একথা শোনামাত্র উভয় আনসার কিশোর আবু জাহেলের ওপর ঝাঁপিয়ে পরে তাকে হত্যা করে ফেলল। এরপর উভয়ে প্রিয় নবী সা:-এর কাছে এলো। নবী সা: জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে কে আবু জাহেলকে হত্যা করেছো? উভয়ে বললো, আমি করেছি, আমি করেছি। নবী সা: বললেন, তোমরা কি তলোয়ারের রক্ত মুছেছো? তারা বললো, না মুছিনি। নবী সা: উভয়ের তলোয়ার দেখে বললেন, তোমরা দুজনেই হত্যা করেছো।
এই দুই কিশোরের নাম ছিল- মাআয ইবনে আমর জামুহ এবং মুআওওয়ায ইবনে জামুহ ইবনে আফরা রা:।
-তথ্যসূত্র : আর রাহিকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা : ২২৬ পৃষ্ঠা