দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মাছ ধরতে নেমেছেন জেলেরা। এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে নদীতে নামলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেন না তারা। এতে করে হতাশায় ভুগছেন জেলে ও আড়ৎদাররা। এ অবস্থা লক্ষ্মীপুরের চার উপজেলার জেলেদের।
লক্ষ্মীপুর ঘেঁষে বয়ে গেছে মেঘনা নদী। গত বুধবার রাত ১২টায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে নদীতে নামে চার উপজেলার ৫২ হাজার জেলে। সাত থেকে ৯ ঘণ্টা নদীতে বিচরণ করেও তারা কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা পাইনি। তবে জেলেদের হতাশা কেটেছে পোয়া, শিলন, ভেলে, চেওয়া, ছোট চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রায়পুরের উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের হাজিমারা বাজার এবং আলতাফ মাস্টার ইলিশ মাছ ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে জেলেদের কর্মচাঞ্চল্যতা। কেউ মাছ ধরার জন্য নদীতে যাচ্ছেন, কেউবা জাল ঠিকঠাক করছেন। কেউ কেউ ধরে আনা মাছ পাড়েই বিক্রি করছেন।
হাজিমারা বাজার এলাকার জেলে মাইনুদ্দিন মাঝি জানান, চারজন জেলেকে নিয়ে বুধবার রাত ১টায় নদীতে নামেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় মাছ ধরা শেষে পাড়ে এসেছেন। পেয়েছেন পোয়াসহ ছোট প্রজাতির মাছ। এসব মাছ বিক্রি করেছেন সাত হাজার ৯০০ টাকায়।
একই এলাকার জেলে আজুব মাঝি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে নেমেছিলেন নদীতে। উঠেছি দুপুর ২টার দিকে। ছোট আকারের কয়েকটি ইলিশ ও পোয়া মাছ পেয়েছি। এসব মাছ বিক্রি করে শুধু খরচই উঠবে, লাভ হবে না।’
ছোট মাছের সঙ্গে ৮ কেজি ওজনের একটি পাঙাশ মাছ পেয়েছেন জেলে আবদুল মাঝি। তিনি বলেন, ‘তিনজন মিলে নৌকা নিয়ে ভোরে নদীতে নেমেছিলাম। উঠেছি দুপুর ১২টার দিকে। পাঙাশসহ সব মাছ বিক্রি করেছি ১২ হাজার টাকায়। নিষেধাজ্ঞা শেষে যে পরিমাণ মাছ পাওয়ার কথা ছিল, সেই পরিমাণ মাছ জালে উঠেনি।’
আলতাফ মাস্টারঘাট এলাকার প্রবীণ জেলে মালেক মিয়া বলেন, ‘ভোরে নদীতে নেমে পাওয়া মাছ বিক্রি করেছি দুই হাজার টাকায়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নদীর জাটকাসহ ইলিশ সাগরের দিকে নেমে গেছে। তিনবার জাল ফেলে ছোট আকারের একটি ইলিশ পেয়েছি।’
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ‘মেঘনা ও পদ্মার ইলিশ পরিভ্রমণশীল মাছ। সাগর থেকে নদীতে আসে, আবার সাগরে চলে যায়। সহসায় জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবে। শুধু ইলিশ নয়, নদীর সব ধরণের মাছই মূল্যবান ও জেলেরাও তা পাচ্ছেন।’
