ঘনিয়ে আসছে কেভিন ডে ব্রুইনের ম্যানচেস্টার সিটি অধ্যায় শেষের সময়। বেলজিয়ান মিডফিল্ডারের সম্ভাব্য নতুন ঠিকানা এখনও অজানা। কোথায় যাবেন তিনি? গ্রীষ্মের দলবদলে তাকে ফ্রি ট্রান্সফারে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দলটির ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহ। কোনো ইংলিশ ক্লাবে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দেননি ডে ব্রুইনে।
গত মাসের শুরুতে ডে ব্রুইনে জানিয়ে দেন, তার এক দশকের ম্যানচেস্টার সিটি অধ্যায় শেষ হচ্ছে চলতি মৌসুম শেষে। মৌসুমটা ভীষণ বাজে কাটছে পেপ গুয়ার্দিওলার দলের। শনিবার এফএ কাপের ফাইনালে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে হেরে তাদের শিরোপাহীন মৌসুম শেষ নিশ্চিত হয়ে গেছে।
২০১৫ সালে সিটিতে যোগ দেওয়ার পর দলটির ছয়টি প্রিমিয়ার লিগ, দুটি এফএ কাপ, পাঁচটি লিগ কাপ ও অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ডে ব্রুইনে। ৩৩ বছর বয়সী তারকার সম্ভাব্য নতুন ঠিকানা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা।
‘স্কাই স্পোর্টস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডে ব্রুইনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তাকে অ্যানফিল্ডে আসার ‘প্রস্তাব’ দিয়ে রাখলেন সালাহ।
“তার ক্যারিয়ারের জন্য তাকে অভিনন্দন জানাতে চাই আমি। সে সিটিতে অসাধারণ কাজ করেছে এবং সে এই লিগের একজন গ্রেট। আমি সত্যিই তার জন্য শুভকামনা জানাই। আমাদের কাছে তার জন্য জায়গা আছে!”
যদিও ৩২ বছর বয়সী সালাহ বলছেন, ডে ব্রুইনের সঙ্গে চুক্তি ‘অসম্ভব’ বলে মনে হচ্ছে তার। নিজের নতুন চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি লিভারপুলের মালিকপক্ষের ‘দর্শনের’ দিকে ইঙ্গিত করেছেন যে, তারা ৩০ বছরের বেশি বয়সী খেলোয়াড়দের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করে খুব কমই।
“ক্লাবের দর্শন, আমি জানি তারা অতীতে ৩০ বছরের বেশি বয়সী খেলোয়াড়দের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছে। আমার আশা ছিল না যে, আমি এখানে থাকব। এটা খারাপ কিছু নয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি, তারা অতীতে এই পরিস্থিতি কীভাবে সামলেছে।”
“আলোচনা দ্রুত এগিয়ে যেতে ছয় মাস সময় লেগেছে এবং জানুয়ারি থেকে পরিস্থিতি আরও ভালো হয়েছে। এতে আমাদের কিছুটা সময় লেগেছে। আমার মনে হয় ক্লাব আমাকে পরীক্ষা করছিল যে, আমি এখনও কিছু দিতে পারি কি না!”
অনেক আলোচনা আর জল্পনা-কল্পনার পর গত মাসে সালাহর সঙ্গে দুই বছরের নতুন চুক্তি করে লিভারপুল। আগের চুক্তির শেষ মৌসুমের শেষভাগে এসেও ক্লাবের পক্ষ থেকে কোনো প্রস্তাব না পাওয়ায়, গত বছরের শেষ দিকে এবং এই বছরের শুরুর দিকে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
সিটির থেকে নতুন প্রস্তাব না পাওয়ায় গত মাসে বিস্ময় প্রকাশ করেন ডে ব্রুইনে। প্রিমিয়ার লিগে খেলার জন্য তিনি এখনও ক্ষুধার্ত কি না, এফএ কাপ ফাইনালে হারের পর এমন প্রশ্নে এই তারকা বলেন, “আমি ভালো ফুটবল খেলতে চাই, সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন।”
“আমি জানি, আপনারা অনুমান করার চেষ্টা করছেন যে, আমি কোথায় যাব, কিন্তু আমিই আমার সিদ্ধান্ত নেব এবং যখন আমি নিজে জানব, তখন আপনারা সবাই জানতে পারবেন। আমি জানি না (প্রিমিয়ার লিগে থাকতে চান কি না), এটা নির্ভর করছে, কারা প্রস্তাব দেয় তার ওপর।”
অন্য ক্লাবের সঙ্গে তার আলোচনা চলছে বলেও নিশ্চিত করেছেন ডে ব্রুইনে।
“হ্যাঁ, অবশ্যই (আলোচনা চলছে), যখনই আমি সিদ্ধান্ত নেব, (তখনই আমার সিদ্ধান্ত আপনাদের জানাব)।”
সিটির প্রিমিয়ার লিগ প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো ইংলিশ ক্লাব তার সম্ভাব্য গন্তব্য কি না, এমন প্রশ্নে ডে ব্রুইনের উত্তর, “হয়তো।”
এবারের প্রিমিয়ার লিগে সিটির ম্যাচ বাকি আছে আর দুটি। আগামী জুন-জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় নতুন আঙ্গিকের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে সিটির হয়ে ডে ব্রুইনে খেলবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আগামী মাসে শেষ হবে তার চুক্তির মেয়াদ।
ক্লাবগুলোকে অস্থায়ীভাবে খেলোয়াড়দের মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ দিতে ট্রান্সফার ও চুক্তির নিয়ম পরিবর্তন করেছে ফিফা। ডে ব্রুইনে বললেন, সিটির হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে নাও খেলতে পারেন তিনি।
“আমি মনে করি, আমাকে নিজের যত্ন নিতে হবে, কারণ যদি আমি ক্লাব বিশ্বকাপে চোট পাই, তাহলে তখন আমি কী করব? সেই সময় কেউ আমার যত্ন নেবে না। তাই হয়তো আমি এটায় (ক্লাব বিশ্বকাপ) খেলব না, এমন বড় সম্ভাবনা রয়েছে, তবে আমি জানি না, হয়তো হ্যাঁ।”
