সংবিধান পুনর্লিখনের বা সংস্কারের উদ্যোগের মত একটি জটিল ও সংবেদনশীল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন গোষ্ঠী ও মতাদর্শের মানুষের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংবিধান সংস্কারের জন্য কমিশন গঠিত হওয়ার পর থেকে যথারীতি তার সূত্রপাতও হয়ে গেছে এবং চলছে। এত তর্ক-বিতর্কের মধ্যে যে বিষয়টি একেবারেই আলাপ-আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছে তা হলো, মারত্মক জলবায়ু বির্পযয়ের কবলে পড়া বাংলাদেশের টিকে থাকার জন্য সংবিধানে উপযুক্ত বিধান রাখা। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হলো বাংলাদেশ। ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, নদী ভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও খরা বাংলাদেশকে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি করেছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের ১৭% ভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে নিমজ্জিত হতে পারে, যার ফলে ২০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে খরা ও বন্যার মাত্রা বেড়ে যাবে, যা বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন, বিশেষত ধান ও মৎস্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অবকাঠামো ও অর্থনীতিতে বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে। এছাড়া, ২০৩০ সালের মধ্যেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়বেÑ বিশেষ করে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া সংক্রমণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানির সংকট, লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং সুন্দরবনের মতো জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ বনাঞ্চলের ক্ষতি আগামী কয়েক দশকের মধ্যে আরও তীব্র হবে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা। এসব গবেষণার ওপর ভিত্তি করে বলা যায়, বাংলাদেশকে অদূর ভবিষ্যতে ব্যাপকভাবে জলবায়ু বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে হবে। তাই আমাদের জাতীয় জীবনে যে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো, কিভাবে সংবিধানিক কাঠামোতে রাষ্ট্রের মূলনীতি ও অধিকারসমূহে পরিবেশের সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের সাথে পরিবেশগত চাহিদাগুলোর ভারসাম্য কিভাবে রক্ষা করা যাবে?
বিদ্যমান বাস্তবতায় উন্নত অবকাঠামো, পরিবেশ সংরক্ষণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনা, যা ভূমিধ্বস ও বন্যা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার হ্রাস করে মাটির উর্বরতা এবং জলাশয় রক্ষা করার নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এ ধরনের টেকসই কৃষিব্যবস্থা ভূমির ক্ষয়রোধ করে এবং মাটির পানি ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে বন্যা ও জলাবদ্ধতার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে। একইসঙ্গে, পরিবেশ-বান্ধব কৃষিপদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে, যা দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে। সংবিধানে টেকসই কৃষিনীতির অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব মোকাবিলায় একটি সমন্বিত ও সুষম পদ্ধতির পথে পরিচালিত করবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তীব্র বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে দ্বীপটি ধীরে ধীরে প্লাবিত হতে পারে এবং লবণাক্ততার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানে জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। প্রবাল প্রাচীরগুলো উষ্ণায়নের কারণে ধ্বংস হচ্ছে, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। প্রবালের প্রাচীর ক্ষয় থেকে সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান যেমন মাছ, শামুক, কাঁকড়া এবং অন্যান্য সামুদ্রিক জীবগুলো বিলুপ্তির পথে যেতে পারে। এছাড়া, পর্যটন চাপ এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে দ্বীপটির প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে সেন্ট মার্টিন আরো বিপর্যয়ের দিকে চলে যেতে পারে। বিভিন্ন গবেষণা উত্তরণের জন্য কিছু সুপারিশ করেছে, যেমন পর্যটন নিয়ন্ত্রণ, প্রবাল পুনরুদ্ধার কর্মসূচি এবং দ্বীপের প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থানের সুরক্ষার জন্য কঠোর নিয়মকানুন প্রণয়ন। এছাড়া, স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিয়েছেন, দ্বীপের সংবেদনশীল পরিবেশকে রক্ষা করতে এবং স্থায়িত্ব বজায় রাখতে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার এবং জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় পরিবেশগত সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত সংবিধানিক বাধ্যবাধকতার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু বর্তমান সংবিধানে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় পরিবেশগত সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত সংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিধান আছে কি? নেই।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(এ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ এই অনুচ্ছেদটি রাষ্ট্রকে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার দায়িত্ব প্রদান করলেও এর কার্যকরী বাস্তবায়নে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। যে কারণে পরিবেশ সুরক্ষায় এই বিধানের সম্ভাব্য ক্ষমতা পূর্ণভাবে কার্যকর হতে পারছে না। প্রথমত, এই অনুচ্ছেদটি আইনগতভাবে বাধ্যবাধকতা আরোপ না করে একটি আদর্শগত প্রতিশ্রুতি হিসেবে রয়ে গেছে। কিন্তু পরিবেশ সুরক্ষায় বাধ্যতামূলক আইন প্রণয়নের অভাবে এটি কার্যকরী ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, পরিবেশ রক্ষা এবং উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্থাগুলো (যেমন পরিবেশ অধিদপ্তর) পর্যাপ্ত দক্ষতা এবং সম্পদে সজ্জিত নয়। পর্যাপ্ত তহবিল, জনবল এবং আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে তারা তাদের দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করতে না পারায় পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তৃতীয়ত, পরিবেশ রক্ষার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবও একটি বড় বাধা, কারণ উন্নয়ন প্রকল্প বা বেসরকারি উদ্যোগে পরিবেশগত ক্ষতির বিষয়টি প্রায়ই উপেক্ষিত হয় এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপের কারণে পরিবেশ সুরক্ষার নীতিগুলো কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা কঠিন হয়ে পড়ে। চতুর্থত, জনসাধারণের মধ্যে পরিবেশ রক্ষা ও তার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ হলেও সচেতনতার অভাবে সাধারণ জনগণ যথাযথভাবে পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসছে না। পঞ্চমত, জলবায়ু পরিবর্তনের বহুমুখী প্রভাব যেমন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, খরা ও বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে এই অনুচ্ছেদে জলবায়ু পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বা কাঠামো না থাকায় তা কার্যকারিতা দেখাতে পারছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থাকলেও কাঠামোগত দুর্বলতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এই নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এছাড়া, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তি যেমন প্যারিস চুক্তি ও কিয়োটো প্রোটোকলের সাথে যুক্ত থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরীণ আইন ও সংবিধান এই চুক্তিগুলোর বাস্তবায়নে এখনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। আন্তর্জাতিক চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশের সংবিধান ও আইনগুলোকে কার্যকর করা জরুরি। তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনপ্রসূত বিপর্যয়ের মোকাবিলা বাংলাদেশের জন্য সহজ হতে পারে। কিন্তু এই সীমাবদ্ধতাগুলো কিভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতে পারে?
উদাহরণস্বরূপ, ইকুয়েডর ও বলিভিয়া ইকো-কনস্টিটিউশনালিজম তত্ত্বের প্রয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি উন্নত ও উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশও এ ধারণাটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছে। ২০০৮ সালে ইকুয়েডর প্রথম দেশ হিসেবে তাদের সংবিধানে প্রকৃতির অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়, যেখানে রাষ্ট্রকে প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান রক্ষা ও সংরক্ষণের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে এবং পরিবেশগত সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ২০০৯ সালে বলিভিয়া তাদের সংবিধানে প্রকৃতির অধিকার এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি যুক্ত করে এ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে, ২০০৫ সালে ফ্রান্স তাদের সংবিধানে পরিবেশ সনদ অন্তর্ভুক্ত করে, যা পরিবেশের অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং রাষ্ট্রকে পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বে সাধারণ জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করতে উৎসাহিত করে। এছাড়া, ২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ডে টুয়াই নদীকে একটি আইনি সত্ত্বা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, যা ইকো-কনস্টিটিউশনালিজমের ধারায় প্রকৃতির একটি উপাদানকে সুরক্ষার জন্য আইনি অধিকার প্রদান করে। ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের ওয়াংগানুই নদীকে নিউজিল্যান্ড সরকার ‘জীবন্ত সত্ত্বা’ হিসেবে আইনগত স্বীকৃতি দেয় এবং এটি রক্ষার জন্য অভিভাবক নিযুক্ত করা হয়। কলম্বিয়ার সংবিধানিক আদালত ২০১৬ সালে রিয়ো এট্রোটো নদীকে ‘নিজস্ব অধিকারসম্পন্ন সত্ত্বা’ হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবে ইকুয়েডর, বলিভিয়া, ফ্রান্স ও নিউজিল্যান্ড পরিবেশ সংরক্ষণে সংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ইকো-কনস্টিটিউশনালিজমের পথ দেখায়। বাংলাদেশে ২০১৬ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামক মানবাধিকার সংগঠন তুরাগ নদী দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে একটি রিট আবেদন দায়ের করে। পরে আদালত শুধু তুরাগ নদী নয়, বাংলাদেশের সব নদীকেই ‘জীবন্ত সত্ত্বা’ এবং ‘আইনি ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। এই মামলায় আদালত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে নদীগুলোর ‘আইনি অভিভাবক’ হিসেবে নিযুক্ত করে এবং দখলদারদের ‘রাষ্ট্রের শত্রু’ ঘোষণা করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কার্যকর আইন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও জনসচেতনতার অভাবে এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা না থাকায় এই রায়ের সুফল দেশেবাসী পায়নি।
বাংলাদেশের সংবিধান পুনর্লিখন বা সংস্কার সাধন একটি জরুরি প্রক্রিয়া। এটি শুধুমাত্র আইনগত পরিবর্তনের জন্যই নয়, বরং দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত দিক থেকেও গুরুত্বর্প্ণূ। বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত সঙ্কট বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে ইকো-কনস্টিটিউশনালিজমের ধারণা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ এটি পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়নকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ প্রদান করে। বাংলাদেশের সংবিধান পুনর্লিখনের বা সংস্কারের প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো সংযুক্ত করার এক ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।