মাগুরায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে সাংসদের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা ও পুলিশ প্রশাসন বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আইনুল হক ওরফে কুটি। তিনি মাগুরা-১ আসনের সাংসদ মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আবদুল ওয়াহ্হাবের এপিএস।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আইনুল হকের মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি। তবে সাংসদ আবদুল ওয়াহ্হাব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনুল হক আমার এপিএস ঠিকই। কিন্তু আমি তাকে কখনোই কোনো নিয়োগসংক্রান্ত দায়িত্ব দিইনি। সে কোনো অনৈতিক কাজ করলে সেটি তার ব্যক্তিগত দায়। আমি নিজে জেলা প্রশাসকের কাছে দুই বেকার যুবকের চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু তাদের চাকরি হয়নি। ওই ঘটনার পর থেকে আইনুল আমার কাছে আসেনি। ফোনও বন্ধ করে রেখেছে।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অফিস সহায়ক, নৈশপ্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে মোট ১৪ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। নিয়োগ-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছিল জেলা প্রশাসন। এত কিছুর মধ্যেও দুর্নীতিবাজেরা থেমে থাকেনি। নৈশপ্রহরীর চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মামুনুর রহমান নামের এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেন এপিএস আইনুল হক।
নিয়োগ কমিটির সদস্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ওই ১৪টি পদের বিপরীতে মোট ১ হাজার ২৪টি আবেদনপত্র জমা হয়। গত শুক্র ও শনিবার প্রার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে মৌখিক পরীক্ষার সময় প্রার্থীদের নানাভাবে প্রশ্ন করা হয়। মাগুরা সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা মামুনুর নৈশপ্রহরী পদে মনোনীত হন। মৌখিক পরীক্ষার সময় তিনি এপিএস আইনুলকে পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক দেওয়ার তথ্য নিয়োগ কমিটির সামনে উপস্থাপন করেন।
মামুনুর রহমানের দাবি, সাংসদের এপিএস তাঁর কাছে আট লাখ টাকা চেয়েছিলেন। অনেক দেনদরবার করে পাঁচ লাখ টাকায় রফা হয়। মামুনুর ওই পরিমাণ টাকার একটি তারিখবিহীন চেক আইনুলকে দেন। আইনুল তাঁকে (মামুনুর) বলেন, ‘তোমার চাকরি কনফার্ম হবে রাত ১২টার পর। নেটে রেজাল্ট দেখে তুমি সকাল ১০টায় টাকা দিবা।’
জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান বলেন, ‘মামুনুর রহমান নিজের যোগ্যতাতেই চাকরি পেয়েছেন। তবে তিনি কাউকে কোনো আর্থিক সুবিধা দিয়েছেন কি না, এটা যাচাই করতে গিয়েই বিষয়টি ধরা পড়ে। আমরা ওই চেকের ফটোকপি ও মামুনুরের সঙ্গে আইনুলের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডটি হাতে পেয়েছি।’