দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে উদ্বেগ প্রকাশ করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, সরকার যেভাবে চলছে, এভাবে একটা সরকার চলে না। এমনকি একটা দোকানও চলে না।

রোববার (১৮ মে) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় দেশের চলমান অবস্থা, সড়ক অবরোধ, মামলার জট, প্রশাসনিক অস্থিরতা এবং জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংকীর্ণতার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

অলি আহমদ বলেন, দেশের প্রেক্ষাপট নিয়ে সবাই চিন্তিত, সবাই মঙ্গল চায়। চিকিৎসা করে আসার পরে বেগম জিয়ার সাথে আমার প্রথম দেখা।

তিনি বলেন, ঢাকা অচল প্রায়। তার পক্ষ থেকে তিনি কিছুই বলেননি। যার দাবি যেটা আছে সেটা নিয়ে রাস্তায় নেমে গেছে। কেউ মেয়র হতে চায়, চাকরি হতে বরখাস্ত হয়েছে চাকরি নিতে চায়, রাস্তা বন্ধ। দাবি-দাওয়া সংগত কিনা তার ধারে কাছেও নেই। নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য ১৮ কোটি মানুষকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।

কর্নেল অলি বলেন, সরকার যেভাবে চলছে এভাবে একটা সরকার চলে না। এভাবে একটা দোকানও চলে না। আমার ইচ্ছে হলো আমি রাস্তায় বসে গেলাম। বাকি লোকেদের অধিকার আছে। সরকার একটা নমনীয় ভাব নিয়ে চলছে। বিএনপির বিরুদ্ধে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মামলা— আজকে ৯ মাস পর্যন্ত সেই মামলার সমাধান হয়নি।

বিএনপির সাবেক এ নেতা বলেন, বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি চলছে। হয়তো আমার নাম ব্যবহার করছি, হয়তো আমার দলের নাম ব্যবহার করছি— সরকারের কাজ হলো তাদেরকে ধরা। এখানে কারো প্রতি দয়া দেখিয়ে দেশ চালানো চলবে না।

তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার তাদের (সরকারের) কোনো অধিকার নাই। দেশের বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে ডেকে দেশের বড় বড় সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।

অলি আহমদ বলেন, সশস্ত্র বাহিনী একটা বড় হোল্ডার। তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। আমি দল বলবো না— গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আলোচনা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমি একটা প্রেস কনফারেন্স করছি আগামী বুধবারে। ওখানে অনেক কথা বলবো। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। এখন আমরা বেঁচে আছি— অবশ্যই আমাদের নিয়ে কাজ করতে হবে।

অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেন, দেশের অবস্থা ভালো নেই। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করছেন সকলে। আমি বেগম খালেদা জিয়াকে বলেছি, ঢাকা অচল। কেউ ভিসি হতে চায়? ঢাকা অচল। কেউ ভিসিকে সরাতে চায়? ঢাকার রাস্তা বন্ধ। চাকরি চলে গেছে। সেই চাকরি ফেরত পেতে চায় ঢাকার রাস্তা বন্ধ। এ ধরনের কিছু দাবি-দফার কারণে দেশের ১৮ কোটি মানুষকে জিম্মি করছে প্রতিদিন।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সরকার যেভাবে চলছে, এভাবে চলতে পারে না। একটা দোকানও এভাবে চরতে পারে না। প্রত্যেকের জায়গায় একটা নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে। কেউ ফ্রি স্টাইলে চলতে পারে না। মন চাইলেই রাস্তায় বসতে পারি না। এক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব আরো কঠোর হওয়া উচিত। অথচ, সরকার এখানে নরম হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো একজন উপদেষ্টাও সঠিকভাবে কাজ করছে না। বিএনপি ও আমার দলের নেতাদের নামে এখনো অনেক মামলা আছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু সমসমায়িক অনেক ঘটনার মামলা হচ্ছে, কিন্তু সরকার দোষীদের গ্রেফতার করছে না।

তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তীলীন সরকার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাদের সেই অধিকার নেই। যৌক্তিকতাও নেই। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে করিডোর দেব খাদ্য নেয়ার জন্য। কিন্তু অন্যকিছুর জন্য দিতে পারি না। আমাদের দেশটাকে অন্য কারো কাছে বিক্রি করিনি। আর সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সাথে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশকে আমরা কারো কাছে লিজ দেইনি। আমরা রক্ত দিয়ে এই দেশটাকে স্বাধীন করেছি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews