ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সন্তানহারা অভিভাবকদের চোখের জলে আল্লাহর আরশ কাঁপছে। আমরা চোখের জল ধরে রাখতে পারছি না।’ তিনি বলেন, ‘এমন দুর্ঘটনায় দায়-দায়িত্ব কার? জবাব দেবে কে?’
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীর বনানীতে মাইলস্টোন স্কুলের নিহত, আহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনা যেকোনও সময়, যেকোনও জায়গায় হতে পার। সড়ক ও নৌপথে দুর্ঘটনা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনা ও দুর্যোগে মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। দুর্ঘটনার সঙ্গে দুঃশাসনের সম্পর্ক আছে।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুঃশাসন থাকলে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। যখন কেউ নিয়ম কানুন মানে না, সঠিকভাবে শাসন চলে না। তখন দুর্ঘটনার সিরিয়াল হতে থাকে। এতে দুর্ভোগ ও দুর্নীতি বেড়ে যায়। বর্তমান সরকারের প্রাধান্য হলো কাউকে ফ্যাসিবাদ আর কাউকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তার পেছনে লেগে থাকা। লাখ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি চলছে। আবার বলছে...বিচার হবে, সংস্কার হবে; তারপর নির্বাচন হবে। আসলে, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই। কারণ, দেশে নির্বাচিত বা গ্রহণযোগ্য সরকার নেই। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে, এমন সরকার বর্তমানে নেই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে সামাজিক স্থিতিশীলতা আসে না।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘সামাজিক স্থিতিশীলতা না থাকলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হয় না। আবার, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আসে না। দেশের বেকার সমস্যা ভয়াবহ, জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী হয়ে আছে। মানুষের আয় কমে গেছে।’
জিএম কাদের বলেন, ‘এই সরকার জাতিকে বিভক্ত করেছে। প্রতিদিন দেশের অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই সরকার যতদিন থাকবে ততদিনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না।’
দেশের স্থিতিশীলতার জন্য সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে নির্বাচনে সরকারি দল বলে কোনও দল থাকবে না। বর্তমান সরকারের কোনও দল নির্বাচনে অংশ নিলে, সেই নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনও দল নির্বাচনে অংশ নিলে জনগণ তা প্রতিহত করবে। কারণ, দেশের মানুষ চায় নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের আন্ডারে নির্বাচন। এ দেশের মানুষ দীর্ঘদিন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেছে। এই সরকারের কোনও দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে, সরকারকে নির্দলীয় বা নিরপেক্ষ বলা যাবে না।’
‘দেশের মানুষ বিশ্বাস করে, একটি দল সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে, আসলে কে সরকার চালাচ্ছে তা জাতির কাছে পরিষ্কার নয়। দুর্নীতিতে দেশ সয়লাব হয়ে গেছে, পোস্টিং নিয়ে দুর্নীতি চলছে’, মন্তব্য করেন জাপা চেয়ারম্যান।