চট্টগ্রামে ‘জাল’ শিক্ষা সনদ দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেওয়া এক ব্যক্তির পদ বাতিল করেছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই মোহাম্মদ আলী আবার মাদক মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। তবে নিজের পরিচয় তিনি দেন সাংবাদিক হিসেবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের গঠিত কমিটি সনদ জালিয়াতির ‘প্রমাণ পাওয়ায়’ তার সভাপতি পদ বাতিল করা হয়েছে বলে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ জানান।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার উত্তর গোমদণ্ডী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে মোহাম্মদ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয় গত ২৪ মার্চ। সে সময় তিনি চট্টগ্রামের বেসরকারি সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার বিভাগ থেকে ২০০৩ সালে স্মাতক ডিগ্রি অর্জনের সনদ জমা দেন। মাদক মামলার বিষয়টিও তখন গোপন রাখেন।
অধ্যাপক ইলিয়াছ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাদক মামলার বিষয়টি আদালতের। যেহেতু জাল সনদ ব্যবহার করে সভাপতির হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হয়েছে, সেজন্য গত সোমবার শিক্ষা বোর্ড থেকে দ্রুত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সদস্যরা সশরীরে সেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সনদ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী) গিয়ে কথা বলেছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানানো হয়, সনদটি জাল। যে আইডি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি, সনদ এবং উল্লেখ করা বিভাগ সবকিছুই ভুয়া। ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার নামে কোনো বিভাগ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু হয়েছে ২০১০ সালে।
বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সনদ যেহেতু জাল বলে মতামত দিয়েছে, সেহেতু আর কারণ দর্শানোর প্রয়োজন পড়ে না। তাই সভাপতির পদ থেকে মোহাম্মদ আলীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।”
জাল সনদ দিয়ে মোহাম্মদ আলীর বিদ্যালয় সভাপতির পদ বাগিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি সম্প্রতি গণমাধ্যমে আসে। এ নিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে উপ সচিব মোরশেদ আলম ও বিদ্যালয় উপ পরিদর্শক শফিউল আজম শফিকে নিয়ে দুই সদসস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়।
মোহাম্মদ আলী যে মাদকদ্রব্য আইনের এক মামলার আসামি, সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। এক হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধারের ঘটনায় ২০২১ সালের অক্টোবরে বোয়ালখালী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। পরে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
সেই মামলায় কারাগারে যেতে হলেও পরে জামিনে ছাড়া পান মোহাম্মদ আলী।
এ বিষয়ে কথা বলতে মোহাম্মদ আলীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।